'বাবা, এটা সত্যি বলে মনে হচ্ছে না'

ছবি: সংগৃহীত

শেন ওয়ার্নের আকস্মিক মৃত্যুর পর তার পরিবারের পক্ষ থেকে আহ্বান করা হয়েছিল গোপনীয়তা রক্ষার। অস্ট্রেলিয়ার এই কিংবদন্তি গত শুক্রবার থাইল্যান্ডের কোহ সামুই দ্বীপে একটি ভিলায় মারা যাওয়ার পর নিশ্চুপ ছিলেন তার স্বজনরা। তবে ময়নাতদন্তে ওয়ার্নের স্বাভাবিক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর সোমবার তার পরিবারের সদস্যরা প্রথমবারের মতো তুলে ধরেছেন তাদের বেদনাদায়ক অনুভূতি, যা উঠে এসেছে ভারতের ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফোর একটি প্রতিবেদনে।

ওয়ার্নের স্বজনদের কণ্ঠে প্রতিধ্বনিত হয়েছে চলমান যন্ত্রণা এবং এক অসীম শূন্যতার কথা, যা পূরণ করা অসম্ভব।

'এমন একটি দুঃস্বপ্ন, যার কোনো শেষ নেই' এবং 'এমন একটি ট্র্যাজেডি, যা কখনোই মেনে নেওয়া সম্ভব না'- এই কথাগুলো বলেছেন প্রয়াত ওয়ার্নের বাবা কিথ ও মা ব্রিজিট।

ওয়ার্নের ভাই জেসন মেলবোর্নে একসঙ্গে টেস্ট ম্যাচ দেখতে যাওয়ার দিনগুলোর স্মৃতি রোমন্থন করেছেন। পাশাপাশি স্মরণ করেছেন শৈশবে রেসলিং এবং আজীবন গলফ ও পোকারে নিজেদের মধ্যে লড়াইয়ের কথা।

এক বিবৃতিতে জেসন বলেছেন, '১৯৮২ সালে মেলবোর্ন ক্রিকেট মাঠের উদ্দেশে ট্রেন ধরার কথা আমার মনে আছে। বিখ্যাত দক্ষিণ দিকের স্ট্যান্ডের সামনের সারিতে বসে আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম যে কিংবদন্তি অ্যালান বোর্ডার ও জেফ থমসন যেন ইংল্যান্ডকে হারানোর জন্য প্রয়োজনীয় রান করতে পারেন।'

'কে ভেবেছিল সামনের বছরগুলোতে সে (ওয়ার্ন) মাঠে এত বড় প্রভাব ফেলবে এবং তার সম্মানে এই স্ট্যান্ডটির (দক্ষিণ দিকের স্ট্যান্ডের নাম এখন শেন কেইথ ওয়ার্ন স্ট্যান্ড।) নাম পরিবর্তন করা হবে? আশ্চর্যজনক জীবন (তার)। (সে একজন) আশ্চর্যজনক ব্যক্তি।'

এক আবেগঘন বার্তায় ওয়ার্নের বড় মেয়ে সামার বলেছেন, 'আমাদের সময়টা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। (বাবা) আমি তোমার সঙ্গে আরও ছুটি কাটাতে চাই, আরও হাসতে চাই, যেখানে তোমার হাসি পুরো ঘরকে আলোকিত করে, আরও "শুভরাত্রি, তোমাকে ভালোবাসি এস জে, সকালে দেখা করব" শুনতে চাই, আমাদের দিন কেমন কাটে, তা নিয়ে আরও কথা বলতে চাই। যখন তুমি আমাকে আলিঙ্গন করতে, তখন আমার ভীষণ নিরাপদ বোধ হতো। আমি আরও শুনতে চাই, আমাকে নিয়ে তুমি কতটা গর্বিত এবং তুমি আমাকে কতটা ভালবাসো।'

বাবার উদ্দেশ্যে ছোট মেয়ে ব্রুক বলেছেন, 'বাবা, এটা সত্যি বলে মনে হচ্ছে না। তুমি আর আমাদের সঙ্গে নেই, এটার কোনো মানে খুঁজে পাচ্ছি না। এটা ঠিক মনে হচ্ছে না। তোমাকে খুব তাড়াতাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জীবন খুবই নিষ্ঠুর। আমি চিরকাল আমাদের শেষ স্মৃতিগুলোকে লালন করব, যেখানে আমরা একসঙ্গে হেসেছি এবং অনেক মজা করেছি।'

ওয়ার্নের ছেলে জ্যাকসন বলেছেন, 'আমি জানি তুমি আমার জন্য যা চেয়েছ, তা হলো সুখী হওয়া। যাই ঘটুক না কেন, তুমি শুধু চেয়েছিলে, আমি সুখী হই। আমি সেটাই করতে যাচ্ছি- সুখী হওয়ার চেষ্টা করা।'

সাবেক এই তারকা লেগ স্পিনারের প্রাক্তন স্ত্রী সিমোন বলেছেন, ওয়ার্ন 'বিশ্বের জন্য এমন উজ্জ্বল আলো এনেছিলেন যে তিনি চলে যাওয়ার পরও সেই আলো দেদীপ্যমান থেকে যাবে'।

ময়নাতদন্তের সমাপ্তির পর ওয়ার্নের মৃতদেহ থাইল্যান্ড থেকে অস্ট্রেলিয়ায় ফেরত পাঠানোর চূড়ান্ত পরিকল্পনা করা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, আগামীকাল মঙ্গলবার তার মৃতদেহ নিজ দেশে পৌঁছাবে। তার পরিবার রাষ্ট্রীয়ভাবে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া আয়োজনের একটি প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। তবে জনসাধারণকে ওয়ার্নের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ দেওয়ার আগে প্রথমে তারা একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে। 

Comments

The Daily Star  | English

JnU second campus: Project stalled amid bureaucratic hurdles

The construction of Jagannath University’s long-awaited second campus in Keraniganj has stalled due to bureaucratic delays.

2h ago