তালগোল পাকানো রান তাড়ায় হারল বাংলাদেশ

সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে ২৩ রানে হারিয়েছে স্বাগতিকরা।
ban_vs_zim
ছবি: টুইটার

উইকেট ব্যাটিংবান্ধব হলেও ১৬৭ রানের লক্ষ্য তাড়ায় প্রথমেই হোঁচট খায় বাংলাদেশ। সেই ধাক্কা সামলে আর জেতার পরিস্থিতি তৈরি করতে পারেনি তারা। পরিকল্পনাহীন ব্যাটিংয়ে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ম্যাচ খুইয়ে বসল তারা।

শুক্রবার হারারেতে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে ২৩ রানে হারিয়েছে স্বাগতিক জিম্বাবুয়ে। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে তারা তোলে ৬ উইকেটে ১৬৬ রান। জবাবে মাহমুদউল্লাহর দল ১৯.৫ ওভারে পৌঁছাতে পারে ১৪৩ পর্যন্ত। ফলে এক ম্যাচ বাকি থাকতে সিরিজে ফিরেছে সমতা। আগের ম্যাচে ৮ উইকেটে জিতেছিল সফরকারীরা।

অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা শামীম হোসেন পাটোয়ারী বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ২৯ রান করেন ১৩ বলে। এছাড়া, আফিফ হোসেনের ব্যাট থেকে আসে ২৫ বলে ২৪ রান। আরও কয়েকজন শুরু পেলেও এগোতে পারেননি, তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে ফেরেন সাজঘরে।

রান তাড়ায় শুরুটা একদমই ভালো হয়নি বাংলাদেশের। ১৭ রানের মধ্যে বিদায় নেন দুই ওপেনার। তৃতীয় ওভারে আক্রমণে গিয়েই বাংলাদেশকে নাড়িয়ে দেন পেসার ব্লেসিং মুজারাবানি। প্রথম বলটি উইকেটে টেনে বোল্ড হন নাঈম শেখ। তিন বলের ব্যবধানে ইনসাইড আউট শটে কভারে সিকান্দার রাজার হাতে ধরা পড়েন সৌম্য সরকার।

শেখ মেহেদী হাসান তিনে উঠে আসায় চারে নামেন সাকিব আল হাসান। পাওয়ার প্লের বাকিটা সময়ে কোনো বিপদ ঘটতে দেননি তারা। ৬ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ায় ৪২/২।

ওভারপ্রতি প্রায় ৯ গড়ে রান দরকার হওয়ায় নিয়মিত বাউন্ডারি আদায় করে নিতে হতো। সেই প্রচেষ্টায় ব্যর্থতা সঙ্গী হলে টপাটপ পড়তে থাকে বাংলাদেশের উইকেট। ওয়েলিংটন মাসাকাদজা রীতিমতো কোমর ভেঙে দেন প্রতিপক্ষের।

সপ্তম ওভারে বল হাতে নিয়েই অভিজ্ঞ সাকিবকে ফেরান এই বাঁহাতি স্পিনার। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে ব্যাটে-বলে সংযোগ করতে না পেরে রাজার তালুবন্দি হন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ভরসা। ১০ বলে ১২ রান আসে তার ব্যাট থেকে।

নিজের পরের ওভারে জোড়া শিকার ধরেন মাসাকাদজা। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ চাপ আলগা করতে গিয়ে লং অনে ক্যাচ দেন। তিন বল পর তার পথ ধরেন শেখ মেহেদীও। অনেকটা সময় উইকেটে কাটালেও ঠিকমতো স্ট্রাইক পরিবর্তন করতে না পারায় চাপ বাড়ছিল তার ওপর। তা সামলাতে না পেরে বিলাসী শটে উইকেট ছুঁড়ে আসেন। তিনি ১৯ বল খেলে করেন ১৪ রান।

ফলে দলীয় ৫৩ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। ১০ ওভারে স্কোরবোর্ডে ৬০ রান থাকায় অনেকখানি ব্যাকফুটে চলে যায় তারা। পরের ১০ ওভারে ১০৭ রানের সমীকরণ আর মেলানো হয়নি তাদের।

আগের ম্যাচ শেষ করে আসা নুরুল হাসান সোহানও উড়িয়ে মারতে গিয়ে বিদায় নেন দ্রুত। সপ্তম উইকেটে অবশ্য কিছুটা আশার আলো দেখতে পেয়েছিল বাংলাদেশ। আফিফ ও শামীমের ২৩ বলে ৪১ রানের এই জুটি ভাঙার পর ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে যায় টাইগারদের।

ওয়েসলি মাধেভেরের করা ১৫তম ওভারে ১৬ রান তোলেন শামীম। কিন্তু পরের ওভারেই প্রথম বলেই লং অনে জীবন হারান তিনি। তার ইনিংসে ছিল ৩ চার ও ২ ছক্কা। আফিফ বিদায় নেন হাত খোলার আগেই। শেষ মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের ১৫ বলে ১৯ রান কেবল হারের ব্যবধানই কমায়।

বাংলাদেশের শেষ ৫ উইকেট ভাগাভাগি করে নেন টেন্ডাই চাতারা ও লুক জঙ্গুয়ে। রিচার্ড এনগারাভার পরিবর্তে একাদশে ফেরা চাতারা ঝুলিতে ঢোকান নুরুল ও আফিফকে। শামীমকে ফিরিয়ে জিম্বাবুয়েকে ব্রেক থ্রু দেওয়ার পর লেজটাও মুড়িয়ে দেন জঙ্গুয়ে।

এর আগে জিম্বাবুয়ে চ্যালেঞ্জিং পুঁজি পায় মাধেভেরে ও রায়ান বার্লের কল্যাণে। ক্যারিয়ারসেরা ইনিংসে ৭৩ রান আসে ডানহাতি মাধেভেরের ব্যাট থেকে। ৫৭ বলের ইনিংসে তিনি মারেন ৫ চার ও ৩ ছক্কা। সমান ২টি করে চার ও ছয়ে বার্ল অপরাজিত থাকেন ১৯ বলে ৩৪ রানে। বাংলাদেশের পক্ষে পেসার শরিফুল ইসলাম ৩ উইকেট নেন ৩৩ রানে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

জিম্বাবুয়ে: ২০ ওভারে ১৬৬/৬ (মারুমানি ৩, মাধেভেরে ৭৩, চাকাভা ১৪, মায়ার্স ২৬, রাজা ৪, বার্ল ৩৪*, জঙ্গুয়ে ২; তাসকিন ০/২৮, শেখ মেহেদী ১/১১, শরিফুল ৩/৩৩, সাইফউদ্দিন ০/৩৬, সাকিব ১/৩২, সৌম্য ০/১৬, শামীম ০/৭)

বাংলাদেশ: ১৯.৫ ওভারে ১৪৩ অলআউট (নাঈম ৫, সৌম্য ৮, শেখ মেহেদী ১৯, সাকিব ১২, মাহমুদউল্লাহ ৪, আফিফ ২৪, নুরুল ৯, শামীম ২৯, সাইফউদ্দিন ১৯, তাসকিন ৫, শরিফুল ০*; রাজা ০/২২, চাতারা ২/২৪, মুজারাবানি ২/২১, জঙ্গুয়ে ৩/৩১, মাসাকাদজা ৩/২০, মাধেভেরে ০/১৬)।

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

4h ago