হরেক রঙের ঈদ

সারা বছর হোম ও অ্যাওয়ে ট্যুরের সঙ্গে থাকে গ্লোবাল ইভেন্টগুলোও। তাই কাছের মানুষ এবং প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করা বেশ বিরল ঘটনাই টাইগারদের জন্য। তার উপর এ বছরের সূচি তো বেশ ঠাসা। সেখানে এবার ঈদের ছুটি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেই উপভোগ করবেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা।

এমনকি ঘরের মাঠে ভীতিকর প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সিরিজের মাঝে অন্যান্য পেশাদার ক্রীড়াবিদদের মতো ক্রিকেটারদের জন্যও তাদের ঈদের আমেজ অনেকটাই বদলে গেছে।

বাড়ির বাইরে ঈদ উদযাপন করা অত্যন্ত কঠিন বলেই মনে করেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক এবং বর্তমান নির্বাচক হাবিবুল বাশার। বিশেষকরে মেনুতে কোনও বিশেষ খাবারের অনুপস্থিতি তার যন্ত্রণাকে বাড়িয়ে তোলে।

'ঈদ মানে পরিবার এবং বন্ধুদের সাথে সময় কাটানো, নতুন জামাকাপড় পরা এবং সেই দিন সব ধরণের বিশেষ খাবার খাওয়া। ছোটবেলার ঈদ উদযাপন অন্যরকম ছিল, কিন্তু বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি বদলে গেছে। আমার খেলার দিনগুলোতে যখন বিদেশে সফরে থাকতাম তখন ঈদ উদযাপন করার সুযোগ পাইনি। আজকালও একই ঘটনা ঘটছে, এখন যেহেতু আমি একজন নির্বাচক এবং প্রায়ই দলের সঙ্গে সফর করি,' ডেইলি স্টারকে বলেন বাশার।

২০১৯ সালে আইসিসি বিশ্বকাপ অভিযানের সময় নির্বাচক হিসাবে বাংলাদেশ দলের সঙ্গে সফরের সময় ঈদের একটি মজার স্মৃতিও ভাগ করেন ৪৯ বছর বয়সী এ সাবেক ক্রিকেটার।

'ইংল্যান্ডে ২০১৯ বিশ্বকাপের সময়ে দলের ঈদের নামাজ পড়ার কথা ছিল। মিডিয়া কর্মীরা জানতে আগ্রহী ছিল দল কোন মসজিদে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা তা প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক ছিলাম। ভাগ্যক্রমে লন্ডনে চারটি পৃথক স্থানে চারটি ঈদ জামাত ছিল এবং আমরা সফলভাবে মিডিয়াকে ব্লাফ করেছিলাম। এটা একটা লুকোচুরি খেলার মতো ছিল, যেটা আমরা শেষ পর্যন্ত জিতেছিলাম,' স্মরণ করে বলেন বাশার।

যদিও সময়টা হয়তো সবারই বদলেছে, কিন্তু পেসার তাসকিন আহমেদের জন্য একটা জিনিস এখনও একই রকম থেকেছে তা হলো ঈদের সালামি সংগ্রহ করা।

'আমরা সবাই ঈদের দিন বড়দের কাছ থেকে সালামি পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতাম,' বলেন তাসকিন। 'উৎসবের মেজাজ এবং ঈদের আনন্দ আমাদের সবার কাছেই বিশেষ কিছু। আমি এখন একজন বাবা তবুও আমি আমার বাবা-মায়ের কাছ থেকে ঈদের সালামি নেওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করি না।'

যদিও তাসকিন এই ঈদটি তার পরিবার এবং বন্ধুদের সাথে কাটাতে পেরে খুশি, তবে ২৭ বছর বয়সী এ পেসার মনে করেন, বাড়ি থেকে দূরে এবং জাতীয় দলের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করাটাও খারাপ নয়।

'গত ঈদে আমরা জিম্বাবুয়েতে ছিলাম এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ভাই আমাদের হোটেলে ঈদের নামাজে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সতীর্থদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করা একটি অন্যরকম অনুভূতি। আমার দল আমার দ্বিতীয় পরিবার এবং আমাদের সবারই বাড়ি থেকে দূরে ঈদ উদযাপন করার মধুর স্মৃতি রয়েছে,' বলেন তাসকিন।

অন্যদিকে ঈদের জন্য নতুন জামা কেনার স্মৃতি এবং সেমাইয়ের প্রতি তার ভালোবাসার কথা বলেছেন বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম।

'আগে আমরা যেভাবে ঈদ উদযাপন করতাম তার তুলনায় আজকাল অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আমার মনে আছে, ছোটবেলায় আমি নতুন জামাকাপড় দেখে মুগ্ধ হতাম। আমি আমার নতুন জামা কাউকে দেখাতাম না এবং শুধুমাত্র ঈদের দিন বের করতাম। এমনকি সেদিন প্রায় প্রতি ঘণ্টায় জামাকাপড় বদল করতাম। সেই দিনগুলোর কথা মনে পড়লে হাসি পায়,' বলেন তাইজুল। 'আমি ঈদের দিন সেমাই খেতে ভালোবাসি এবং এটি এমন একটি জিনিস দেশে থাকি কিংবা বিদেশে যা আমি কখনোই মিস করি না।'

Comments

The Daily Star  | English

Why landscape-based knowledge is critical for Bangladesh

How will we build the country without landscaping knowledge?

14h ago