মন্থর উইকেটে বাংলাদেশের পুঁজি ১৩১

সিরিজের আগে উইকেট নিয়ে ছিল অনেক কৌতূহল। তবে প্রথম ম্যাচে দেখা গেল মিরপুরের সেই চিরায়ত মন্থর আর টার্নিং উইকেট। তাতে অস্ট্রেলিয়ান বোলারদের গতি বৈচিত্র্য হয়ে উঠল বড় ফ্যাক্টর। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা নিজেদের চেনা ২২ গজের ফায়দা তুলতে পারলেন না সেভাবে। তাই অস্ট্রেলিয়াকে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য দিতে পারল না স্বাগতিকরা।
মঙ্গলবার শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে টস হেরে ব্যাট করতে গিয়ে ৭ উইকেটে ১৩১ রান করেছে বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেন সাকিব, লাগিয়ে ফেলেন ৩৩ বল। নাঈম শেখ ৩০ করেন ২৯ বল খেলে। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ২০ রান করেন ২০ বল খুইয়ে।
ছয়ে নেমে আফিফ হোসেন ১৭ বলে ২৩ রান না করলে ১২০ রানের নিচে আটকে থাকত বাংলাদেশ। এই পুঁজিতে ম্যাচ জিততে হলে বোলারদের দিতে হবে সেরাটা, ফিল্ডিং হতে হবে ক্ষিপ্র। মন্থর উইকেট হওয়ায় শুরুতে উইকেট তুলে নিলে জমজমাট লড়াইয়ের অবস্থা তৈরি হতে পারে।
ব্যাট করতে নেমে মিচেল স্টার্কের দ্বিতীয় বলে ছক্কা মেরে দিয়েছিলেন নাঈম। কিন্তু এরপরই কুঁকড়ে যান তিনি। আরেক ওপেনার সৌম্য সরকার রানের জন্য বল পাচ্ছিলেন না। বানিয়ে মারতে গিয়েও লাগাতে পারছিলেন না। অনেকগুলো ডট বল হয়ে যাওয়ার চাপে জশ হ্যাজেলউডকে লেগ সাইডে অনেকটা সরে এসে খেলতে গিয়ে ইনসাইড এজে হন বোল্ড।
স্টার্ককে পরে আরেক ছয় মারলেও নাঈম বাউন্ডারির মাঝে খেলছিলেন অনেকগুলো ডট বল। পাওয়ার প্লের ছয় ওভার পরও তাই বাংলাদেশের বোর্ডে রান আসে মাত্র ৩৩।
টানা ডটের চাপ পরে আর পুষিয়ে দেওয়া হয়নি নাঈমের। পাওয়ার প্লের পর অ্যাডাম জাম্পাকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে তিনি হন বোল্ড।
এরপর জুটি বাঁধেন দুই অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ-সাকিব। অধিনায়ক অবশ্য ৫ রানেই পান জীবন। অ্যাস্টন অ্যাগারের বলে স্লিপে তার ক্যাচ ফেলে দেন অ্যাস্টন টার্নার। জীবন পেয়েও থিতু হতে সময় লাগছিল তার।
১১ ওভার যাওয়ার পর বাংলাদেশ স্কোরবোর্ডে তোলে কেবল ৬১ রান। রানরেট ছিল ছয়ের নিচে। দ্রুত রান আনার চাপ বেড়ে গেলে চেষ্টা চালাচ্ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। হ্যাজেলউডকে এক ছয় মারার পর অবশ্য আর এগোতে পারেননি তিনি। স্লগ করতে গিয়ে তুলে দেন ক্যাচ।
সাকিব আরেক পাশে টিকে ছিলেন। রান বের করতে কষ্ট হচ্ছিল তারও। ২৩ রান একবার জীবনও পান তিনি। নুরুল হাসান সোহান পাঁচে নেমে দলকে টানতে পারেননি। ৪ বল ৩ রান করে অ্যান্ড্রু টাইয়ের বলে ক্যাচ উঠিয়ে ফেরেন এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান।
টিকে থাকা সাকিব পরেও রানের চাকায় দম দিতে পারেননি। ইনিংসের ১৭তম ওভারে তিনি ফেরেন সাজঘরে। তারও হন্তারক হ্যাজেলউড। গতি কমিয়ে দেওয়া বল সাকিব স্টাম্পে টেনে হন বোল্ড। শামীম পাটোয়ারি শেষদিকে নেমে কিছু করতে পারেননি। স্টার্কের গতিময় ইয়র্কারে স্টাম্প ভেঙে যায় তার। তার সংগ্রহ ৪ বলে ৩ রান।
শেষদিকে যা রান এসেছে তার প্রায় সবই আফিফের ব্যাটে। একমাত্র তাকেই দেখা গেছে স্ট্রাইক ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে খেলতে। মন্থর উইকেট পেয়ে প্রচুর নাকল বল করেন অজি পেসাররা। সেসব পড়তে পারেননি বাংলাদেশের ব্যাটসমানরা।
অজি বোলারদের মতো নিজেদের কাজটাও ঠিকঠাক করতে পারবে মাহমুদউল্লাহর দল?
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৩১/৬ (নাঈম ৩০, সৌম্য ২, সাকিব ৩৬, মাহমুদউল্লাহ ২০, সোহান ৪, আফিফ ২৩, শামীম ৪, শেখ মেহেদী ৭*; স্টার্ক ২/৩৩, হ্যাজেলউড ৩/২৪ , জাম্পা ১/২৮, টাই ১/২২, অ্যাগার ০/২২)।
Comments