উরুগুয়েকে হারিয়ে জয়ের ধারায় আর্জেন্টিনা

প্যারাগুয়ের বিপক্ষে তাই সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি আর্জেন্টিনা। তবে এদিন উরুগুয়ের বিপক্ষে সুযোগ তেমন হাতছাড়া করেনি দলটি। ম্যাচের শুরু থেকেই অসাধারণ খেললেন অধিনায়ক লিওনেল মেসি। গোল করলেন। সতীর্থের গোলের উৎসও ছিলেন তিনি। ফলে দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন উরুগুয়েকে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েই জয়ের ধারায় ফিরেছে আর্জেন্টিনা।
এল মনুমেন্তালে কাতার বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচে উরুগুয়ের বিপক্ষে ৩-০ গোলের ব্যবধানে জিতেছে আর্জেন্টিনা। মেসি ছাড়া দলের হয়ে গোল করেছেন রদ্রিগো দি পল ও লাউতারো মার্তিনেজ।
ঘরের মাঠে এদিন মাঝমাঠের প্রাধান্য রেখেই খেলতে থাকে মেসিরা। ৬২ শতাংশ সময় বল দখলে ছিল দলটির। শট নেয় ২৩টি। যার ১০টি ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে ১০ শট নিয়ে ছয়টি লক্ষ্যে রাখে উরুগুয়ে। দুই দলের গোলরক্ষকই বেশ কিছু দারুণ সেভ করেছেন।
তবে গোল করার মতো প্রথম সুযোগটা পেয়েছিল উরুগুয়েই। আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডারদের ভুল বল পেয়ে ডি-বক্সের ঢুকে ডান প্রান্ত থেকে দারুণ এক কোণাকোণি শট নিয়েছিলেন লুইস সুয়ারেজ। দারুণ দক্ষতায় সে শট ঠেকান আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেজ। অষ্টম মিনিটে ছোট কর্নার থেকে বল পেয়ে জিওভানি লো সেলসোর শট অল্পের জন্য লক্ষ্যে থাকেনি।
২১তম মিনিটে আবার আর্জেন্টিনার ত্রাতা গোলরক্ষক মার্তিনেজ। উরুগুয়েকে এগিয়ে দেওয়ার দারুণ এক সুযোগ পেয়েছিলেন সুয়ারেজ। নাহিতান নানদেসের ক্রস থেকে মাতিয়াস ভিনার ভলি থেকে ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তার হাফ ভলি দারুণ দক্ষতায় ঠেকিয়ে দেন আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক। পাঁচ মিনিট পর দি পলের ক্রস থেকে লাউতারো ঠিকভাবে পা ছোঁয়াতে পারলে এগিয়ে যেতে পারতো স্বাগতিকরা। তার স্লাইড একটুর জন্য লক্ষ্যে থাকেনি।
২৮তম মিনিটে দুরূহ কোণ থেকে নেওয়া সুয়ারেজের শট বারপোস্টে লেগে ফিরে আসে। পাঁচ মিনিট পর দুর্ভাগা আর্জেন্টিনাও। দি পলের বাড়ানো বলে একেবারে ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন লো সেলসো। গোলরক্ষক মুসলেরাকে কাটিয়ে সামনে এগিয়ে শট নেন। কিন্তু ক্রসবারে লেগে গোললাইনে পড়ে ফিরে আসলে নষ্ট হয় সেই সুবর্ণ সুযোগ।
৩৬তম মিনিটে নেওয়া মেসির শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এর দুই মিনিট পর ভাগ্য সঙ্গ দেয় আর্জেন্টিনাকে। সতীর্থ লাউতারোর উদ্দেশ্যে প্রায় ৩৫ গজ দূর থেকে থ্রু পাস বাড়িয়েছিলেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। সে ধরতে পেছন থেকে ছুটে গিয়েছিলেন নিকোলাস গঞ্জালেজ। কিন্তু বলের নাগাল পাননি। অন্যদিকে বল ধরতে এগিয়ে এসে ফ্লাইট মিস করলেন গোলরক্ষক ফের্নান্দো মুসলেরাও। সবাইকে ফাঁকি দিয়ে জালে জড়ায় বল। আন্তর্জাতিক ফুটবলে এটি মেসির ৮০তম গোল।
৪১তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করতে পারতো দলটি। মেসির ক্রস ফাঁকায় পেয়ে গোলরক্ষক বরাবর শট নেন নিয়ে সুযোগ নষ্ট করেন লো সেলসো। তিন মিনিট পর ব্যবধান বাড়ায় দলটি। মেসির বাড়ানো এক খেলোয়াড়ের গায়ে লাগলে পেয়ে যান লাউতারো। তবে ঠিক মতো শট নিতে পারেননি। আলগা বল পেয়ে যান দি পল। তা জালে পাঠাতে কোনো ভুল হয়নি এ অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ মিডফিল্ডারের।
৪৭তম মিনিটে ফাঁকায় হেড দেওয়ার সুযোগ পেয়েও ঠিকভাবে নিতে পারেননি নিকোলাস তাগলিয়াফিকো। ৬২তম মিনিটে ব্যবধান আরও বাড়ায় স্বাগতিকরা। মেসির বাড়ানো বল পেয়ে ডি বক্সে ক্রস করেন দি পল। একেবারে ফাঁকায় বল পেয়ে আলতো টোকায় তা জালে পাঠাতে কোনো ভুল হয়নি লাউতারোর। দুই মিনিট পর ব্যবধান আরও বড় করতে পারতো দলটি। লো সোলসোর পাস থেকে একেবারে ফাঁকায় থেকে নেওয়া হোয়াকিন কোররেয়ার শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান মুসলেরা।
৭৩তম মিনিটে মেসির বাড়ানো বলে গোলরক্ষককে একা পেয়ে গিয়েছিল দি মারিয়া। তবে তার চিপ ঝাঁপিয়ে ঠেকান উরুগুয়ে গোলরক্ষক। সাত মিনিট পর মেসির শট বারপোস্ট ঘেঁষে বাইরে চলে যায়।ম্যাচের শেষ দিকে দুই দফা আর্জেন্টিনার প্রচেষ্টা রুখে দেন উরুগুয়ের গোলরক্ষক। দি মারিয়ার শট ঝাঁপিয়ে ঠেকানোর পর মেসির শটও ঠেকিয়ে দেন তিনি।
এ জয়ে ১০ ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় রয়েছে আর্জেন্টিনা। এক ম্যাচ বেশি খেলা উরুগুয়ে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে আছে চতুর্থ স্থানে। ১০ ম্যাচে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে ব্রাজিল।
Comments