শফিকের বীরত্বে জিতল পাকিস্তান

বলা হয়ে থাকে ভাগ্যটা সাহসীদের সঙ্গেই থাকে। ঠিক যেন তার প্রতিচ্ছবিই দেখা গেল গল টেস্টে। বীরের মতো লড়ে পাকিস্তানকে অসাধারণ এক জয় এনে দিলেন আবদুল্লাহ শফিক। অথচ শেষ দিনেই দুটি জীবন পেয়েছেন তিনি। আর তৃতীয় দিন শেষে ম্যাচটাও হেলে ছিল শ্রীলঙ্কার পক্ষে।

বুধবার গল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম টেস্টে শ্রীলঙ্কাকে ৪ উইকেটে হারিয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল পাকিস্তান। শ্রীলঙ্কার দেওয়া ৩৪২ রানের লক্ষ্য তাড়ায় আগের দিনই ৩ উইকেটে ২২২ রান করেছিল দলটি। এ নিয়ে তৃতীয়বার তিনশর বেশি রান তাড়া করে লঙ্কানদের হারাল পাকিস্তান।

ফলাফলটা হয়তো ভিন্নও হতে পারতো। হয়তো। কারণ জয় থেকে ১৯ রান দূরে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার বলে আকাশে বল তুলে দিয়েছিলেন সেট ব্যাটার শফিক। কিন্তু কাসুন রাজিথা সহজ ক্যাচ দেন ফেলে। তখনই হার নিশ্চিত হয়ে যায় লঙ্কানদের। মোহাম্মদ নাওয়াজ ব্যাট চালাতে জানলেও শফিকই ছিলেন পাকিস্তানের শেষ বিশেষজ্ঞ ব্যাটার।

তবে শেষ পর্যন্ত দলকে জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছেন শফিক। ওপেনিংয়ে নেমে টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে খেলেন হার না মানা ১৫৮ রানের ইনিংস। বল মোকাবেলা করেন ৪০৮টি। তাতে বাউন্ডারি মেরেছেন মাত্র ৭টি। ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় এ ধৈর্যশীল ইনিংসটি সাজান এ ওপেনার।

লক্ষ্যটা বিশাল হলেও প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা বলেই হয়তো আত্মবিশ্বাসী ছিল পাকিস্তান। এ ম্যাচের আগে তিনশ রানের বেশি লক্ষ্য তাড়া জয়ের রেকর্ড ছিল তিনটি। যার দুটিই ছিল এই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। টেস্টে নিজেদের ইতিহাসের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ডটাও লঙ্কানদের বিপক্ষেই। ২০১৫ সালে পাল্লেকেলেতে ৩৭৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিতেছিল পাকিস্তান জিতেছিল ৭ উইকেটে।

জয়ের ভিতটা অবশ্য আগের দিনই করে রেখেছিল পাকিস্তান। শেষ দিনে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১২০ রানের। হাতে ছিল ৭ উইকেট। তার উপর উইকেটে ছিলেন সেট ব্যাটার শফিক। দিনের শুরুতে মোহাম্মদ রিজওয়ানের সঙ্গে এ ব্যাটারের দৃঢ়তায় সূচনাটাও হয় ভালো। এদিন ৫৪ রান যোগ করেন এ দুই ব্যাটার। সবমিলিয়ে চতুর্থ উইকেটে আসে ৭১ রানের জুটি। এ জুটি ভাঙেন দারুণ ছন্দে থাকা প্রভাত জয়সুরিয়া। ব্যক্তিগত ৪০ রানে রিজওয়ানকে ফেলেন এলবিডাব্লিউর ফাঁদে।

এরপর আঘা সালমানকে নিয়ে দলের হাল ধরেছিলেন শফিক। স্কোরবোর্ডে ২২ রানও যোগ করেন তারা। কিন্তু এরপর আবার আঘাত হানেন প্রভাত। এবার ফেরান সালমানকে। উইকেটরক্ষক নিরোশান ডিকভেলার তালুবন্দি করে এ ব্যাটারকে ফেরান এ বাঁহাতি স্পিনার। তাতে লড়াইয়ে ফেরে লঙ্কানরা।

লড়াইটা আরও জমিয়ে দেন ধনাঞ্জয়া। লাঞ্চ বিরতি থেকেই ফিরেই হাসান আলীকে বিদায় করেন। দ্রুত রান তুলতে চেষ্টা করেছিলেন এ ব্যাটার। ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে স্কয়ার লেগে ধরা পড়েন মহেশ ঠিকসানার হাতে। এরপরও সুযোগ তৈরি করেছিলেন ধনাঞ্জয়া। কিন্তু সে সুযোগ লুফে নিতে না পারায় হার মেনেই মাঠ ছাড়তে হয় স্বাগতিকদের। মোহাম্মদ নাওয়াজের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন ৪১ রানের জুটিতে বাকি কাজ শেষ করেন শফিক। নাওয়াজ খেলেন কার্যকরী ১৯ রানের ইনিংস।

Comments

The Daily Star  | English

Over 14 million people could die from US foreign aid cuts: study

USAID had provided over 40 percent of global humanitarian funding until Trump returned to White House

32m ago