বেয়ারস্টোর বিস্ফোরক সেঞ্চুরিতে ইংল্যান্ডের অবিশ্বাস্য জয়
জনি বেয়ারস্টো যখন ক্রিজে যান ইংল্যান্ডের সমীকরণ তখন বেশ কঠিন। ছন্দে থাকা জো রুটসহ ৫৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে কাঁপছিল তারা। এমন পরিস্থিতিতে ম্যাচ বাঁচানোর দিকেই যায় বেশিরভাগ দল। বেয়ারস্টো ভাবলেন ভিন্ন। টি-টোয়েন্টির ব্যাটিং নিয়ে এলেন টেস্টে। ৯২ বলে করলেন ১৩৬! অধিনায়ক বেন স্টোকসও করলেন দারুণ ফিনিশিং। রূপকথার গল্পের মতই আরেকটি টেস্ট জিতে নিল ইংল্যান্ড।
নটিংহ্যামের ট্রেন্ট ব্রিজে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে মঙ্গলবার নিউজিল্যান্ডকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে ইংল্যান্ড।২৯৯ রানের লক্ষ্যে ইংল্যান্ড তুলে নিয়েছে ৫০ ওভারেই।
টেস্টের শেষ দিনের উইকেট, টেস্ট ম্যাচে ফিল্ডিংয়ের স্বাধীনতা, বোলারদের স্বাধীনতা এসব মাথায় নিলে এই রান তাড়া রীতিমতো চোখ কপালে তোলার মতোই ঘটনা।
আগের দিনের ৭ উইকেটে ২৪৭ রান নিয়ে দিন শুরু করেছিল নিউজিল্যান্ড। শেষ ৩ উইকেট নিয়ে তারা যোগ করে আরও ৩৭ রান। আগের ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান ড্যারেল মিচেল এই ইনিংসেও অপরাজিত থেকে যান ৬২ রানে। তাতে জুতসই অবস্থানেই চলে যায় কিউইরা।
কারণ ৭০ ওভারের মতো ব্যাট করে ম্যাচ জিততে ইংল্যান্ডকে তুলতে হতো ২৯৯ রান। ম্যাচ না জিতলেও ড্র করার সম্ভাবনা বেশি দেখছিল কিউইরা। তাদের সেই সমীকরণ এলোমেলো করে দেন বেয়ারস্টো-স্টোকসরা। পঞ্চম উইকেট জুটিতে ১২১ বলেই দুজনে তুলেন ১৭৯ রান!
২৯৯ রানের লক্ষ্যে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই ট্রেন্ট বোল্টের বলে জ্যাক ক্রলিকে হারায় ইংল্যান্ড। অ্যালেক্স লিস, ওলি পোপ মিলে দ্বিতীয় উইকেটে কিছুটা প্রতিরোধ গড়েছিলেন। ৪১ রানের জুটির পর পোপকে তুলে নেন ও হেনরি। পরের ওভারেই সবচেয়ে বড় ধাক্কা খায় ইংল্যান্ড। রান মেশিন রুটকে নিজের বলে ক্যাচ বানিয়ে বিদায় করেন বোল্ট। ৫৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ জেতার আশা তখন একদম ফিকে।
বেয়ারস্টো ক্রিজে এসে শুরু থেকেই ছিলেন ইতিবাচক। লিসের সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে তার জুটিটা বেশি সময় স্থায়ী হয়নি। ৩৭ রানের জুটির পর ৪৪ করা লিস ফেরেন টিম সাউদির শিকার হয়ে।
এরপর সেই অবিশ্বাস্য জুটি, মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া ব্যাটিংয়ে মাতেন বেয়ারস্টো-স্টোকস। দুজনেই নিজেদের প্রথাগত ঘরানায় আগ্রাসী। সেই ছাপ রাখেন নিজেদের ব্যাটিংয়ে।
কিউই বোলারাও আক্রমণ করে উইকেট নেওয়ার তুমুল চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। ক্রিজ আঁকড়ে পড়ে ম্যাচ বাঁচানোর চিন্তার চেয়ে নিজেদের ঘরানার ব্যাটিংয়ে আরও ভাল ফল দেখছিলেন তারা।
চার-ছক্কায় ট্রেন্ট ব্রিজের গ্যালারি মাতোয়ারা করে তুলেন দুজন। বিশেষ করে বেয়ারস্টো যেন খেলছিলেন ২০ ওভারের ক্রিকেট। ১৫০ মিনিট স্থায়ী ইনিংসে খেলেছেন ৯২ বল। তাতেই ১৪ চার আর ৭ ছক্কায় তার রান ১৩৬। টেস্ট ম্যাচে তার স্ট্রাইকরেটটা ১৪৭.৮২!
বোল্টের বলে ২৭২ রানে যখন বেয়ারস্টো যখন আউট হয়ে ফিরছেন তখন জয়ের কিনারে ইংলিশরা। বেন ফোকসকে নিয়ে সহজেই বাকি কাজ সেরেছেন স্টোকস। ইংল্যান্ড অধিনায়ক ১০ চার, ৪ ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ৭৫ রানে।
এই জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম দুটিতেই জিতে সিরিজ নিশ্চিত করেছে ইংল্যান্ড। লর্ডসে আগের টেস্টেও তারা জিতেছিল রোমাঞ্চ জাগিয়ে।
Comments