নতুন শটের খোঁজে পুরনো ঠিকানায় মুশফিক

লম্বা সময় ধরে টি-টোয়েন্টিতে রান পাচ্ছেন না মুশফিকুর রহিম। মেটাতে পারছেন না দ্রুত রান আনার দলের চাহিদাও। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে উদ্বিগ্ন মুশফক নিজের ছন্দ পেতে তাই ছুটলেন পুরনো ঢেরায়। পুরনো গুরুর কাছ থেকে পেলেন শটের রেঞ্জ বাড়ানোর তালিম।
নিজের অফিসিয়াল ফেসবুকে বৃহস্পতিবার একটি ছবি পোস্ট করেন মুশফিক। সেখানে বিকেএসপির ক্রিকেট উপদেষ্টা নাজমুল আবেদিন ফাহিমের পরামর্শ নিতে দেখা যায় তাকে। ক্যাপশনে মুশফিক লেখেন, 'যেখানে আমার ঠিকানা সেখানে ফিরে ভালো লাগছে, বিকেএসপি আমার ঘর।'
বিকেএসপির ছাত্র মুশফিক একদম শুরু থেকে শিক্ষক হিসেবে পেয়েছেন নাজমুলকে। দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপে এই ক্রিকেট কোচ জানান মুশফিকের সঙ্গে তিনদিনের একটি সেশন করছেন তিনি। যাতে মানসিক বাধা দূর করা, শটের রেঞ্জ বাড়ানো নিয়ে কাজ করছেন তারা।
বুধবার তিন ঘণ্টা চলেছে সেশন, বৃহস্পতিবারও তিন ঘণ্টা কাজ করেছেন তারা। কাজ হবে শুক্রবারেও।
টি-টোয়েন্টিতে সর্বশেষ ২৫ ইনিংসে মুশফিকের ফিফটি কেবল একটি। এই সময়ে ১৬.৪৭ গড় আর ১০২.৪৭ স্ট্রাইকরেট দিচ্ছে তার হতশ্রী সময়ের ছবি। এই ফরম্যাটে তিন সিরিজ মিস করার পর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ফিরেও করেন হতাশ। ৫ ইনিংসে তার ব্যাট থেকে এসেছে কেবল ৩৯ রান। গড় ১৩ আর স্ট্রাইকরেট মাত্র ৫২।
এই অবস্থা থেকে বেরুতে টেকনিক্যাল বিষয়গুলো খোলাসা না করলেও নাজমুল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন মুক্তমনে খেলার একটা বাধা কাজ করছিল মুশফিকের ভেতর, 'ও যখন নামছে তখন হয়ত দলের দ্রুত কিছু উইকেট পড়ছে, ও নামার পর আরও উইকেট পড়ছে সেইসঙ্গে উইকেটের যে কন্ডিশন ছিল তাতে খুব দ্রুত রান করা সহজ ছিল না (নিউজিল্যান্ড সিরিজে)। তারপরও ওর যে খেলাটা খেলা দরকার ছিল সেটা পারেনি। মানে টি-টোয়েন্টিতে যেভাবে মুক্তমনে খেলতে হয় সেটার ঘাটতি হচ্ছিল।'
'ওই জায়গাগুলো নিয়ে আমরা কাজ করেছি। কাল কাজ করলাম, আজ করেছি, আগামীকালও করব। আমার মনে হয় এই জায়গায় তার উন্নতি হবে। এরপর সে চট্টগ্রামে যাবে 'এ' দলের হয়ে খেলতে সেখানে দেখা যাবে কি করে, কেমন খেলে। আমরা হয়ত সেখানে উন্নতিটা দেখব।'
নাজমুল জানান মানসিক বাধা দূর করার পাশাপাশি টি-টোয়েন্টির চাহিদা মেটানো কিছু শট যোগ হতে পারে মুশফিকের ভাণ্ডারে, 'টি-টোয়েন্টিতে যে ৩৬০ ডিগ্রির যে ব্যাপারটা (উইকেটের চারপাশে শট)। সবার তো এটা হয় না। ওই জায়গায় তার কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল। আশা করছি ও টি-টোয়েন্টিতে আরও ভার্সেটাইল হবে।'
'টি-টোয়েন্টির যে টপ ক্লাস খেলোয়াড়রা আছে তাদের যে ভার্সেটাইলিটি আমাদের দেশের প্লেয়ারদের সেটা নাই। আমাদের খেলোয়াড়রা টি-টোয়েন্টির খেলোয়াড় হিসেবে গড়ে উঠেনি। কিন্তু ওরা তো সেভাবেই গড়ে উঠেছে। কাজেই ওদের তুলনায় একটা সীমাবদ্ধতা আছেই।
'টি-টোয়েন্টিতে স্টেট অব রেডিনেসটা ভিন্ন। টেস্টে আমি সোজা বলটা খেলব, বাইরের বল ছেড়ে দিব। এভাবে খেলব। টি-টোয়েন্টিতে আমি ছেড়ে দেব না তো। আমাকে খেলতেই হবে, রান করতে হবে। প্রস্তুতি এনং স্কিলের প্রয়োগও ভিন্ন হবে। এখানে আমাদের অনেক ব্যাটসম্যানের মধ্যে সমস্যা হয়। কারণ তারা ওই স্টেটেই থাকে, লঙ্গার ভার্সনের যে স্টেট সেটার মধ্যেই থাকে। সেকারণে লিমিটেড হয়ে যায় তাদের খেলা।
'যেটা দেখলাম মুশফিকের সেই সুযোগ আছে (শটের রেঞ্জ বাড়ানোর)। সেটা নিয়েই আলাপ করলাম। এমনিতে তো বায়ো বাবলের কারণে সময় হয় না। অনেকদিন পর সময় হল।'
শুক্রবার আরেক সেশনের পর মুশফিক যাবেন চট্টগ্রামে। 'এ' দলের হয়ে এইচপি দলের বিপক্ষে ওয়ানডে খেলতে দেখা যাবে তাকে।
Comments