মামুলি পুঁজি নিয়েও জিতল মধ্যাঞ্চল, সাকিবের অলরাউন্ড নৈপুণ্য

২৬ রানে শেষ ৬ উইকেট হারিয়ে অল্প পুঁজিতে গুটিয়ে গেল ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল। তবে বোলারদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নাটকীয় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ল তারা। ব্যাটে-বলে অলরাউন্ড নৈপুণ্যে দেখিয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেন তারকা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।
রোববার স্বাধীনতা কাপে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে লো স্কোরিং ম্যাচে ২২ রানে জিতেছে মধ্যাঞ্চল। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৩.২ ওভারে তারা অলআউট হয় ১৭৭ রানে। জবাবে ১৭ বল বাকি থাকতে ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চলের ইনিংস থামে ১৫৫ রানে।
চার দিনের ম্যাচের প্রতিযোগিতা বিসিএলের সবশেষ আসরে শিরোপা জেতে মধ্যাঞ্চল। এবার স্বাধীনতা কাপেও শুভ সূচনা করেছে তারা। আসন্ন বিপিএলের প্রস্তুতি হিসেবে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে প্রথম ম্যাচেই আলো ছড়ান সাকিব। ব্যাট হাতে ৫৮ বলে ২ চারে তিনি করেন ৩৫ রান। এরপর বল হাতে ১০ ওভারে ২ মেডেনসহ ২৪ রানে পান ২ উইকেট।
ব্যাটিংয়ে নেমে সৌম্য সরকারকে নিয়ে ভালো গতিতে রান আনতে থাকেন মধ্যাঞ্চলের মিজানুর রহমান। সৌম্য ১৮ বলে ১৩ করে রুবেল হোসেনের শিকার হলে ভাঙে ৩৬ রানের উদ্বোধনী জুটি।
দ্বিতীয় উইকেটে আব্দুল মজিদকে নিয়ে ৩১ রান যোগ করেন মিজানুর। নাঈম হাসানের বলে মজিদ স্টাম্পড হওয়ার পরের বলে আলাউদ্দিন বাবু এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন মিজানুরকে। ৪০ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৩৬ রান করেন মিজানুর।
জোড়া আঘাত সামলে সাকিব ও মোহাম্মদ মিঠুন এগিয়ে নিতে থাকেন দলকে। ৫৬ রানের জুটির পর ৩৭ বলে ৩৭ করে আউট হন মিঠুন। অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে সাজঘরে পাঠিয়ে রুবেল বিপর্যয় ডেকে আনেন মধ্যাঞ্চলের। মিঠুনের পর সাকিবও হন বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ইসলামের শিকার।
এরপর একে একে আবু হায়দার রনি, মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী ও হাসান মুরাদকে মাঠছাড়া করেন পেসার রেজাউর রহমান রাজা। জাকের আলী অনিককে বিদায় করে প্রতিপক্ষের ইনিংস মুড়িয়ে দেন রুবেল।
৯ ওভারে মাত্র ২১ রান খরচায় ৩ উইকেট নেন রাজা। সমানসংখ্যক উইকেট নিতে রুবেল দেন ৫১ রান। তানভীর ২ উইকেট দখল করেন ২৯ রানে।
লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম ওভারেই ধাক্কা খায় পূর্বাঞ্চল। আবু হায়দারের বলে উইকেটরক্ষক মিঠুনের হাতে ক্যাচ দেন মোহাম্মদ আশরাফুল। ৫ বল খেলে শূন্য রান করেন তিনি।
দ্বিতীয় উইকেটে রনি তালুকদার ও অধিনায়ক ইমরুল কায়েস ৬৪ রান যোগ করে জয়ের ভিত দেন দলকে। কিন্তু পরে গড়ে ওঠেনি কোনো ভালো জুটি। ইমরুল ৪৮ বলে একটি করে চার ও ছয়ে ২৫ রান করে শিকার হন বাঁহাতি স্পিনার মুরাদের। পরের ওভারে মোসাদ্দেক ফেরান ৬০ বলে ৩ চার ও ১ ছয়ে ৩৮ করা রনিকে।
হাঁসফাঁস করতে থাকা আফিফ হোসেনকে টিকতে দেননি সাকিব। থিতু হয়ে যাওয়া ইরফান শুক্কুরকেও আউট করেন তিনি। ৫৩ বলে ৪ চারে ৩১ রান আসে ইরফানের ব্যাট থেকে। এরপর মুরাদের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে দ্রুত ফেরেন নাঈম।
সপ্তম উইকেটে কিছুটা আশা জাগান নাদিফ চৌধুরী ও আলাউদ্দিন। তবে ৫ রানের ব্যবধানে তারা ফিরলে হার নিশ্চিত হয়ে যায় পূর্বাঞ্চলের। নাদিফ ৫৪ বলে ২ চার ও ১ ছয়ে করেন ২৮ রান। আলাউদ্দিনের ব্যাট থেকে ১ চারে ৩০ বলে আসে ১৭ রান। তাদের দুইজনকেই বিদায় করেন সৌম্য।
সাকিব ছাড়াও মধ্যাঞ্চলের হয়ে ২ উইকেট করে নেন মুরাদ ও সৌম্য। ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতেন অধিনায়ক মোসাদ্দেক। ব্যাট হাতে ৩৮ বলে ১৭ রান করার পর বল হাতে ভীষণ কৃপণতা দেখান তিনি। ১০ ওভারে ৪ মেডেনসহ ১৩ রানে নেন ১ উইকেট।
Comments