রতুরাজ, ব্রাভোর ঝলকে ফিরল আইপিএল

Ruturaj Gaikwad
ছবি: আইপিএল

মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের পেসারদের ঝাঁজে শুরুতেই চরম বিপদে পড়েছিল চেন্নাই সুপার কিংস। কিন্তু কোণঠাসা অবস্থা থেকে দারুণ ব্যাটিংয়ে দলকে একাই টানলেন তরুণ রতুরাজ গায়কোয়াড়, শেষ দিকে তার সঙ্গে মিলে ঝড় তুললেন ডোয়াইন ব্রাভোও। লড়াইয়ের পুঁজি নিয়ে বল হাতে জ্বলে উঠলেন দীপক চাহার। ব্যাটিং ক্যামিওর পর বল হাতেও ব্রাভো গড়লেন ব্যবধান, চেন্নাই সুপার কিংস পেল অনায়াস জয়।

রোববার দুবাইতে আইপিএলের অসমাপ্ত মৌসুমের ফেরার ম্যাচে মুম্বাইকে ২০ রানে হারিয়েছে মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাই। আগে ব্যাট করে চেন্নাইর করা ১৫৬ রানের জবাবে ১৩৬ পর্যন্ত যেতে পেরেছে রোহিত শর্মাকে ছাড়া খেলতে নামা মুম্বাই।

৫৮ বলে ৮৮ করে চেন্নাইর ব্যাটিং হিরো রতুরাজ। ৮ বলে ২৩ রান করার পর  ২৫ রানে ৩ উইকেট নিয়ে অলরাউন্ড নৈপুণ্যে সেরা ব্রাভো।

১৫৭ রান তাড়ায় নেমে সতর্ক শুরু এনেছিলেন কুইন্টেন ডি কক- আনমোলপ্রিত সিং। থিতু হয়ে দ্রুত রান বাড়াতে গিয়েই কাটা পড়েন ডি কক। ১২ বলে ১৭ করা বাঁহাতি কিপার ব্যাটসম্যানকে দারুণ ভেতরে ঢোকা বলে এলবিডবলিউ করেন দীপক চাহার।

রোহিতের চোটে নেমে আনমোলপ্রিত কাজে লাগাতে পারেননি সুযোগ। ১৪ বল খুইয়ে করেন ১৬। মুম্বাই সবচেয়ে বড় ভরসা করেছিল যে দুজনের উপর, দুজনেই করেছেন হতাশ। তিনে নামা সূর্যকুমার যাদব ৭ বলে ৩ করে শিকার শার্দুল ঠাকুরের। ১০ বলে ১১ করে ঈশান কিশান ফেরেন ব্রাভোর বলে। ৫৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় মুম্বাই।

সৌরভ থিওয়ারি অবশ্য টিকে ছিলেন। এই জায়গা থেকে দলকে জেতাতে তার সঙ্গে টিকে থাকা দরকার ছিল কাইরন পোলার্ডের। মুম্বাইর ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক আভাস দিয়েও নিভেছেন দ্রুত।

১ ছয় ১ চারে ১৫ করা পোলার্ডকে এলবিডবলিউ করে দারুণ গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক থ্রো আনেন জশ হ্যাজেলউড।

এরপর খেলার নাটাই চলে আসে চেন্নাইর দিকে। সৌরভ ৪০ বলে ৫০ করে অপরাজিত থাকলেও জেতার কাছে নিতে পারেননি দলকে। তার সঙ্গীদের ছেঁটে কাজটা কঠিন করে দেন ব্রাভো।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমেই চরম বিপর্যয়ে পড়ে চেন্নাই। ট্রেন্ট বোল্ট, অ্যডাম মিলনের পেসে কাবু হয়ে পড়ে তাদের টপ অর্ডার। ঘাসের ছোঁয়া থাকা উইকেটে প্রতি ওভারেই পড়তে থাকে উইকেট।

বোল্টের বেরিয়ে যাওয়া বলে শর্ট থার্ড ম্যানে ক্যাচ দেন ফাফ দু প্লেসি, মিলনের বলের মঈন আলি ধরা পড়েন শর্ট মিড অফে। সুরেশ রায়না বোল্টের বল টামিং করতে না পেরে তুলে দেন ক্যাচ।

৭ রানেই পড়ে যায় ৩ উইকেট। তার আগে চোট পেয়ে আম্বাতি রাইডু বেরিয়ে যাওয়ায় মূলত তখন ৪ ব্যাটসম্যান নেই চেন্নাইর। অধিনায়ক ধোনি এসে করেন হতাশ। মিলনের বল পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দেন ফাইন লেগে। পাওয়ার প্লের ৬ ওভার শেষে মাত্র ২৪ রান তুলে তখন ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে চেন্নাই।

ওই অবস্থা থেকে দলকে টেনে নিয়ে যান গায়কোয়াড়। রবীন্দ্র জাদেজাকে পাশে পেয়ে যান তিনি। পরিস্থিতির দাবি মেটাতে জাদেজা তখন নিজেকে রাখেন গুটিয়ে। রান বাড়ানোর দায় নিজের কাঁধেই পুরোটা নেন গায়কোয়াড়।

থিতু হতে কিছুটা সময় লাগার পরই রান বাড়াতে থাকেন। বুদ্ধিদীপ্ত ব্যাটিংয়ে গ্যাপ বের করে রানার চাকা রেখেছেন সচল। পঞ্চম উইকেটে জাদেজার সঙ্গে আসে তার ৬৪ বলে ৮১ রানের জুটি।

৩৩ বলে ২৬ করে জাদেজা ফিরে যাওয়ার পর ক্রিজে এসেই ঝড় তুলেন ব্রাভো। ৩ ছয়ে মাত্র ৮ বলে ২৩ করে দেড়শোর সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিয়ে যান তিনি। শুরু থেকে একদম শেষ পর্যন্ত থেকে গায়কোয়াড় নিশ্চিত করেন বাকিটা। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান ৫৮ বলের ইনিংসে ৯ চার, ৪ ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ৮৮ রানে।

ওই মোমেন্টাম নিয়েই ম্যাচে ফিরে খেলা নিজেদের দিকে নিয়ে যায় চেন্নাই।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

চেন্নাই সুপার কিংস: ২০ ওভারে ১৫৬/৬ (গায়কোয়াড় ৮৮*, দু প্লেসি ০, মঈন ০, রাইডু ০* (আহত অবসর), রায়না ৪, ধোনি ৩, জাদেজা ২৬, ব্রাভো ২৩, ঠাকুর ১* ; বোল্ট ২/৩৫, মিলনে ২/২১, বুমরাহ ২/৩৩, পোলার্ড ০/১৫, রাহুল ০/২২, ক্রুনাল ০/২৭)

মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স:   ২০ অভারে ১৩৬/৮  (ডি কক ১৭, আনমোলপ্রিত ১৬, সূর্যকুমার ৩, ঈশান ১১, সৌরভ ৫০*, পোলার্ড ১৫, ক্রুনাল ৪, মিলনে ১৫, রাহুল ০, বুমরাহ ১* ; দীপক ২/১৯, হ্যাজেলউড ১/৩৪, শার্দুল ১/২৯, মঈন ০/১৬, ব্রাভো ৩/২৫, জাদেজা ০/১৬)

ফল: চেন্নাই সুপার কিংস ২০ রানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: রতুরাজ গায়কোয়াড় 

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh tops sea arrivals to Italy

The number of Bangladeshis crossing the perilous Mediterranean Sea to reach Italy has doubled in the first two months this year in comparison with the same period last year.

8h ago