এমন উইকেটে খেললে ক্যারিয়ারই শেষ হয়ে যাবে: সাকিব

Shakib Al Hasan
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জিতলেও উইকেট নিয়ে চলছিল সমালোচনা। ব্যাটসম্যানদের জন্য অতি দুরূহ উইকেটের জন্য সিরিজের সময়েও হতাশা জানিয়ে আসছিলেন সাকিব আল হাসান। সিরিজ শেষে এই ক্রিকেটার বললেন, এমন উইকেটে কয়েকটা ম্যাচ খেললে ব্যাটসম্যানদের ক্যারিয়ারই শেষ হয়ে যেতে পারে।

সেরা কয়েকজন তারকাকে ছাড়া আসা অস্ট্রেলিয়াকে ৪-১ ব্যবধানে হারানোর পর অনভিজ্ঞতায় ভরা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩-২ ব্যবধানে হারায় বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে স্পিন সহায়ক অতি মন্থর ও টার্নিং উইকেট বানিয়ে ক্রিকেটের বড় এই দুই শক্তিকে প্রথমবার টি-টোয়েন্টিতে হারানোর পথ বেছে নেয় বাংলাদেশ।

তাতে সফল হলেও থেকে গেছে অস্বস্তি। শনিবার রাতে রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে  এলআরজি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট এক প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সেই অস্বস্তির কথায় বেরিয়ে আসে সাকিবের মুখে,  'দেখুন এই ৯-১০টা ম্যাচ যারা খেলেছে, সবাই অফ ফর্মে আছে। উইকেটটাই এমন। এখানে কেউ খুব একটা ভালো করেনি। ব্যাটসম্যানদের এই পারফরম্যান্স গণ্য না করাই ভালো। এ রকম উইকেটে কোনো ব্যাটসম্যান ১০-১৫টা ম্যাচ খেললে তার ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাবে, এটা খুবই স্বাভাবিক। কাজেই এই হিসাব না (কে রান করল না) করি আমরা। যারা দলে আছে, সবাই দেশকে জেতানোর সামর্থ্য রাখে। যার যার জায়গা থেকে সবাই শতভাগ চেষ্টা করছে।'

দুই সিরিজে ১০ ম্যাচ মিলিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ফিফটি এসেছে কেবল একটি। প্রায় সব ব্যাটসম্যানই রান পেতে ভুগেছেন। রান পাননি সাকিব নিজেও। ওপেনারদের রান খরা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে সেটা থামিয়ে সাকিব জানান, এমন উইকেটে দুনিয়ার কোন ব্যাটসম্যানকেই বিচার করা উচিত নয়।

তবে উইকেট নিয়ে বিস্তর সমালোচনার পরও প্রস্তুতি নিয়ে কোন ঘাটতি দেখছেন না টি-টোয়েন্টির শীর্ষ অলরাউন্ডার,  'আমাদের প্রস্তুতি খুবই ভালো হয়েছে। এর বড় কারণ হচ্ছে গত তিনটা সিরিজ আমরা জিততে পেরেছি। হয়তো পিচ, উইকেট, লো স্কোর নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে। কিন্তু জয়ের কোনো বিকল্প নেই। একটা দল যখন জিততে থাকে, জয়ের মানসিকতা থাকে, তা অন্য পর্যায়ের আত্মবিশ্বাস দেয়। আপনি অনেক ভালো খেলে ম্যাচ হারলে এই আত্মবিশ্বাস থাকবে না। এই আত্মবিশ্বাস নিয়ে আমরা বিশ্বকাপে যেতে চাই।'

বিশ্বকাপের আগে ৩ অক্টোবর ওমানে যাবে বাংলাদেশ দল। সেখানেই হবে অনুশীলন ক্যাম্প। সেখানকার কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে ওই সময়টাই আদর্শ মনে করেন সাকিব, 'আমরা বিশ্বকাপ শুরুর ১৫-১৬ দিন আগে যাব, প্রস্তুতির যথেষ্ট সময় থাকবে। ওই কন্ডিশন ও উইকেটের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার যথেষ্ট সময় পাব। আমার মনে হয় না এখানকার পিচ-কন্ডিশন ওখানে খুব বেশি প্রভাব ফেলবে। আমাদের জয়ের মানসিকতা তৈরি হয়েছে। যে আত্মবিশ্বাস আছে, সেটা নিয়ে বিশ্বকাপে যেতে পারব।'

সাকিবের অবশ্য বিশ্বকাপ প্রস্তুতি হয়ে যাবে আগেই। কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে আইপিএলের বাকি অংশ খেলতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাচ্ছেন তিনি। খেলবেন বিশ্বকাপের তিন ভেন্যু দুবাই, আবুধাবি আর শারজাহতে।

সাকিবের মতো রাজস্তান রয়্যালসের হয়ে আইপিএল খেলতে যাচ্ছেন মোস্তাফিজুর রহমানও। তাদের অভিজ্ঞতা দলের বাকিদের জন্য সহায়ক হবে বলেও মনে করেন এই তারকা,  'আশা করি, আইপিএল সহায়তা করবে। আমরা যেহেতু ওখানে থাকব, ওই কন্ডিশনের সঙ্গে প্রতিদিন আমাদের দেখা হবে, আমরা ম্যাচও খেলব। এই অভিজ্ঞতা আমরা দলের সাথে ভাগাভাগি করতে পারব, আমি পারব, মোস্তাফিজ পারবে। আইপিএল দলে দুজন প্রতিনিধিত্ব করছি, খেলোয়াড়দের ভাবনা কেমন, বিশ্বকাপ নিয়ে কীভাবে ভাবছে অন্যান্য দেশের খেলোয়াড়েরা—এগুলো সম্পর্কে ধারণা হবে, যা সতীর্থদের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে পারব।'

Comments