এমবাপের শেষ মুহূর্তের গোলে রিয়ালকে হারাল পিএসজি

প্যারিস থেকে মূল্যবান এক পয়েন্ট পাওয়ার হাসি নিয়ে মাঠ ছাড়া যেন মনে হচ্ছিল সময়ের ব্যপার। জমাট রক্ষণে পিএসজির একের পর এক আক্রমণ নস্যাৎ করে দিচ্ছিলেন রিয়াল মাদ্রিদ ডিফেন্ডাররা। কিন্তু ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে সব সমীকরণ বদলে দিলেন কিলিয়ান এমবাপে। তার দুর্দান্ত এক গোলে জয় তুলে নিল পিএসজিই।
পার্ক দি প্রিন্সেসে মঙ্গলবার রাতে রিয়াল মাদ্রিদকে ১-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়েছে পিএসজি।
তবে ব্যবধানটা বড় হতে পারতো আরও। অসাধারণ কিছু সেভ করেছেন রিয়াল মাদ্রিদ গোলরক্ষক থিবো কোর্তুয়া। এমনকি লিওনেল মেসির পেনাল্টিও ঠেকান তিনি। তাতে কাজটা কঠিন হয়ে গিয়েছিল স্বাগতিকদের। তবে ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দেন ওই এমবাপেই।
ঘরের মাঠে এদিন প্রাধান্য বিস্তার করেই খেলে পিএসজি। ৫৭ শতাংশ সময় বল ছিল তাদের দখলে। বলের দখল যেমন তেমন ম্যাচে পিএসজি শিবিরে তেমন কোনো ভীতিই ছড়াতে পারেনি রিয়াল। মাত্র ৩টি শট নিয়ে কোনোটাই লক্ষ্যে রাখতে পারেনি দলটি। অন্যদকে পিএসজির শট নেয় ২১টি। যার ৮টি ছিল লক্ষ্যে।
প্রথমার্ধে মাত্র একটি শট নিতে পারে রিয়াল। তাও সে অর্ধের একেবারে শেষ মুহূর্তে কর্নার থেকে কাসেমিরো লক্ষ্যভ্রষ্ট হেড নেন। ম্যাচের পঞ্চম মিনিটে পিছিয়েও পড়তে পারতো তারা। দুই খেলোয়াড়কে কাটিয়ে এমবাপের কাটব্যাক থেকে নেওয়া আনহেল দি মারিয়ার শট লক্ষ্যেই থাকেনি।
১৮তম মিনিটে গোল করার দারুণ সুযোগ মিলে স্বাগতিকদের। লিওনেল মেসির অসাধারণ এক থ্রু পাসে গোলরক্ষককে একা পেয়ে গিয়েছিলেন এমবাপে। তবে জোরালো শট নিতে পারেননি। তার দুর্বল শট কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান গোলরক্ষক থিবো কোর্তুয়া। সেই কর্নার থেকে মার্কুইনহোসের হেড রিয়াল ডিফেন্ডার দাভিদ আলাবার গায়ে লেগে জালের দিকেই যাচ্ছিল। ঝাঁপিয়ে লাইফ নিয়ে কোনো বিপদ হতে দেননি রিয়াল গোলরক্ষক।
৩১তম মিনিটে দুই খেলোয়াড়কে কাটিয়ে মেসির নেওয়ার শট লক্ষ্যে থাকলে বিপদ হতে পারতো রিয়ালের। ৫০ অবিশ্বাস্য এক সেভ করে রিয়াল গোলরক্ষক কোর্তুয়া। ভেরাত্তির কাছ থেকে বল পেয়ে এমবাপেকে পাস দেন আশরাফ হাকিমি। ফাঁকায় থেকে দারুণ শটও নিয়েছিলেন এ ফরাসি তরুণ। কিন্তু ঝাঁপিয়ে তার শট ঠেকান কোর্তুয়া।
পরের তিন মিনিটে রিয়াল শিবিরে প্রচণ্ড চাপ সৃষ্ট করে স্বাগতিকরা। তিনটি শট নেয় দলটি। মেসির একটি শট লক্ষ্যে না থাকলেও অপর শটটি দারুণ দক্ষতায় ঠেকান রিয়াল গোলরক্ষক। দি মারিয়া অবশ্য দুরূহ কোণ থেকে মারেন বাইরে। ৫৪তম মিনিটে টনি ক্রুসের দূরপাল্লার শট বারপোস্টের উপর দিয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তিন মিনিট পর এমবাপের দূরপাল্লার প্রচেষ্টা সহজেই রুখে দেন কোর্তুয়া।
৬১তম মিনিটে ডি-বক্সে এমবাপে ফাউল করেন দানি কারবাহাল। কিন্তু তার সদ্ব্যবহার করতে পারেননি মেসি। তার স্পট কিক ঠেকান রিয়াল গোলরক্ষক। ৭৬তম মিনিটে মেসির ক্রসে পা ছোঁয়াতে পারলেই গোল পেতে পারতেন এমবাপে। পরের মিনিটে এ ফরাসি তরুণের শট অল্পের জন্য লক্ষ্যে থাকেনি।
৭৩তম মিনিটে দি মারিয়ার জায়গায় নেইমারকে মাঠে নামান পিএসজি কোচ মাউরিসিও পচেত্তিনো। দুই মাসেরও বেশি সময় পর মাঠে ফিরে পিএসজির আক্রমণের ধারা বাড়ান। ৭৫তম মিনিটে ফ্রিকিক থেকে মেসির শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
৮৭তম মেসির বাড়ানো বলে ফাঁকায় পেয়ে গিয়েছিলেন নেইমার। দুরূহ কোণ থেকে গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে ভালো শটও নিয়েছিলেন। তবে অল্পের জন্য লক্ষ্যে থাকেনি। ম্যাচের যোগ করা সময়ে শেষ মুহূর্তে নেইমারের ব্যাকহিল থেকে বল পেয়ে দুই খেলোয়াড়কে কাটিয়ে দারুণ এক কোণাকোণি শটে বল জালে পাঠান এমবাপে।
Comments