দুর্দান্ত জয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল ভারত

ইংল্যান্ডের উইকেট ফেলে উমেশ যাদবের উল্লাস। ছবি: আইসিসি

উইকেটে প্রত্যাশিত সহায়তা মিলছিল না। ওপেনারদের ভালো শুরুর পর ম্যাচ বাঁচানোর আশা বাড়ছিল ইংল্যান্ডের। কিন্তু জাসপ্রিট বুমরাহ, শার্দুল ঠাকুর, রবীন্দ্র জাদেজা, উমেশ যাদবদের সম্মিলিত একটানা প্রয়াসে একসময়বগিয়ে ভেঙ্গে পড়ল স্বাগতিকদের সকল প্রতিরোধ। প্রথম ইনিংসে ৯৯ রানে পিছিয়ে থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে দুর্দান্ত জয় তুলে সিরিজে এগিয়ে গেল ভারত।  

ওভালে সোমবার চতুর্থ টেস্টের শেষ দিনে আভাস ছিল রোমাঞ্চের। তবে বাকি দুই সম্ভাবনাকে চাপা দিয়ে বিরাট কোহলির দল জিতল ১৫৭  রানের বড় ব্যবধানে। এই জয়ে পাঁচ ম্যাচ টেস্ট সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ভারত।

ম্যানচেস্টারে শেষ টেস্ট হারলেও ভারতের আর সিরিজ হারার সম্ভাবনা থাকল না। ড্র করলেই নিশ্চিত হবে ইংল্যান্ডের মাঠে সিরিজ জয়।

৩৬৮ রানের লক্ষ্য নিয়ে নামা ইংল্যান্ড বিনা উইকেটে ১০০ রান তুলার পরও ব্যাটিং ধসে গুটিয়ে যায় ২১০ রানে। ইংলিশদের ইনিংস মুড়ে দিতে ভাগাভাগি করে উইকেট নিয়েছেন ভারতের বোলাররা। ৬০ রানে ৩ উইকেট উমেশের, বুমরাহ ২৭ রানে পেয়েছেন ২টি, জাদেজা ৫০ রান খরচায় তুলেছেন দুই উইকেট। ব্যাট হাতে দুই ইনিংসেই ফিফটি করা শার্দুল ২২ রানে নেন ২ উইকেট।

আগের দিনে বিনা উইকেটে ৭৭ রান নিয়ে নেমে দিনের শুরুটা ভালোই করেন রোরি বার্নস-হাসিব হামিদ। ভারতীয় বোলারদের হতাশায় পুড়িয়ে পার করে দেন প্রথম আধাঘন্টা।

একশো রানের জুটির পর বার্নসকে ফিরিয়ে ব্রেক থ্রো আনেন শার্দুল। দাবিদ মালান এসে টিকে থাকায় মন দিয়েছিলেন। উইকেটে তৈরি হওয়া কিছু রাফে বল ফেলে তাকে ভুগাতে থাকেন জাদেজা। উইকেট পাওয়ারও কাছে চলে গিয়েছিলেন তিনি। অল্পের জন্য হতাশ হতে হচ্ছিল তাকে। আরেক প্রান্তে ফিফটি করে টিকে থাকা হাসিবও জাদেজার বলে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান মোহাম্মদ সিরাজের ব্যর্থতায়।

উইকেটের জন্য মরিয়া ভারত মালানকে ফেরায় রানআউটে। হাসিবের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে কাটা পড়েন ৫ রান করা মালান। জীবন পাওয়া হাসিব অধিনায়ক জো রুটের সঙ্গেও জমে যান। ফের হতাশা বাড়তে থাকে ভারতের। তবে তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।

২১ রানের জুটির পর জাদেজাই ভাঙ্গেন এই প্রতিরোধ। তার দারুণ বলে বোল্ড হন ৬৩ করা হাসিব।  এরপরই বুমরাহর দুর্দান্ত এক স্পেলে এলোমেলো হয়ে যায় ইংল্যান্ড, ভিত নড়ে যায় তাদের। ফুল লেন্থে ক্ষিপ্র গতিতে একের পর এক ডেলিভারি দিয়ে সাফল্য আনেন সিরিজে ভারতের সফলতম পেসার। তার ভেতরে ঢোকা দারুণ এক বলে স্টাম্প উড়ে যায় ওলি পোপের। ক্রিজে এসে বুমরাহর সামনে মাত্র ৪ বল টিকতে পেরেছেন জনি বেয়ারস্টো। বুমরাহর ইয়র্কারে ভেঙ্গে পড়ে বেয়ারস্টোর স্টাম্পও।

ঠিক পরের ওভারে মঈন আলিকে শূন্য রানে বিদায় করে উড়তে থাকেন জাদেজা। মাত্র ৭ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে ইংল্যান্ড।

টেল এন্ডারদের নিয়ে লম্বা পথ পাড়ি দেওয়ার চ্যালেঞ্জ ছিল রুটের। সে চেষ্টায় বেশিদূর আগানো হয়নি তার। দ্বিতীয় সেশনের শেষ দিকে শার্দুলের বলে স্টাম্পে টেনে বোল্ড হন ৩৬ রান করা ইংল্যান্ড অধিনায়ক।

এরপর ভারতের জয় ছিল সময়ের ব্যাপার। চা-বিরতির আগেই ক্রিস ওকসকে তুলে নিয়ে আনুষ্ঠানিকতা এগিয়ে রাখেন উমেশ। চা-বিরতির পর বাকি লেজটাও ছাঁটেন উমেশ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ভারত প্রথম ইনিংস: ৬১.৩ ওভারে ১৯১

ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংস: ৮৪ ওভারে ২৯০

ভারত দ্বিতীয় ইনিংস: ৪৬৬ 

ইংল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংস:  ৯২.২ ওভারে ২১০ (লক্ষ্য ৩৬৮) (বার্নস ৫০, হাসিব ৬৩, মালান ৫, রুট ৩৬, পোপ ২, বেয়ারস্টো ০, মঈন ০, ওকস ১৮, ওভারটন ১০, রবিনসন ১০*, অ্যান্ডারসন ২ ; উমেশ ৩/৬০, বুমরাহ ২/২৭, জাদেজা ২/৫০, সিরাজ ০/৪৪, শার্দুল ২/২২ ) 

ফল: ভারত ১৫৭ রানে জয়ী।

সিরিজ: ভারত ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে (পাঁচ ম্যাচ সিরিজ)

Comments

The Daily Star  | English

Israel says conducted 'extensive strikes' in Iran's west

Israel and Iran attacked each other for a fifth straight day on Tuesday

2h ago