রাশিয়ান জুয়াড়িদের ঠকাতে ভারতে 'ভুয়া' আইপিএল

১৯৭৩ সালের অস্কার বিজয়ী মুভি 'দ্য স্টিং'য়ের কথা মনে আছে? ঠিক যেন সেই মুভির চিত্রটা এবার বাস্তব হয়ে ফুটল। ভারতে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের আদলে একটি ভুয়া আসরের আয়োজন করে রাশিয়ান জুয়াড়িদের বোকা বানিয়ে হাতিয়ে নেয় বড় অঙ্কের অর্থ।

চলতি আসরের আইপিএল শেষ হয়ে গেছে গত ২৯ মে। কিন্তু এরপর ঠিক এ আসরের আদলে শুরু আরেক 'আইপিএল'। সে আসর তিন সপ্তাহ চলার পর কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছানোর পরই তা ধরা পরে স্থানীয় পুলিশের কাছে।

মাত্র ২১ জন যুবককে দিয়ে আয়োজন করা হয় এ আসরের। যারা মূলত খামারে শ্রমিক। দৈনিক ৪০০ রুপির বিনিময়ে খেলোয়াড়দের ভূমিকায় কাজ করেছেন তারা। একই খেলোয়াড়রা পালাক্রমে চেন্নাই সুপার কিংস, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স এবং গুজরাট টাইটানসের জার্সি পরে অংশ নেয়। আসলে কেবল অভিনয়ই করেছেন। আর তাদের এ অভিনয় স্ট্রিমিং করা হয় ইউটিউবে। যা দেখে বাজী ধরেন রাশিয়ানরা।

আসরটিকে কিছুটা বাস্তব করে তুলতে উচ্চ রেজোলিউশন ক্যামেরা স্থাপন করে লাইভ স্ট্রিমিং স্ক্রিনে স্কোর প্রদর্শনের জন্য কম্পিউটার জেনারেটেড গ্রাফিক্স ব্যবহার করে তারা। ইন্টারনেট থেকে ক্রাউড নয়েজ সাউন্ড ইফেক্ট ডাউনলোড করে ব্যবহার করা হয়। এমনকি একজনকে ভাড়া করা হয় যিনি কি-না ভারতীয় ধারাভাষ্যকারের নকল করার ক্ষমতা রাখেন।

একটি খামারে হ্যালোজেন বাতি দিয়ে আয়োজন করা হয় এ আসর। যে কারণে ক্যামেরাম্যানদের নির্দেশ দেওয়া হয় যেন পুরো মাঠ না দেখানো নয়, তার চেয়ে খেলোয়াড় ও উইকেটে জুম করে রাখা হয় ক্যামেরা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামের মাধ্যমে বাজি ধরতে শুরু করেন রাশিয়ানরা। মাঠে ওয়াকি-টকি ব্যবহার করে উইকেটে ভুয়া আম্পায়ারকে বাহির থেকে সতর্ক করে দিতেন মূল হোতা শোয়েব দাবদা এবং তার প্রতিনিধি দল। বোলার এবং ব্যাটসম্যানকে ছক্কা, চার মারতে কিংবা আউট হওয়ার ইঙ্গিত দিতেন তারাই।

এ প্রসঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তা ভাবেশ রাঠোড় বলেছেন, 'খামারটি ভাড়া করে সেখানে হ্যালোজেন বাতি লাগানো হয়। ২১ জন খামার শ্রমিককে ম্যাচপ্রতি ৪০০ রুপির বিনিময়ে ভাড়া করা হয়। টেলিগ্রামের মাধ্যমে বাজি ধরে আম্পায়ারকে ওয়াকিটকির মাধ্যমে চার-ছয়ের সংকেত দেওয়া হতো। নির্দেশনা অনুযায়ী এরপর বোলার ধীরগতিতে বল করতেন, যাতে চার বা ছয় মারতেন ব্যাটসম্যানরা।'

এর ঘটনায় যুক্ত থাকায় এখন পর্যন্ত মোট ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। রাশিয়ান জুয়াড়িদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৩ লাখ রুপি। তবে তাৎক্ষণিকভাবে এ নিয়ে মন্তব্য করতে রাজী হয়নি ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus promises election on time

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus yesterday reaffirmed his commitment to holding the 13th national election in the first half of February next year.

7h ago