ক্লাসেনের ঝড়ে ম্লান ভুবনেশ্বর, আবার হারল ভারত

বোলারদের সম্মিলিত অবদানে ভারতকে সাদামাটা সংগ্রহে বেঁধে ফেললেও শুরুতে লাগল জোর ধাক্কা। ভুবনেশ্বর কুমারের তোপে মাত্র ২৯ রানে ৩ উইকেট খুইয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ল দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই চাপ সামলে পাল্টা আক্রমণে ক্যারিয়ারসেরা বিস্ফোরক ইনিংস খেললেন হেইনরিখ ক্লাসেন। তার নৈপুণ্যে জয় ছিনিয়ে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল প্রোটিয়ারা।
রোববার কটকে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৪ উইকেটে হেরেছে স্বাগতিক ভারত। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৪৮ রান স্কোরবোর্ডে জমা করে তারা। জবাবে ১০ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটে ১৪৯ রান তুলে জয় নিশ্চিত করে সফরকারীরা।
প্রথম টি-টোয়েন্টিতে দক্ষিণ আফ্রিকার একাদশে না থাকা ক্লাসেন খেলেন ৮১ রানের আগ্রাসী ইনিংস। পাঁচ নম্বরে নেমে মাত্র ৪৬ বল মোকাবিলায় তিনি মারেন ৭ চার ও ৫ ছক্কা। চতুর্থ উইকেটে অধিনায়ক টেম্বা বাভুমার সঙ্গে ৪১ বলে ৬৪ ও পঞ্চম উইকেটে ডেভিড মিলারের সঙ্গে ২৮ বলে ৫১ রান যোগ করেন তিনি। তাতে শক্ত অবস্থান হাতছাড়া করে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় ভারত। ক্লাসেনের ঝড়ে ম্লান পেসার ভুবনেশ্বর ৪ ওভারে মাত্র ১৩ রান খরচায় নেন ৪ উইকেট।

ম্যাচের প্রথম ওভারেই রুতুরাজ গায়কোয়াড়কে ফিরিয়ে দেন কাগিসো রাবাদা। চাপ সামলে ভারতকে এগিয়ে নিতে থাকেন আরেক ওপেনার ইশান কিশান ও শ্রেয়াস আইয়ার। তাদের ৩৫ বলে ৪৫ রানের জুটি ভাঙার পর নিয়মিত বিরতিতে পড়তে থাকে উইকেট। উড়তে থাকা কিশান আইনরিখ নরকিয়ার বল হুক করতে গিয়ে ধরা পড়েন রাসি ভ্যান ডার ডাসেনের হাতে। ২১ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় তার সংগ্রহ ৩৪ রান। অধিনায়ক রিশব পান্ট ও হার্দিক পান্ডিয়া টিকতে পারেননি। ৩৫ বলে ৪০ করে শ্রেয়াস বিদায় নেওয়ার পর সাজঘরে হাঁটা দেন অক্ষর প্যাটেলও।
১১২ রানে ৬ উইকেট হারানো ভারত এরপর দেড়শ ছোঁয়া পুঁজি পায় দিনেশ কার্তিকের কল্যাণে। ২১ বলে সমান ২টি করে চার ও ছক্কায় ৩০ রান করেন তিনি। হার্শাল প্যাটেলকে নিয়ে ১৮ বলে অবিচ্ছিন্ন ৩৬ রানের জুটি গড়েন তিনি। প্রোটিয়াদের পক্ষে পেসার নরকিয়া ৩৬ রানে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন। এছাড়া, উইকেটের দেখা পান রাবাদা, ওয়েইন পারনেল, ডোয়াইন প্রিটোয়ারিয়াস ও কেশব মহারাজ।
প্রতিপক্ষের মতো প্রথম ওভারে উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকাও। ভুবনেশ্বরের বলে স্টাম্প হারান কুইন্টন ডি ককের চোটে খেলার সুযোগ পাওয়া রিজা হেন্ড্রিকস। নিজের পরের ওভারে প্রিটোরিয়াসকে বিদায় করেন তিনি। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে তার শিকার হন আগের ম্যাচের হাফসেঞ্চুরিয়ান ভ্যান ডার ডাসেন। তবে ভুবনেশ্বর ভারতকে জয়ের যে স্বপ্ন দেখান, তা মিলিয়ে যায় ধীরে ধীরে।
মুখোমুখি হওয়া প্রথম ১২ বলে ক্লাসেনের রান ছিল কেবল ৪। ধুঁকতে থাকা দলকে উজ্জীবিত করার মঞ্চ তিনি প্রস্তুত করতে শুরু করেন ইনিংসের নবম ওভারে। যুজবেন্দ্র চাহালকে এক্সট্রা কাভার দিয়ে চার মারার পর মিডউইকেট দিয়ে করেন সীমানাছাড়া। দ্বাদশ ওভারে স্পিনার অক্ষরকে পিটিয়ে ক্লাসেন আনেন ১৯ রান। এরপর ৩২ বলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফিফটি পূরণ করেন তিনি। তার তাণ্ডবের বিপরীতে সবচেয়ে বেশি অসহায় ছিলেন চাহাল। ১৬তম ওভারে তিন ছক্কা হজম করে তিনি দেন মোট ২৩ রান।
হার্শালের বলে ক্লাসেন যখন আউট হন, তখন জয় দক্ষিণ আফ্রিকার হাতের নাগালে। পারনেল ভুবনেশ্বরের চতুর্থ শিকার হওয়ার পর বাকিটা সারেন মিলার। তিনি অপরাজিত থাকেন ১৫ বলে ২০ রানে। বাভুমা করেন ৩০ বলে ৩৫ রান। তাকে ফেরানো চাহাল ৪ ওভারে খরচ করেন ৪৯ রান।
Comments