ব্যাটিং ব্যর্থতায় শেষ ম্যাচেও এলো না বড় পুঁজি

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

শুরুতে বল ব্যাটে আসছিল ভালোভাবে। বাংলাদেশের রানও বাড়ছিল তরতর করে। কিন্তু কয়েক ওভার যেতেই উইকেট ফিরল আগের চেহারায়। বল মাটিতে পড়ে গ্রিপ করল, হলো উঁচু-নিচু। সুযোগ কাজে লাগিয়ে অস্ট্রেলিয়া ঘুরে দাঁড়াল ভালোভাবে। ব্যাটসম্যানরা কেউই ইনিংস বড় করতে না পারায় শেষ পর্যন্ত তাই কেবল লড়াইয়ের পুঁজি পেল স্বাগতিকরা।

সোমবার সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে পুরো ২০ ওভার খেলে তারা তুলেছে ৮ উইকেটে ১২২ রান।

বাংলাদেশের ছয় ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কে পৌঁছালেও কেউই ইনিংস টানতে পারেননি। ওপেনার নাঈম শেখ ২৩ বলে সর্বোচ্চ ২৩ রান করেন। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ পাঁচে নেমে ১৯ রান করেন ১৪ বলে। তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৮ রান আসে অতিরিক্ত খাত থেকে। অস্ট্রেলিয়ার নাথান এলিস ১৬ ও ড্যান ক্রিস্টিয়ান ১৭ রানে ২টি করে উইকেট নেন।

১৫ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ছিল ৫ উইকেটে ১০২। পিচের কথা বিবেচনায় নিয়েও সেখান থেকে ১৩০-১৪০ রানে পৌঁছানো ছিল খুবই সম্ভব। কিন্তু অজি বোলারদের সামনে রীতিমতো খাবি খায় স্বাগতিক ব্যাটসম্যানরা। তারা যোগ করতে পারে কেবল ২০ রান। এ সময়ে বাউন্ডারি আসে কেবল একটি!

আগের চার ম্যাচে বাংলাদেশের প্রথম উইকেটের পতন হয়েছিল দ্রুত। নাঈম ও সৌম্য সরকারের উদ্বোধনী জুটি তুলতে পেরেছিল যথাক্রমে ১৫, ৯, ৩ ও ২৪ রান। ব্যর্থতার ধারা ভাঙতে এদিন আনা হয় বদল। তা কাজেও লেগে যায়। নাঈমের সঙ্গে শেখ মেহেদী হাসান ৪২ রান আনেন ৪.৩ ওভারে।

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

শুরুর তিন ওভারে আলাদা আলাদা স্পিনার ব্যবহার করে অজিরা। তারা খরচ করেন ৩৩ রান। প্রথম ওভারে অ্যাশটন টার্নারের শেষ বলে ফাইন লেগ দিয়ে চার মারেন শেখ মেহেদী। পরের ওভারে বাঁহাতি স্পিনার অ্যাশটন অ্যাগারকে ডিপ স্কয়ার লেগ দিয়ে ছক্কায় স্বাগত জানান নাঈম। একাদশে ফেরা লেগ স্পিনার অ্যাডাম জাম্পার করা তৃতীয় ওভারে আসে দুটি চার।

পঞ্চম ওভারে আক্রমণে ফিরে স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার টার্নার ভাঙেন উদ্বোধনী জুটি। শেখ মেহেদীর দুর্ভাগ্যই বলতে হবে। ব্যাকফুটে গিয়ে পুল করার চেষ্টায় তার হাত থেকে ছুটে বেরিয়ে যায় ব্যাট। এর আগে ব্যাটের নিচের অংশে লেগে উঁচুতে উঠে যায় বল। অনায়াসে ক্যাচ লুফে নেন অ্যাগার। ১২ বলে ১৩ রান আসে শেখ মেহেদীর ব্যাট থেকে।

৬ ওভারে শেষে বাংলাদেশে তোলে ১ উইকেটে ৪৬ রান। সিরিজে এটাই পাওয়ার প্লেতে তাদের সর্বোচ্চ রান। আগের চার ম্যাচে এই পর্যায়ে তারা তুলেছিল যথাক্রমে ৩৩, ৩৮, ২৮ ও ৩০ রান।

তবে শুরুর রান তোলার গতি কমে আসে ধীরে ধীরে। সঙ্গে নিয়মিত বিরতিতে চলে উইকেটের পতন। ধুঁকতে থাকা বাঁহাতি নাঈম রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে শর্ট থার্ড ম্যানে ধরা পড়েন অ্যাগারের হাতে। তিনি ২৩ বলে করেন ২৩ রান। পেস বোলিং অলরাউন্ডার ক্রিস্টিয়ানের ডেলিভারি তার ব্যাটের উপরের অংশে লেগে উঠে যায়।

পরের ওভারের শেষ বলে সাকিবও ধরেন সাজঘরের পথ। উইকেটে স্বাচ্ছন্দ্যে ছিলেন না তিনি। তার অস্বস্তির ইতি টানেন জাম্পা। ২০ বলে কেবল ১১ রান করেন সাকিব। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ৮৪ ম্যাচের ৮৩ ইনিংসে প্রথমবার এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন তিনি।

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

ফলে ১০ ওভারে বাংলাদেশ স্কোরবোর্ডে জমা করে ৩ উইকেটে ৬০ রান। পরের ১০ ওভারে আরও ৫ উইকেট খুইয়ে তারা যোগ করতে পারে ৬২ রান।

১১ থেকে ১৫ ওভারে রানের চাকা বেশ সচল হয়। ৪২ রান আসে তখন। কিন্তু বিদায় নেন সৌম্য ও মাহমুদউল্লাহ। ব্যাটে-বলে সংযোগ ঠিকমতো না হওয়ায় মাহমুদউল্লাহ ফিরতি ক্যাচ দেন অ্যাগারকে। ভাঙে ২৪ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি।

নড়বড়ে শুরুর পর ভালো কিছুর আভাস দিয়ে সৌম্য লং অফে ক্যাচ তুলে ক্রিস্টিয়ানের দ্বিতীয় শিকার হন। ১৮ বলে একটি করে চার ও ছয়ে তিনি করেন ১৬ রান। এরপর নুরুল হাসান সোহান, আফিফ হোসেন, মোসাদ্দেক হোসেনরা কেউই হাত খুলতে পারেননি।

১৮তম ওভারে এলিসের বল স্টাম্পে টেনে বোল্ড হন সোহান। পরের ওভারে ক্রিস্টিয়ানের বলে একের পর এক ডট খেলেন মোসাদ্দেক। তিনি অপরাজিত থাকেন ৮ বলে ৪ রানে। একটি বাউন্ডারি বাদে বাকি সবগুলো বল ডট দেন তিনি।

শেষ ওভারে এলিস ছাঁটেন আফিফকে। ছক্কায় ইনিংস শুরু করে তিনি ১১ বলে করেন ১০ রান। দুই বলের ব্যবধানে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন কোনো ডেলিভারি মোকাবিলা না করেই হন রানআউট। শেষ পর্যন্ত কোনোক্রমে ১২০ পেরিয়ে যায় বাংলাদেশ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১২২/৮ (শেখ মেহেদী ১৩, নাঈম ২৩, সাকিব ১১, সৌম্য ১৬, মাহমুদউল্লাহ ১৯, নুরুল ৮, আফিফ ১০, মোসাদ্দেক ৪*, সাইফউদ্দিন ০, মোসাতফিজ ০*; টার্নার ১/১৬, অ্যাগার ১/২৮, জাম্পা ১/২৪,এলিস ১৬/২, ক্রিস্টিয়ান ২/১৭, সোয়েপসন ০/১৪)।

Comments

The Daily Star  | English

Why gold costs more in Bangladesh than in India, Dubai

Gold prices in Bangladesh continue to soar, leaving many to wonder why the precious metal costs more here than in neighbouring India or the global trading hub Dubai.

1h ago