জোড়া সেঞ্চুরিতে খাওয়াজার ইতিহাস, ইংল্যান্ডের সামনে রেকর্ড লক্ষ্য

প্রায় আড়াই বছর পর টেস্টে ফেরা এর চেয়ে দারুণভাবে হয়তো রাঙানো যেত না! প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও সেঞ্চুরি তুলে নিলেন বাঁহাতি ব্যাটার উসমান খাওয়াজা। তার চোখ ধাঁধানো নৈপুণ্যে ইংল্যান্ডকে জয়ের জন্য রেকর্ড লক্ষ্য ছুঁড়ে দিল অস্ট্রেলিয়া।
শনিবার সিডনিতে অ্যাশেজের চতুর্থ টেস্টের চতুর্থ দিনের খেলা শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে সফরকারীরা তুলেছে বিনা উইকেটে ৩০ রান। ক্রিজে আছেন দুই ওপেনার জ্যাক ক্রলি ২২ ও হাসিব হামিদ ৮ রানে। হাতে ১০ উইকেট নিয়ে আগামীকাল টেস্টের শেষ দিনে ইংলিশদের প্রয়োজন আরও ৩৫৮ রান।
৩৮৮ রানের এত বড় লক্ষ্য পেরিয়ে টেস্টে আগে কখনও জেতেনি ইংল্যান্ড। এই সংস্করণে তাদের সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জেতার কীর্তি অবশ্য অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেই। ২০১৯ সালে ঘরের মাঠ লিডসে বেন স্টোকসের বীরত্বে ৩৫৯ রানের লক্ষ্য পেরিয়ে ১ উইকেটের নাটকীয় জয় পেয়েছিল দলটি।
আগের দিনের ৭ উইকেটে ২৫৮ রান নিয়ে খেলতে নেমে ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে অলআউট হয় ২৯৪ রানে। এরপর অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করা ৬ উইকেটে ২৬৫ রান তুলে। নান্দনিক ব্যাটিংয়ে ১০ চার ও ২ ছক্কায় খাওয়াজা অপরাজিত থাকেন ১৩৮ বলে ১০১ রানে।
খাওয়াজা যখন ক্রিজে যান, তখন অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৬৮ রান। পেসার মার্ক উডের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরেছেন ডেভিড ওয়ার্নার ও মারনাস লাবুশেন, স্পিনার জ্যাক লিচের ফাঁদে পড়েছেন মার্কাস হ্যারিস। কিছুক্ষণ পর স্টিভেন স্মিথকেও লিচ ফেরালে বিপাকে পড়ে স্বাগতিকরা।
এরপর ক্যামেরন গ্রিনকে নিয়ে বড় জুটি গড়েন খাওয়াজা। প্রতিরোধ লড়াইয়ে বিপর্যয় সামলে এগিয়ে নিয়ে চলেন দলকে। ৮৬ রানে ৪ উইকেট খোয়ানোর ধাক্কা সামলে অজিরা পায় ১৭৯ রানের জুটি।
৮৪ রানে ৪ উইকেট নেওয়া বাঁহাতি স্পিনার লিচ পরপর দুই বলে গ্রিন ও অ্যালেক্স ক্যারিকে ফেরালে ইনিংস ঘোষণা করে অস্ট্রেলিয়া। গ্রিন ১২২ বলে ৭৪ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন। ক্যারি প্রথম বলেই আউট হয়ে খুলতে পারেননি রানের খাতা।
ইনিংস ঘোষণার আগে সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই নেন খাওয়াজা। ডগ ওয়াল্টারস ও রিকি পন্টিংয়ের পর সিডনিতে দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করা মাত্র তৃতীয় অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটার তিনি। দুই দল মিলিয়ে অ্যাশেজে কোনো টেস্টে জোড়া সেঞ্চুরি করা নবম ক্রিকেটার খাওয়াজা।
এর আগে ইংল্যান্ড শেষ ৩ উইকেট হারিয়ে এদিন সকালে যোগ করে ৩৬ রান। চতুর্থ দিনে সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া জনি বেয়ারস্টো ফেরেন ১৫৮ বলে ১১৩ রান করে। তিনি চোট পাওয়ায় অজিদের দ্বিতীয় ইনিংসে বদলি উইকেটরক্ষকের দায়িত্ব পাওয়া অলি পোপ চারটি ক্যাচ নিয়ে স্পর্শ করেন রেকর্ড।
প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সবচেয়ে সফল বোলার স্কট বোল্যান্ড। এই ডানহাতি পেসার ৪ উইকেট নেন ৩৬ রানে। ২ উইকেট করে নেন অধিনায়ক প্যাট কামিন্স ও অফ স্পিনার নাথান লায়ন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: (চতুর্থ দিন শেষে)
অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংস: ৪১৬/৮ (ইনিংস ঘোষণা)
ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংস: (আগের দিন ২৫৮/৭) ৭৯.১ ওভারে ২৯৪ (বেয়ারস্টো ১১৩, লিচ ১০, ব্রড ১৫, অ্যান্ডারসন ৪*; কামিন্স ২/৬৮, স্টার্ক ১/৫৬, বোল্যান্ড ৪/৩৬, গ্রিন ১/২৪, লায়ন ২/৮৮, লাবুশেন ০/৭)
অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় ইনিংস: ৬৮.৫ ওভারে ২৬৫/৬ (ইনিংস ঘোষণা) (হ্যারিস ২৭, ওয়ার্নার ৩, লাবুশেন ২৯, স্মিথ ২৩, খাওয়াজা ১০১*, গ্রিন ৭৪, ক্যারি ০; অ্যান্ডারসন ০/৩৪, ব্রড ০/৩১, উড ২/৬৫, লিচ ৪/৮৪, রুট ০/৩৫, মালান ০/১৩)
ইংল্যান্ড ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৩৮৮) ১১ ওভারে ৩০/০ (ক্রলি ২২*, হামিদ ৮*; স্টার্ক ০/১০, কামিন্স ০/১৫, বোল্যান্ড ০/৫)।
Comments