নাঈমের ঘূর্ণিতে পূর্বাঞ্চলের নাটকীয় জয়

সৌম্য সরকার ও মোহাম্মদ মিঠুনের ফিফটিতে অনায়াসে জেতার পথে ছিল ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল। হাতে ৯ উইকেট নিয়ে এক পর্যায়ে দরকার ছিল কেবল ৫৪ রান। ওই অবস্থা থেকে নাঈম হাসান ও তানবীর ইসলামের ঘূর্ণিতে ম্যাচ নেয় নাটকীয় মোড়। রোমাঞ্চ জাগানো ম্যাচে শেষ পর্যন্ত জিতেও গেছে ইসলামি ব্যাংক পূর্বাঞ্চল।
বুধবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ওয়ালটন মধ্যাঞ্চলকে ১০ রানে হারিয়ে দিয়েছে পূর্বাঞ্চল। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিসিএল) এর এবারের আসরে প্রথম ম্যাচ হারলেও দ্বিতীয় ম্যাচ জিতে ফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রেখেছে পূর্বাঞ্চল।
দলকে দারুণ জয় পাইয়ে দেওয়ার মূল নায়ক অফ স্পিনার নাঈম। টেস্ট দল থেকে বাদ পড়া এই স্পিনার মাত্র ৪৮ রানেই পেয়েছেন ৬ উইকেট। প্রায় অবিশ্বাস্যভাবে দলকে এনে দিয়েছেন জয়। তাকে সমর্থন জুগিয়ে তানবীর ইসলাম ৫৩ রানে নেন ৩ উইকেট।
১৯৯ রানের লক্ষ্যে আগের দিনই ১ উইকেটে ৮৭ রান তুলে ফেলে ওয়ালটন। ৪২ রানে খেলছিলেন মিঠুন, ৩৩ রানে সৌম্য। শেষ দিনে নেমে মিঠুনকে স্থবির রেখে দ্রুত রান আনতে থাকেন সৌম্য। তার ব্যাটে ম্যাচ হয়ে যায় সহজ।
জাতীয় লিগে দুই ম্যাচে দুই ফিফটির পর বিসিএলে নেমে প্রথম ম্যাচেই সৌম্য করেছিলেন সেঞ্চুরি। এই ম্যাচে প্রথম ইনিংসে রান না পেলেও দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি আবারও ছাড়িয়ে যান ফিফটি। দলের জয়ের সঙ্গে তার আরেকটি সেঞ্চুরিরও আভাস ছিল।
কিন্তু মিরপুরের উইকেটে শেষ দিনে জমা ছিল অনেক চমক। প্রথম ঘণ্টার পর থেকেই বল আচমকা নিচু হতে থাকে। উইকেটের মন্থরতার সঙ্গে দেখা দেয় অসমান বাউন্স।
নাঈমের বলে ৭৩ করে এলবিডব্লিউ হয়ে যান সৌম্য। ভেঙ্গে যায় দ্বিতীয় উইকেটে ১২০ রানের জুটি। এরপর যেন তাসের ঘর মধ্যাঞ্চলের ইনিংস।
৬০ রান মিঠুনকেও একইভাবে ছাঁটেন নাঈম। তাইবুর রহমান পারভেজ নাঈমের বলে দেন ক্যাচ। ৫ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট তুলে নাঈম খেলায় ফেরান ইসলামি ব্যাংক পূর্বাঞ্চলকে।
অধিনায়ক শুভাগত হোমকে ছাঁটেন বাঁহাতি স্পিনার তানবীর। কিপার ব্যাটসম্যান জাকের আলি অনিক ১ রান করেই বিদায় নেন নাঈমের বলে। খানিক পর আবু হায়দার রনিকে তুলে নেন তানবীর। মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীকে দারুণ এক বলে কাবু করেন নাঈম।
১৬৯ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে বসে মধ্যাঞ্চল। বাকিদের আসা যাওয়ার মাঝে টিকে ছিলেন চারে নামা ব্যাটসম্যান সালমান হোসেন। রবিউল হককে নিয়ে তিনি টেনে নিচ্ছিলেন দলকে। লাঞ্চের পর এসে রবিউল দ্রুত কিছু রান আনলে ফের আশা বাড়ে মধ্যাঞ্চলের।
কিন্তু ফের নাঈম হানেন আঘাত। ১৮ রান করা সালমানকে ফিরিয়ে দিয়ে নবম উইকেট ফেলে দেন তিনি। খানিক পর রবিউলকে আউট করে উল্লাসে মাতেন তানবীর। মূল উল্লাস হয় নাঈমকে ঘিরে। নিশ্চিত বড় হারের দিকে থাকা দল তার স্পিন ম্যাজিকেই পেয়ে গেছে নাটকীয় জয়।
Comments