বাটলারের প্রতিরোধ ভেঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার বিশাল জয়

জস বাটলার যখন হিট উইকেট হয়ে ফিরছেন দিনের খেলার বাকি আরও ২৩ ওভারের মতো, সকল রোমাঞ্চ তখনই সমাপ্ত হয়ে যায়। একমাত্র আশা ভরসা হয়ে ক্রিজে ছিলেন যে তিনিই। শেষ উইকেট পেতে আর কেবল তিন ওভার অপেক্ষা করতে  হয়েছে অস্ট্রেলিয়াকে। শেষ দিনে চোয়ালবদ্ধ দৃঢ়তা দেখালেও তাই দলের হার ঠেকাতে পারেননি বাটলার।

সোমবার ব্রিসবেনে গোলাপি বলের টেস্টে ইংল্যান্ডকে ২৭৫ রানে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। এবারের অ্যাশেজের প্রথম দুই টেস্টই জিতে সিরিজ জেতার দিকে এগিয়ে গেছে তারা।

৪ উইকেটে ৮২ রান নিয়ে দিন শুরু করা ইংল্যান্ডের লক্ষ্য ছিল পুরো দিন ক্রিজ আঁকড়ে ম্যাচ বাঁচানো। সারা দিনে বাকি ৬ উইকেট তুলে ম্যাচ জেতার কাজটা অনেক সহজ ছিল অস্ট্রেলিয়ার।

সেই পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান বাটলার। এই কিপার ব্যাটসম্যান উইকেটে ছিলেন ২৫৮ মিনিট। ২০৭ বল খেলে তিনি আউট হন ২৬ রান করে। তবে অনেকটা দুর্ভাগ্যের শিকারই বলতে হবে তাকে। অস্ট্রেলিয়ার কোন বোলার যখন তার বিপক্ষে সফল হচ্ছিলেন না তখন তিনি কাবু হন হিট উইকেটে।

পেসারদের বল ক্রিজের অনেক ভেতরে গিয়ে খেলছিলেন বাটলার। বলের লেন্থ সামলাতে কিছুটা সুবিধা হচ্ছিল তাতে। তবে শঙ্কা থেকে গিয়েছিল হিট উইকেটের। হয়েছেও তাই।

শেষ দিনের শেষ সেশনে স্টুয়ার্ট ব্রডকে নিয়ে যখন কাটিয়ে দেওয়ার চ্যালেঞ্জ। বাটলারও ছিলেন সাবলীল। জেই রিচার্ডসনের বল ব্যাকফুটে গিয়ে ঠেলেন অফ সাইডে। খানিক পর দেখা যায় ব্যাকফুটে গিয়ে পা দিয়ে স্টাম্প ভেঙ্গে দিয়েছেন বাটলার। অস্বস্তি দূর করে উল্লাসে মাতেন স্টিভ স্মিথরা।

এর আগে দিনের শুরুটা বাজে ছিল ইংল্যান্ডের। দিনের শুরুতেই ওলি পোপ ফেরেন মিচেল স্টার্কের বলে। অনেক সাফল্যের নায়ক বেন স্টোকস উইকেটে পড়ে থেকে থিতু হয়ে গিয়েছিলেন। তাকে এলবিডব্লিউ করে থামান ন্যাথান লায়ন।

১০৫ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে তড়িঘড়ি গুটিয়ে যাওয়ার পথে ছিল ইংল্যান্ড। এরপরই প্রতিরোধের গল্প শুরু বাটলারের। ক্রিস ওকসকে নিয়ে গড়ে উঠা তার দারুণ এক জুটি। তাদের জুটিতে আসে ৬১ রান। সবচেয়ে বড় কথা ৩২.২ ওভার পার করে দেন দুজন। বাটলার ক্রিজে পড়ে থাকার দিকে মন দিলেও ওকস রানও বাড়িয়েছেন।

রিচার্ডসনের বলে বোল্ড হয়ে পরে থামে তার ৯৭ বলে ৪৪ রানের ইনিংস। এরপর ওলি রবিনসনকে নিয়ে খানিক্ষন চেষ্টা চালান বাটলার। রবিনসন ফিরে যাওয়ার পর ব্রডকে নিয়ে দিনের বাকিটা পার করার কঠিন পথ ছিল। তবে টেস্টে ১৩ ফিফটি, ১ সেঞ্চুরি থাকা ব্রড ব্যাট করতেও পটু থাকায় আশা ছিল ইংল্যান্ডের। বাটলারের দুর্ভাগ্যজনক বিদায় তাদের সেই সম্ভাবনা নিভিয়ে দেয়।

অবশ্য এই টেস্ট ইংল্যান্ড হেরে যায় প্রথম ইনিংসের ব্যর্থতায়। অস্ট্রেলিয়ার ৪৭৩ রানের জবাবে ২৩৬ রানে অলআউট হয়ে যায় তারা। অস্ট্রেলিয়া অবশ্য ফলোঅন না করিয়ে আরও ২৩০ রান যোগ করে ইংল্যান্ডকে দেয় ৪৬৮ রানের লক্ষ্য। এরপর মূলত দারুণ টিকে থাকার নিবেদন দেখিয়ে ম্যাচটাই বাঁচাতে পারত জো রুটের দল। বাটলার লড়লেও শেষ মুহূর্তে গিয়ে তা আর হয়নি।