লেজের ব্যাটসম্যান দিপক জিতালেন ভারতকে
প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যান তখন সবাই সাজঘরে। ক্রুনাল পান্ডিয়া যখন আউট হন, লেজ বেরিয়ে যায় ভারতের। জয় তখনও ৮৩ রান দূরে। হাতে মাত্র ৩টি উইকেট। জয়ের স্বপ্নে বিভোর শ্রীলঙ্কা। কিন্তু তখনই দলের ত্রাতা রূপে আবির্ভূত হন দিপক চাহার। বোলার হিসেবে পরিচিত এ খেলোয়াড় রীতিমতো প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যান বনে যান। খেলেন অবিশ্বাস্য এক ইনিংস। সঙ্গী হিসেবে পান ভুবনেশ্বর কুমারকে। তাতেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় সিরিজ নিশ্চিত করে শেখর ধাওয়ানের দল।
মঙ্গলবার কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কাকে ৩ উইকেটে হারিয়েছে ভারত। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৭৫ রান করে শ্রীলঙ্কা। জবাবে ৫ বল বাকি থাকতেই ৭ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় সফরকারী দলটি। তিন ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ভারত।
৩৬তম ওভারের প্রথম বলেই ক্রুনালকে আউট করে শ্রীলঙ্কা। পরের দুই ওভার কিছুটা ব্যাট করার সুযোগ পান ভুবনেশ্বর। এর পরের ৮ ওভারে মাত্র ১০তি বল খেলার সুযোগ মিলে তার। বাকিটা এক প্রান্ত আগলে ব্যাট করতে থাকেন ওই দিপক। পাশাপাশি রানের গতিও সচল রাখেন। তাতেই জয়ের ভিত পেয়ে যায় দলটির। ততোক্ষণে ভুবনেশ্বরের আত্মবিশ্বাসও তুঙ্গে।
অথচ লক্ষ্য তাড়ায় শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে ভারত। ফলে ৬৫ রানেই দুই ওপেনারসহ ইশান কিশানকেও হারায় দলটি। এরপর চতুর্থ উইকেটে মানিশ পান্ডের সঙ্গে দলের হাল ধরেন সূর্যকুমার যাদব। গড়েন ৫০ রানের জুটি। এ জুটি ভাঙার পর খালি হাতে বিদায় নেন হার্দিক পান্ডিয়াও। ফলে কিছুটা চাপে পড়ে দলটি।
এরপর ক্রুনাল পান্ডিয়াকে নিয়ে দলের হাল ধরেন সূর্যকুমার। ৪৪ রানের জুটিতে চাপ সামলে নেওয়ার চেষ্টা করেন এ দুই ব্যাটসম্যান। কিন্তু এ দুই ব্যাটসম্যান আউট হলে কাজের কাজটা ভুবনেশ্বরকে নিয়ে শেষ করেন দিপক। অবিচ্ছিন্ন ৮৪ রানের জুটি গড়ে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন এ দুই ব্যাটসম্যান।
অসাধারণ ব্যাটিং করে এদিন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম হাফসেঞ্চুরি তুলে ৬৯ রানে অপরাজিত থাকেন দিপক। অথচ লিস্ট এ ক্যারিয়ারেই মোটে তার একটি হাফসেঞ্চুরি ছিল। ৮২ বলে ৭টি ভার ও ১টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। ৪৪ বলে ৬টি চারের সাহায্যে ৫৩ রান করেন সূর্যকুমার। ২৮ বলে ২টি চারের ১৯ রানের কার্যকরী এক ইনিংস খেলেন ভুবনেশ্বর।
শ্রীলঙ্কার পক্ষে ৩৭ রানের খরচায় ৩টি উইকেট পান হাসারাঙ্কা।
এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামা শ্রীলঙ্কার শুরুটা দারুণ। ৭৭ রানের ওপেনিং জুটি গড়েন দুই ওপেনার আভিস্কা ফের্নান্ডো ও মিনদ ভানুকা। তবে ১৪তম ওভারে টানা দুই বলে দুটি উইকেট তুলে ভারতকে ম্যাচে ফেরান যুজবেদ্র চাহাল। এরপর ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার সঙ্গে ৪৭ রানের জুটি গড়ে আউট হন আভিস্কা। স্কোরবোর্ডে আর ১০ রান যোগ করতে ধনাঞ্জয়াও ফিরে গেলে কিছুটা চাপে পড়ে দলটি।
এরপর অধিনায়ক দাসুন শানাকাকে নিয়ে দলের হাল ধরেন চারিথ আসালাঙ্কা। ৩৮ রানের জুটি গড়ে চাপ কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চালান এ দুই ব্যাটসম্যান। তবে ২২ রানের ব্যবধানে এ দুই ব্যাটসম্যান ফিরে গেলে তাদের বড় সংগ্রহের স্বপ্নে কিছুটা ধাক্কা লাগে। তবে চামিকা কারুনারাত্নের সঙ্গে ৫০ রানের জুটিতে দলকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেন আসালাঙ্কা। শেষ পর্যন্ত পৌনে তিনশ স্পর্শ করে দলীয় সংগ্রহ।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৫ রানের ইনিংস খেলেন আসালাঙ্কা। ৬৮ বলে ৬টি চারের সাহায্যে নিজের ইনিংস সাজান এ ব্যাটসম্যান। হাফসেঞ্চুরি স্পর্শ করেন আভিস্কাও। ৭১ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫০ রান করেন তিনি। ৩৩ বলে ৫টি চারের সাহায্যে ৪৪ রান করে অপরাজিত থাকেন চামিকা। এছাড়া ভানুকা ৩৬ ও ধনাঞ্জয়া ৩২ রান করেন।
ভারতের পক্ষে ৩টি করে উইকেট পান ভুবনেশ্বর কুমার ও চাহাল। ২টি শিকার দিপক চাহারের।
Comments