রেকর্ডের ম্যাচে পোলার্ডের ঝলক, সৌরভ-হার্দিকের ব্যাটে মুম্বাইর হাসি

দারুণ বোলিংয়ে পাঞ্জাব কিংসকে শুরুতেই চেপে ধরে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স, চাপের মধ্যে এইডেন মার্কামের ব্যাটে তবু লড়াইয়ের একটা পুঁজি পেয়ে গিয়েছিল পাঞ্জাব। রান তাড়ায় বিপর্যয়ে পড়ল মুম্বাইও। প্রথমে তাদের ত্রাতা হলেন সৌরভ তিওয়ারি, শেষের কাজটা চেনা ঢঙে করে উড়লেন হার্দিক পান্ডিয়া। এই ম্যাচে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে অনন্য এক রেকর্ড হয়ে যায় কাইরন পোলার্ডের। দলের জয়ে ব্যাটে-বলে অবদানও রাখেন এই ক্যারিবিয়ান।
মঙ্গলবার আবুধাবিতে আইপিএলের ম্যাচে মুম্বাই জিতেছে ৬ উইকেটে। পাঞ্জাবের ১৩৫ রান পুরো এক ওভার আগেই পেরিয়ে যায় মুম্বাই। দলের হয়ে ৩৭ বলে সর্বোচ্চ ৪৫ করেছেন সৌরভ। ছক্কা মেরে খেলা শেষ করা হার্দিক অপরাজিত ছিলে ৩০ বলে ৪০ রানে। এই জয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলে পাঁচে ফিরল মুম্বাই।
মুম্বাইর জেতার রাস্তা অবশ্য করে দেন বোলাররাই। তাতে বড় ভূমিকা পোলার্ডের। মাত্র ১ ওভার বল করেছেন। তাতেই পেয়েছেন ক্রিস গেইল আর লোকেশ রাহুলের মতো মহা গুরুত্বপূর্ণ দুই উইকেট। এরমধ্যে রাহুলকে আউট করে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে ৩০০তম উইকেট হয়ে যায় পোলার্ডের। টি-টোয়েন্টিতে ব্যাট হাতে ১০ হাজার রান, আর বোলিংয়ে ৩০০ উইকেট নেই আর কারো।
জাসপ্রিট বুমরাহ ৪ ওভারে ২৪ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। বাঁহাতি স্পিনে ক্রুনাল পান্ডিয়া ২৪ রানে পেয়েছেন ১ উইকেট। উইকেট না পেলেও অজি পেসার ন্যাথান কোল্টার-নেইল ৪ ওভারে দিয়েছেন কেবল ১৭ রান।
১৩৬ রান তাড়ায় নেমে প্রথম তিন ওভারে সতর্ক ছিলেন কুইন্টেন ডি কক-রোহিত শর্মা। হয়ত পরিকল্পনা ছিল একটু রয়েসয়ে রানের গতি বাড়াবেন। চতুর্থ ওভারে লেগ স্পিনার রবি বিষ্ণুই আসতেই এলোমেলো হয়ে যায় তার সব হিসেবে নিকেশ। পর পর দুই বলে তিনি তুলে নেন রোহিত আর সূর্যকুমার যাদবকে।
বিষ্ণইকে স্লগের চেষ্টায় মিড অনে ধরা দেন ৮ রান করা রোহিত। সূর্যকুমার বোকা বনে বোল্ড হন দারুণ এক গুগলিতে।
এরপরই অবশ্য সামলে উঠে মুম্বাই। সৌরভকে নিয়ে জুটি পেয়ে যান ডি কক। ৪৫ রানের জুটিতে সৌরভ যেভাবে সাবলীল ব্যাট করছিলেন, ডি কক তা পারছিলেন না। কিছুটা আড়ষ্ট ডি কক হাত খুলে মারতে গিয়ে পুষিয়ে দিতে পারেননি। মোহাম্মদ শামির এক এক্সপ্রেস ডেলিভারিতে স্টাম্প ভেঙ্গে যায় তার।
বাঁহাতি সৌরভ মেটাচ্ছিলেন সময়ের দাবি। রানের চাকা পড়তেই বাউন্ডারি এনে পরিস্থিতি রাখছিলেন স্বাভাবিক। হার্দিক পান্ডিয়ার সঙ্গে পেয়ে গিয়েছিলেন আরেক জুটি। তবে ৩১ রানের জুটির পর ন্যাথান এলিস এসে খেলায় ফেরান পাঞ্জাবকে। ৩ চার ২ ছয়ে ৩৭ বলে ৪৫ করা সৌরভ ধরা দেন কিপারের গ্লাভসে। ওই ওভারে মাত্র ৪ রান দেন এলিস। সমীকরণ কঠিন করে দেন মুম্বাইর।
তবে হার্দিক থিতু হতে কিছুটা সময় নিয়ে খেলা করে দেন সহজ। ক্রিজে এসে বোলিংয়ের মতো ব্যাটিংয়েও ছোট্ট উপস্থিতিতে বড় ব্যবধান। মাত্র ৭ বলে ১ চার, ১ ছক্কায় অপরাজিত ছিলেন ১৫ রানে।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে যাওয়া পাঞ্জবের ইনিংসে হানা দেন বুমহার, পোলার্ড, ক্রুনাল, ন্যাথান কোল্টার-নেইলরা। ৩৬ রানের ওপেনিং জুটির পর দ্রুত উইকেট হারাতে থাকে তারা। মাদ্বিপ সিংকে ক্রুনাল তুলে নেওয়ার পর কাইরন পোলার্ডের বলে বাজে টামিংয়ের শটে আত্মাহুতি দেন ক্রিস গেইল। পোলার্ড দুই বল শিকার ধরেন লোকেশ রাহুলকেও।
এলোমেলো পাঞ্জাব পরে এগিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকান এইডেন মার্কামের ব্যাটে চড়ে। বাকি সবার কাছে উইকেটের ভাষা দুর্বোধ্য লাগলেও মার্কাম খেলছিলেন কোন সমস্যা ছাড়। দারুণ সব ড্রাইভের পরসা মেলে ধরেন তিনি। ২৯ বলে ৪২ করা মার্কাম ১৬তম ওভারে না ফিরে গেলে আরও বড় পুঁজি পেতে পারত পাঞ্জাব।
Comments