যা যা থাকছে অস্ট্রেলিয়া সিরিজের কঠোর সুরক্ষা বলয়ে

করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঘরের মাঠে সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। তবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজটি হতে যাচ্ছে একেবারে ভিন্ন। আগের সবকিছু ছাপিয়ে এবারের জৈব সুরক্ষা বলয় হতে যাচ্ছে ভীষণ কঠোর।
দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপে বিসিবির প্রধান চিকিৎসক ও কোভিড প্রটোকলের দায়িত্বে থাকা ডা.দেবাশীষ চৌধুরী জানান, আগের টুর্নামেন্টগুলোর সঙ্গে এবার থাকছে বড় কিছু তফাৎ। দফায় দফায় কোভিড-১৯ পরীক্ষা, হোটেলে বিশেষ বলয়, বিশেষ ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা সহ বিস্তারিত সবকিছু তুলে ধরেছেন তিনি।
হোটেলে বিশেষ ব্যবস্থা
সবচেয়ে বড় পরিবর্তন থাকছে হোটেলে। বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া দুই দল ও ম্যাচ অফিসিয়ালরা থাকবেন পাঁচ তারকা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে। এই সময়ে হোটেল কর্তৃপক্ষ আর কোন অতিথি নিতে পারবেন না। সিরিজে সংশ্লিষ্টরা এরমধ্যেই হোটেলে দশ দিনের কোয়ারেন্টিনে প্রবেশ করেছেন। সিরিজ শুরুর অন্তত দশ দিন আগে হোটেলে প্রবেশ করতে না পারায় খেলতে পারছেন না মুশফিকুর রহিম। শেষ মুহূর্তে বলয়ের বাইরে চলে যাওয়ায় ছিটকে যান লিটন দাসও।
চোটে পড়ায় সিরিজ থেকে ছিটকে গেছেন অস্ট্রেলিয়ার নিয়মিত অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। তার বদলি নিতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। এই সিরিজের মাঝেও কোন ক্রিকেটার চোটে ছিটকে গেলে বদলি নেওয়ার ব্যবস্থা থাকছে না।
বিশেষ ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা
পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) বিকেলে ভাড়া করা বিমানে বাংলাদেশে আসবে অস্ট্রেলিয়া দল। বিমান থেকে নেমেই গাড়িতে উঠবেন ক্রিকেটাররা। বিমানবন্দরে থাকছে না ইমিগ্রেশন। অস্ট্রেলিয়া দলের ইমিগ্রেশন করা হবে বিশেষ ব্যবস্থায়। ইমিগ্রেশনের জন্য তাদের পাসপোর্ট জমা নেওয়া হবে। তবে সেই পাসপোর্ট জীবাণুমুক্ত করার পর তিনদিন পর ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
দেবাশীষ জানান সরকারের সহায়তার ফলেই এমনটা করা যাচ্ছে, 'সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আন্তরিকভাবে আমাদের সহায়তা করছেন বলেই এসব জটিলতা এড়ানো যাচ্ছে।'
প্রায় প্রতিদিনই করোনা পরীক্ষা
জিম্বাবুয়ে থেকে সিরিজ খেলে ২৯ জুলাই একইভাবে দেশে ফিরবে বাংলাদেশ দলও। তাদেরও সরাসরি নিয়ে যাওয়া হবে হোটেলে। হোটেলে ফিরে দুই দল তিনদিন কড়া কোয়ারেন্টিনে থাকবে। দফায় দফায় করোনা পরীক্ষার পর তাদের যেতে দেওয়া হবে অনুশীলনে।
অস্ট্রেলিয়া দল বাংলাদেশে অবস্থান করবে ১৩ দিন। এই ১৩ দিনের মধ্যে অন্তত ৭বার কোভিড-১৯ পরীক্ষার হবেই, দেবাশীষ জানান এরচেয়ে বেশিও হতে পারে, 'প্রায় প্রতিদিনই করোনা পরীক্ষা করতে হতে পারে। রুটিন পরীক্ষার বাইরেও আমরা যখনই মনে করব পরীক্ষা করাব।'
বলয়ের ভেতর আরেক বলয়ে মাঠকর্মীরা
মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের মাঠকর্মীরা হোটেলে না থাকলেও তারাও থাকছেন বলয়ের মধ্যে। এরমধ্যে স্টেডিয়ামে এই সিরিজে কাজ করতে যাওয়া মাঠকর্মীদের কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়েছে। সিরিজ শুরুর আগে তাদেরও দফায় দফায় হবে কোভিড-১৯ পরীক্ষা। পরীক্ষা হলেও তারা খেলোয়াড়দের কাছাকাছি যেতে পারবেন না।
ম্যাচ চলাকালীন সময়ে মাঠকর্মীরা বাউন্ডারি লাইনের পাশেও থাকবেন না। ক্রিকেটাররা ড্রেসিংরুমে ফিরে যাওয়ার পর তাদের মাঠে ঢুকতে দেওয়া হবে।
যদি বৃষ্টি আসে কি হবে? এই ব্যাপারে দেবাশীষ জানান, 'বৃষ্টি আসতেই পারে। সেই চিন্তা আমাদের আছে। তবে খেলা বন্ধ হওয়ার পর ক্রিকেটাররা সকলে ড্রেসিংরুমে ফিরে গেলে তবেই মাঠে ঢুকবেন মাঠকর্মীরা। আমরা চাইছি অন্তত ৫ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে।'
মাঠের ভেতর কোন ক্যামেরা থাকছে না
খেলা শুরুর আগে মাঠের ভেতর ব্রডকাস্টারদের একটি ক্যামেরা থাকে। এই সিরিজে সেটি থাকছে না। মাঠের বাইরে গ্যালারির বিভিন্ন ব্লক থেকে ক্যামেরা চালাতে হবে ব্রডকাস্টারদের। কোনভাবেই কেউ মাঠে প্রবেশ করতে পারবে না। আগেরবারের মতো ফটোসাংবাদিকদেরও গ্যালারি থেকে ছবি তুলতে হবে।
এছাড়া পিএমও জোনে কেউ থাকবে না। আকসু কর্মকর্তাদেরও ড্রেসিংরুমের পাশে রাখা হচ্ছে না। তারা থাকবেন দূরে।
Comments