টাইব্রেকারে কলম্বিয়ার স্বপ্ন ভেঙ্গে আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে নিলেন এমিলিয়ানো

খেলার শুরুতেই গোল করে এগিয়ে গিয়েছিল আর্জেন্টিনা। দারুণ খেলতে থাকা কলম্বিয়া  বিরতির পর ফেরে সমতায়। দুদল এরপর একাধিক সুযোগ নষ্ট করলে খেলা যায় টাইব্রেকারে। সেখানে তিনটি শট ঠেকিয়ে আর্জেন্টিনার নায়ক গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ।

বুধবার ব্রাসিলিয়ায় নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১ গোলে সমতায় ছিল। পরে টাইব্রেকারে কলম্বিয়াকে ৩-২ গোলে হারিয়ে কোপা আমেরিকার ফাইনালে উঠেছে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা। ১১ জুলাই চূড়ান্ত লড়াইয়ে তাদের প্রতিপক্ষ বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল।

টাইব্রেকারের স্নায়ুপরীক্ষায়  কলম্বিয়ার হয়ে প্রথম শটে গোল পান কুয়াদ্রাদো, মেসি দলের হয়ে প্রথম শটে কোন ভুল করেননি।  কলম্বিয়ার হয়ে দ্বিতীয় শট মিস করে ফেলেন সানচেজ। আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক এমিলিয়ানো বা দিকে ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন তার শট।  আর্জেন্টিনার হয়ে ডে পল পরেরটি মারেন বাইরে।

আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক খেল দেখান পরের শটেও। ইয়েরি মিনার শটও ঠেকিয় দেন তিনি। আর্জেন্টিনার হয়ে লিয়ান্দ্রো পেরেজর তৃতীয় শটে ভুল করেননি। মিগুয়েল বরা গোল করে টিকিয়ে রাখেন কলম্বিয়ার আশা। লাউতারো মার্টিনেজ গোল পেয়ে এগিয়ে থাকে আর্জেন্টিনা। পরেরটিই ফয়সালা। এডুইন কার্ডোনার দুর্বল শটও ঠেকাতে কোন সমস্যা হয়নি এমিলিয়ানোর। উৎসবে মাতে আর্জেন্টিনা।

এদিন খেলার শুরুতেই আক্রমণে যায় আর্জেন্টিনা। গোল পেতেও দেরি হয়নি। সপ্তম মিনিটে লিওনেল মেসির ক্রস ধরে বল জালে জড়িয়ে দেন লাউতারো মার্টিনেজ।

দুই মিনিট পরই সমতায় ফিরতে পারত কলম্বিয়া। গিয়ের্মো কুয়াদ্রাদো বক্সের কাছাকাছি বল পেয়ে দারুণ শট নিয়েছিলেন। বুক দিয়ে কোনমতে তা ঠেকিয়ে দেন আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ।

পরের কয়েক মিনিট আক্রমণে চাপ বাড়ায় কলম্বিয়া। মাঠের নিয়ন্ত্রণও চলে যায় তাদের কাছে। আর্জেন্টিনা অবশ্য প্রতি আক্রমণ থেকে অল্প বিস্তর সুযোগ তৈরি করছিল।

৩৬ মিনিটে সবচেয়ে বড় সুযোগ হাতছাড়া হয় কলম্বিয়ার। ৩৬ মিনিটে রাফায়েল বারোর উদ্দেশ্যে বক্সে এসেছিল ক্রস, তা কর্নারের বিনিময়ে বাঁচান নিকোলাই ওটামেন্ডি। কুয়াদ্রাদোর নেওয়া কর্নার খুঁজে পেয়েছিল ইয়েরি মিনারকে। তার নেওয়া হেড গোলরক্ষককে ফাঁকি দিলেও গিয়ে লাগে ক্রসবারে!

৪৪ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করতে পারত আর্জেন্টিনা। মেসির কর্নার থেকে ভালো উচ্চতায় হেড করার জন্য পেয়েছিলেন নিকোলাস গঞ্জালেস। কলম্বিয়ান গোলরক্ষক আসপিনার হাত ছুঁয়ে তা যায় বাইরে।

বিরতির পরই সুযোগ এসেছিল কলম্বিয়ার। বক্সের সামান্য বাইরে থেকে বল পেয়ে কাজে লাগাতে পারেননি লুইস ডিয়াজ। তার দুর্বল শট যায় আর্জেন্টিনা গোলরক্ষকের গ্লাভসে।

৫১ মিনিটে আবার সুযোগ পেয়েছিল কলম্বিয়া। বক্সের ভেতরে ঢুকেও ভারসাম্য রাখতে পারেননি ডিয়াজ। জটলার মধ্য থেকে যাওয়া বল ঠেকান গোলরক্ষক এমিলিয়ানো। ফিরতি বলে কোয়াদ্রেদোর শট আর্জেন্টিনার ডিফেন্ডারের শরীরে লেগে ফেরে। হাতে লেগেছে কিনা সেজন্য পেনাল্টির আবেদন করেও ব্যর্থ হয় কলম্বিয়া।

৬০ মিনিটে বদলি নামা মিগুয়েল বরহা মারেন বাইরে। পরের মিনিটেই দারুণ মুহূর্ত কলম্বিয়ার। এডউইন কার্ডানোর বুদ্ধিদীপ্ত লম্বা পাস ধরে ক্ষিপ্র গতিতে বল নিয়ে ছুটে আসেন ডিয়াস। বা দিকে বক্সে ঢুকে দুরূহ কোন থেকে নেওয়া শটে আর্জেন্টিনার গোলরক্ষককে পরাস্ত করে দলকে সমতায় ফেরান তিনি।

৬৮ মিনিটে কোয়াদ্রেদোর  ফ্রি কিক থেকে নেওয়া শট দুর্বল চেষ্টায় নষ্ট করেন ডেভিনসন সানচেজ। আরেক গোল দিয়ে ব্যবধান বাড়ানোর কলম্বিয়ার চাপ ব্যাহত হয় তাতে।

দুমিনিট পর  প্রতি আক্রমণ থেকে বল নিয়ে আনহেল দি মারিয়ার দুর্বল শট যায় কলম্বিয়ান কিপার আসপিনার হাতে।

৭২ মিনিটে অবিশ্বাস্য সুযোগ হাতছাড়া হয় আর্জেন্টিনার। ডিফেন্সের ভুলে ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন ডি মারিয়া। আসপিনা বেরিয়ে চলে এসে তা ঠেকানোর চেষ্টা করেও পারেননি। ডি মারিয়ার কাছ থেকে বল পেয়ে সহজ শট গোল করার সুযোগ হারান লাউতারো। তার শট গোললাইন থেকে ঠেকিয়ে দেন মিনা। ফিরতি বল বাইরে মারেন ডি মারিয়া।

৮১ মিনিটে বক্সে ঢুকে মেসির নেওয়া শট লাগে ক্রস বারে। ৯০ মিনিটে ফ্রি কিক থেকে কিছু করতে পারেননি মেসি। ফ্রি কিক থেকে সুযোগ তৈরি করতে পারেননি কার্ডানোও। অতিরিক্ত সময় না থাকায় খেলা যায় টাইব্রেকারে। সেখানে চওড়া হাসি স্কালোনির শিষ্যদের।

Comments

The Daily Star  | English

People cautioned of travelling to India, affected countries as Covid spreads

DGHS has also instructed to enhance health screening and surveillance measures at all land, river, and airports

7h ago