কোহলির স্মরণীয় দিনে সেঞ্চুরিবঞ্চিত পান্ত

শততম টেস্টে দর্শকদের তুমুল করতালির মাঝে মাঠে নামা বিরাট কোহলি ব্যাটিং করছিলেন আস্থার সঙ্গে। ভক্ত-সমর্থকরা হয়তো নড়েচড়ে বসেছিলেন। হয়তো ভাবছিলেন, সেঞ্চুরির অপেক্ষা এই বুঝি ফুরোল কোহলির। ২০১৯ সালের নভেম্বরে কলকাতায় বাংলাদেশের বিপক্ষে সেঞ্চুরির পর তো আর তিন অঙ্কে পৌঁছাতে পারেননি তিনি। তবে শ্রীলঙ্কার বাঁহাতি স্পিনার লাসিথ এম্বুলদেনিয়ার দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে থামতে হয় তাকে। ফলে স্মরণীয় দিনটিকে কাঙ্ক্ষিতভাবে উদযাপন করা হয়নি তার।
কোহলি না পারলেও ফিফটি তুলে নেন হনুমা বিহারি। আর আগ্রাসী ব্যাটিং করা রিশভ পান্ত অল্পের জন্য হন সেঞ্চুরিবঞ্চিত। কম-বেশি রান পেলেন বাকিরাও। ফলে মোহালি টেস্টের প্রথম দিনটি নিজেদের করে নিল ভারত।
শুক্রবার সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম দিন শেষে ৬ উইকেটে ৩৫৭ রান করেছে স্বাগতিকরা। টস জিতে ব্যাটিং বেছে নিয়ে দ্রুতগতিতে রান তুলে বড় সংগ্রহের পথে আছে তারা। রবীন্দ্র জাদেজা ৮২ বলে ৪৫ ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন ১১ বলে ১০ রানে অপরাজিত আছেন।
ওভারপ্রতি ৪.২০ গড়ে রান আনায় মূল ভূমিকা রাখেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটার পান্ত। ৯৭ বলে ৯৬ রান আসে তার ব্যাট থেকে। তিনি মারেন ৯ চার ও ৪ ছক্কা। ৭৩ বলে ফিফটি পূরণ করার পর বিস্ফোরক হয়ে ওঠেন পান্ত। পরের ৪৬ রান তিনি করেন মাত্র ২৪ বলে। বিহারি ৫ চারে ৫৮ রান করতে খেলেন ১২৮ বল। কোহলি ৪৫ রান করেন ৭৬ বলে।
সফরকারীদের পক্ষে এম্বুলদেনিয়া ২ উইকেট নিতে খরচ করেন ১০৭ রান। এছাড়া, উইকেটের দেখা পান সুরঙ্গা লাকমল, বিশ্ব ফার্নান্দো, লাহিরু কুমারা ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভা।
ভারতের ইতিহাসের ১২তম ক্রিকেটার হিসেবে শততম টেস্ট খেলতে নামা কোহলিকে বিশেষ ক্যাপ উপহার দেওয়া হয়। টসের আগে এই স্মারক তার হাতে তুলে দেন দলটির প্রধান কোচ রাহুল দ্রাবিড়। ভারতের টেস্ট দলের অধিনায়কের দায়িত্ব ছাড়ার পর এটাই কোহলির প্রথম টেস্ট। তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন রোহিত শর্মা। পূর্ণকালীন নেতৃত্ব পাওয়ার পর প্রথমবার ব্যাট হাতে নেমে আক্রমণাত্মক ঢঙে শুরু করেছিলেন তিনি। সেটাই হয়ে দাঁড়ায় রোহিতের সাজঘরে ফেরার কারণ। কুমারার শর্ট বলে লং লেগে লাকমলের তালুবন্দি হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ২৮ বলে তার সংগ্রহ ২৯ রান।
প্রথম থেকেই জুটি গড়ে খেলতে থাকে ভারত। উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৫২ রান। রোহিতের পর থিতু হয়ে ফেরেন আরেক ওপেনার মায়াঙ্ক আগারওয়াল। তৃতীয় উইকেটে বিহারি ও কোহলি গড়েন ৯০ রানের জুটি। তারা বিদায় নেন অল্প সময়ের ব্যবধানে। তাতে কিছুটা চাপে পড়ে যায় ভারত। তবে শ্রীলঙ্কা পারেনি সুযোগ কাজে লাগাতে। দলের হাল ধরে দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন পান্ত। পঞ্চম উইকেটে শ্রেয়াস আইয়ারের সঙ্গে ৫৩ ও ষষ্ঠ উইকেটে জাদেজার সঙ্গে ১০৪ রান যোগ করেন তিনি।
খুব কাছে গিয়ে সেঞ্চুরি না পাওয়ার হতাশায় পুড়তে হয় পান্তকে। আগ্রাসী শটে আউট না হয়ে তিনি ফেরেন রক্ষণাত্মক কায়দায় খেলতে গিয়ে। লাকমলের অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি তার ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে ভেঙে দেয় স্টাম্প। দিনের বাকিটা সময় অশ্বিনকে নিয়ে পার করে দেন জাদেজা।
Comments