মেন্ডিস-এম্বুলদেনিয়ার ঘূর্ণিতে উইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করল শ্রীলঙ্কা

জয়ের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে লক্ষ্য ছিল ২৯৭ রানের। তবে গোটা দিন ব্যাট করে পার করে দিতে পারলে তারা ম্যাচ বাঁচাতে পারত। সেটা হতে দিলেন না লাসিথ এম্বুলদেনিয়া ও রমেশ মেন্ডিস। দুই স্পিনার ভাগাভাগি করে তুলে নিলেন ১০ উইকেট। তাতে ক্যারিবিয়ানদের গুঁড়িয়ে দিল শ্রীলঙ্কা।
শুক্রবার গলে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের পঞ্চম দিনে চা বিরতির আগেই ১৬৪ রানে জিতেছে স্বাগতিকরা। দুই সেশনও টিকতে না পারা উইন্ডিজ তাদের দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট হয়েছে মাত্র ১৩২ রানে। এর আগে দিমুথ করুনারত্নের দল দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করেছিল ৯ উইকেটে ৩৪৫ রানে।
দুই ম্যাচের সিরিজে সফরকারীদের হোয়াইটওয়াশ করে আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় চক্র শুভ সূচনা করেছে লঙ্কানরা। পূর্ণ ২৪ পয়েন্ট অর্জন করেছে দলটি। একই ভেন্যুতে সিরিজের প্রথম টেস্টে ১৮৭ রানে জিতেছিল তারা।
বাঁহাতি স্পিনার এম্বুলদেনিয়া ৫ উইকেট নেন ৩৫ রানে। অফ স্পিনার রমেশ সমান সংখ্যক উইকেট নিতে খরচ করেন ৬৬ রান। প্রথম ইনিংসে ৭০ রানে ৬ উইকেট দখল করেছিলেন তিনি। চার টেস্টের ক্যারিয়ারে এবারই প্রথম ম্যাচে ১০ উইকেট নেওয়ার স্বাদ পেলেন তিনি।
শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় ইনিংসে ১৫৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা হয়েছেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। দুই টেস্ট মিলিয়ে ১৮ উইকেট নিয়ে সিরিজসেরার পুরস্কার পেয়েছেন রমেশ।
আগের দিনের ৮ উইকেটে ৩২৮ রান নিয়ে খেলতে নেমেছিল শ্রীলঙ্কা। সকালে ২.৪ ওভার ব্যাট করে ১৭ রান যোগ করে তারা। জেসন হোল্ডারের ডেলিভারিতে এম্বুলদেনিয়া বোল্ড হওয়ার পর আসে ইনিংস ঘোষণা।
শ্রীলঙ্কার ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ নবম উইকেট জুটিতে ২২৫ বলে আসে ১২৪ রান। মূলত এই জুটির কারণে তারা পায় উইন্ডিজকে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য দিয়ে চেপে ধরার পুঁজি। এম্বুলদেনিয়া ১২৪ বলে করেন ৩৯ রান। ধনঞ্জয়া ২৬২ বল খেলে অপরাজিত থাকেন ১৫৫ রানে। তার ইনিংসে ছিল ১১ চার ও ২ ছক্কা।
লক্ষ্য তাড়ায় অষ্টম ওভারে অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটের উইকেট হারায় উইন্ডিজ। রমেশের বলে এলবিডব্লিউ হন তিনি। রিভিউ নিলেও আম্পায়ারের দেওয়া সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হয়নি।
দ্বিতীয় উইকেটে প্রতিরোধ গড়েন জারমেইন ব্ল্যাকউড ও এনক্রুমা বোনার। তারা ১২৮ বলে যোগ করেন ৫০ রান। মধ্যাহ্ন বিরতির আগের বলে ব্ল্যাকউডকে প্রথম স্লিপে ক্যাচ বানিয়ে জুটি ভাঙেন এম্বুলদেনিয়া। ৯২ বলে ৩৬ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
মধ্যাহ্ন বিরতির পর খেলা শুরু হলে ক্যারিবিয়ানদের ইনিংসে মড়ক লাগান রমেশ। ৪৪তম ওভারে শেই হোপ, রোস্টন চেজ ও কাইল মায়ার্সকে ফেরান তিনি। সাদামাটা এক ডেলিভারিতে ক্যাচ দেওয়া হোপ করেন ২৪ বলে ১৬ রান। চেজ ও মায়ার্স বিদায় নেন শূন্য রানে।
এই ধাক্কা সামলে আর ঘুরে দাঁড়ানো হয়নি উইন্ডিজের। ব্যাটিং ব্যর্থতায় তারা গুটিয়ে যায় মাত্র ১৩২ রানে। তাদের শেষ ৮ উইকেটের পতন হয় মাত্র ৪০ রানে।
একপ্রান্ত আগলে থাকা বোনার সপ্তম ব্যাটার হিসেবে আউট হন সর্বোচ্চ ৪৪ রানে। ১৪৩ বলের ইনিংসে ৩ বাউন্ডারি মারেন তিনি। ভিরাসামি পেরমলকে এলবিডব্লিউ করে নিজের ৫ উইকেট পূরণ করেন রমেশ। জোমেল ওয়ারিক্যানকে ফিরিয়ে ঝুলিতে ৫ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি উইন্ডিজকে অলআউট করে দেন এম্বুলদেনিয়া।
Comments