ক্রিকেটটাই উপভোগ করছেন না সাকিব

আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে ব্যাট হাতে একদম ব্যর্থ ছিলেন সাকিব আল হাসান। বোলিংয়েও করতে পারেননি আহামরি কিছু। তিনি জানান, এই সময়ে তিনি ক্রিকেট খেলার পরিস্থিতিতেই নেই, খেলাটা উপভোগ করছেন না। তার মতে এই অবস্থায় জোর করে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে খেলতে গেলে সেটা হবে দেশের সঙ্গে প্রতারণা।
রোববার মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের জার্সি উন্মোচন শেষ করেই বিমানবন্দরে ছুটেন সাকিব। তার গন্তব্য দুবাই। বিমানবন্দরেই গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপে বিস্ফোরক কথা বলেন দেশের সফলতম এই ক্রিকেটার।
আফগানদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে তিন ম্যাচে সাকিব করেন কোটে ৬০ রান। উইকেত নেন ৫টি। টি-টোয়েন্টি সিরিজে দুই ম্যাচে তার ব্যাট থেকে আসে কেবল ১৪ রান। প্রথম ম্যাচে ১৮ রানে ২ উইকেট নিলেও পরেরটিতে ৩ ওভারে ৩২ রান দিয়ে থাকেন উইকেট শূন্য।
সাকিব জানান, পুরো সিরিজে খেলাটা একদম উপভোগ করতে পারেননি তিনি, 'আমি খেলাটা একদমই উপভোগ করতে পারিনি। টি-টোয়েন্টি এবং ওয়ানডে। আমি চেষ্টা করেছি কিন্তু হয়নি। আমার কাছে মনে হয় না এরকম মন মানসিকতা নিয়ে সাউথ আফ্রিকায় খেলাটা ঠিক হবে।'
দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে টেস্ট না খেলার সিদ্ধান্ত সাকিব নিয়েছিলেন বেশ আগে। আইপিএলের নিলামের আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় টেস্ট সিরিজের সময়টা নিজেকে ফাঁকা রেখেছিলেন তিনি। তবে আইপিএলে নিলাম থেকে তাকে কেউ দলে নেয়নি। এরপরই সাকিব প্রোটিয়াদের বিপক্ষে টেস্ট খেলছেন বলে সম্ভাবনা তৈরি হয়। নানান নাটকীয়তার পর বোর্ড প্রধান জানান, সাকিব থাকছেন পুরো সফরেই।
কিন্তু দুদিনের ব্যবধানে বদলে গেল ছবি। সাকিব নিজে জানাচ্ছেন তিনি এখন ক্রিকেট খেলার কোন অবস্থাতেই নেই, 'আমি যেটা বললাম আমি পরিস্থিতিতে নাই ক্রিকেট খেলার। এটা হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ। ওই পরিস্থিতি এলে আমি অবশ্যই চাইব ক্রিকেটটা খেলতে। সব কিছু নির্ভর করছে বিসিবি ও আমাদের দুই জায়গা থেকে আলোচনার মাধ্যমে একটা সুন্দর পরিস্থিতি তৈরি করা।'
'যেতে হলে যেতে হবে। আমি যেটা বললাম। আমি ওপেন টু এভ্রিথিং। কিন্তু আমার মানসিক ও শারীরিক অবস্থান আমার বেস্ট পারফর্ম করার অবস্থানে আমি নাই।'
ঘরের মাঠে মে মাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও দুই টেস্টের সিরিজ আছে বাংলাদেশের। সেই সিরিজে খেলার ব্যাপারেও এখনো কোন নিশ্চয়তা নেই তার কাছে, 'শ্রীলঙ্কা সিরিজের কথা বলাটা কঠিন। এখন পর্যন্ত যা আছে। দুই মাস পরে কি চিন্তা হবে জানি না। এমনও হতে পারে ওয়ানডে সিরিজ বিরতি দিয়ে টেস্ট সিরিজও খেলতে পারি। ১৫-২০ দিনের বিরতি হয়ত আমার অনেক বড় বদল আসতে পারে। দুই মাস পরেরটা আমার জন্য বলা কঠিন কি মানসিক অবস্থায় থাকব বা কি ফিটনেস থাকব।'
চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত টেস্ট থেকে দূরে থাকতে চেয়েছিলেন সাকিব। তিনি জানান পর পর দুটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থাকায় সাদা বলে মন দিতে চেয়েছিলেন তিনি।
তবে এসব ছাপিয়েও সবচেয়ে বড় ব্যাপার, ক্রিকেটই উপভোগ করছেন না সাকিব। কোন একজন ক্রিকেটার ক্রিকেট উপভোগ না করলে তার পক্ষে পারফর্ম করা আসলেই কঠিন। এই পরিস্থিতিতে বিসিবি কি সিদ্ধান্ত নেয় তা দেখার বিষয়।
Comments