ফিফটিতে চট্টগ্রামে মুশফিকের প্রস্তুতি

টি-টোয়েন্টিতে লম্বা সময় ধরে রান খরায় ভুগতে থাকা মুশফিকুর রহিম ছন্দ পেতে নানাভাবে প্রস্তুতি চালাচ্ছিলেন। ছুটি উপেক্ষা করে 'এ' দলের হয়েও খেলতে চেয়েছিলেন দুটি ম্যাচ। এইচপির বিপক্ষে প্রথমটিতে কিছুটা জড়োসড়ো ব্যাট করলে ম্যাচ জেতানো ফিফটিতে তার প্রস্তুতি হয়েছে ভালোই।
চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এইচপি-এ দলের সিরিজের প্রথম ম্যাচে জিতেছে বাংলাদেশ 'এ' দল। মঙ্গলবার প্রস্তুতিমূলক ওয়ানডেতে এইচপি করা ২৪৭ রান ১৩ বল আগে পেরিয়ে ৬ উইকেটে জিতেছে মুমিনুল হকের দল। ম্যাচে যার উপর ছিল সবচেয়ে বেশি নজর সেই মুশফিক ৯১ বলে করেছেন অপরাজিত ৭০।
রান তাড়ায় নেমে ঝড়ো শুরু এনেছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে না থাকা এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানের মধ্যেই ছিল টি-টোয়েন্টির গান। মাত্র ১৮ বলে ২৭ করে তিনি ফিরে যাওয়ার পর ইমরুল কায়েসকে নিয়ে এগিয়ে যান মুমিনুল।
২৮ করে মুমিনুল ফেরার পর মুশফিক জুটি বাধেন ইমরুলের সঙ্গে। ক্রিজে গিয়ে বেশ আড়ষ্ট দেখা যায় মুশফিককে। প্রথম ৪ রান আনতে তার খেলতে হয়েছে ২২ বল। এরপর ধীরে ধীরে থিতু হয়ে রান বাড়িয়েছেন তিনি। তবে প্রস্তুতি যে কারণে সেই টি-টোয়েন্টির মেজাজ একদম দেখা যায়নি তার ব্যাটে। বরং প্রস্তুতিমূলক ম্যাচ জেতার সমীকরণ মাথায় নিয়েই খেলেছেন। গত সপ্তাহে পুরনো গুরু নাজমুল আবেদিন ফাহিমের কাছে গিয়ে সেশন করেছিলেন মুশফিক। নাজমুল জানিয়েছিলেন, কিছু নতুন শটের চেষ্টায় আছেন এই ব্যাটসম্যান। প্রথম এই প্রস্তুতি ম্যাচে মুশফিকের ব্যাট থেকে দেখা যায়নি সেরকম কোন শট।
টি-টোয়েন্টির চিন্তা বাদ দিয়ে এই ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝেই খেলেছেন তিনি। ইমরুলের সঙ্গে জুটিতে আসে ৫৯ রান। ৮৮ বলে ৬০ করা ইমরুল আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। মুশফিক আর আউটই হননি। ঠাণ্ডা মেজাজে খেলে তুলে নেন ফিফটি। মোসাদ্দেক এসে ৩১ বলে ২৪ করে যাওয়ার পর মোহাম্মদ মিঠুন নেমে ২৩ বলে ২৮ করলে জেতার সমীকরণ সহজ হয়ে যায় 'এ' দলের।
এর আগে ওপেনার তানজিদ তামিমের ঝলকে শুরু এইচপি দলের। পারভেজ হোসেন ইমন হতাশ করলে তানজিদ দেখান আগ্রাসী মেজাজ। সেঞ্চুরি আশা জাগিয়ে ৮১ রান ফেরেন এই বাঁহাতি। ৯৩ বলের ইনিংসে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৬ চার, ২ ছক্কা।
মাহমুদুল হাসান জয় তিনে নেমে থিতু হয়েছিলেন। কিন্তু কিছুটা মন্থর খেলে পরে পুষিয়ে দিতে পারেননি। ৬২ বল খেলে ৩৮ রানে ফেরেন তিনি। চারে নেমে শেষ দিকে আউট হওয়া শাহাদাত হোসেন দিপু করেন ৬৪ বলে ৫১ রান। এক পর্যায়ে ২৭০ রানের আশা ছিল এইচপির। অধিনায়ক আকবর আলি ২৪ বলে ২৮ করে বিদায় নিলে আড়াইশোর আগেই গুটিয়ে যায় তারা। এইচপির হয়ে এদিন খেলেছেন বিশ্বকাপ স্কোয়াডের আরেক ক্রিকেটার শামীম পাটোয়ারি। ব্যাট হাতে মাত্র ৮ রান করেছেন তিনি। বোলিংয়ে ৩৪ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট।
৩০ সেপ্টেম্বর একই ভেন্যুতে হবে দ্বিতীয় ওয়ানডে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বিসিবি এইচপি: ৪৮.৫ ওভারে ২৪৭ (তানজিদ ৮১, পারভেজ ৩, জয় ৩৮, শাহাদাত ৫১, হৃদয় ৮, আকবর ২৮, শামীম ৮, আমিনুল ৮, সুমন ১, রেজাউর ১, তানভির ১* ; রুবেল ২/৩২, কামরুল ১/৪৪, নাঈম ০.২৯, মোসাদ্দেক ৪/৩১, শহিদুল ২/৫০, তাইজুল ০/৫৭)
বাংলাদেশ 'এ': ৪৭.৫ ওভারে ২৫২/৪ (মুমিনুল ২৯, শান্ত ২৭, ইমরুল ৬০, মুশফিক ৭০*, মোসাদ্দেক ২৪, মিঠুন ২৮* ; মুগ্ধ ০/৫০, শামীম ১/৩৪, তানভির ০/৩০, সুমন ২/৫২, রেজাউর ০/৩৯, আমিনুল ১/৪৬)
ফল: বাংলাদেশ 'এ' ৬ উইকেটে জয়ী
Comments