মেসির নৈপুণ্যে ইকুয়েডরকে উড়িয়ে সেমিতে আর্জেন্টিনা

শুরুর দিকের সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করার পর তেতে উঠলেন লিওনেল মেসি। সতীর্থদের দিয়ে করালেন দুই গোল। শেষ বাঁশি বাজার কিছুক্ষণ আগে অসাধারণ ফ্রি-কিকে নিজেও খুঁজে নিলেন জালের ঠিকানা। তার আরেকটি চোখ ধাঁধানো নৈপুণ্যে ইকুয়েডরকে উড়িয়ে কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে উঠল আর্জেন্টিনা।

রবিবার গোইয়ানিয়ার অলিম্পিকো স্টেডিয়ামে আসরের কোয়ার্টার ফাইনালে ৩-০ গোলে জিতেছে লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা। রদ্রিগো দে পল প্রথমার্ধে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধের শেষদিকে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন লাউতারো মার্তিনেজ। এরপর যোগ করা সময়ে দলের পক্ষে তৃতীয় গোলটি করেন অধিনায়ক মেসি।

বড় জয় পেলেও আর্জেন্টিনার জন্য ম্যাচটা মোটেও সহজ হয়নি। ইকুয়েডর ভালোভাবেই টিকে ছিল লড়াইয়ে। তবে লাউতারোর গোলের পর তাদের সব আশা শেষ হয়ে যায় তাদের। পুরো ১১ জন নিয়েও খেলা শেষ করতে পারেনি দলটি।

বল দখলে কিছুটা পিছিয়ে থাকা আর্জেন্টিনা গোলমুখে নেয় ২১টি শট। এর মধ্যে আটটি ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে, ইকুয়েডর দশটি শট নিয়ে দুটি রাখে লক্ষ্যে।

১৪তম মিনিটে লাউতারোর শট ডিফেন্ডার রবার্ত আরবেলোদা হেড করে রুখে দেওয়ায় এগিয়ে যাওয়া হয়নি আর্জেন্টিনার। তিন মিনিট পর কর্নার থেকে হেরমান পেজ্জেয়ার শট থাকেনি লক্ষ্যে।

২২তম মিনিটে প্রতিপক্ষের ভুলের সুযোগ নিতে পারেননি মেসি। ইকুয়েডরের কার্লোস গ্রুয়েজোর ব্যাক পাস পেয়ে কেবল গোলরক্ষককে পরাস্ত করতে হতে তাকে। কিন্তু কোণাকুণি শট নিয়ে বল লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি। বল বাধা পায় পোস্টে।

৩৮তম মিনিটে সতীর্থের ক্রসে ঠিকমতো হেড করতে পারেননি ইকুয়েডরের এন্নার ভ্যালেন্সিয়া। পরের মিনিটে আর্জেন্টিনার মার্কোস আকুনিয়ার শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

৪০তম মিনিটে আর হতাশায় পুড়তে হয়নি আলবিসেলেস্তেদের। মেসির কাছ থেকে বল পেয়ে জোরালো শটে লক্ষ্যভেদ করেন দে পল। জাতীয় দলের জার্সিতে এটাই তার প্রথম গোল।

প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করতে পারতেন নিকোলাস গঞ্জালেজ। মেসির ফ্রি-কিকে তার হেড রুখে দেন ইকুয়েডরের গোলরক্ষক হার্নান গালিনদেস। গঞ্জালেজের ফিরতি শটও ফিরিয়ে দেন তিনি।

যোগ করা সময়ে সমতায় ফিরতে পারত ইকুয়েডর। কিন্তু ইয়েরি মিনার পাসে দারুণ সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন ভ্যালেন্সিয়া। তার হেড চলে যায় পোস্টের বাইরে দিয়ে।

দ্বিতীয়ার্ধে তুলনামূলক ভালো শুরু পায় ইকুয়েডর। ৫৮তম মিনিটে ভ্যালেন্সিয়ার শট ফাঁকি দিতে পারেননি আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেজ। ছয় মিনিট পর অল্পের জন্য নিজেদের জালে বল পাঠিয়ে দেননি গঞ্জালেজ।

৭৪তম মিনিটে দে পলের পাসে মেসি লক্ষ্যে রাখতে পারেননি শট। ছয় মিনিট পর পাল্টা-আক্রমণে বদলি গঞ্জালো প্লাতার প্রচেষ্টা ফিরিয়ে দেন মার্তিনেজ।

৮৪তম মিনিটে দ্বিতীয় গোলের দেখা পায় আর্জেন্টিনা। প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারের কাছ থেকে বল কেড়ে নেন বদলি আনহেল দি মারিয়া। তিনি খুঁজে নেন মেসিকে। তার পাসে বাকিটা অনায়াসে সারেন লাউতারো।

দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে ডি-বক্সের সামান্য বাইরে থেকে চোখ ধাঁধানো ফ্রি-কিকে গোল করেন মেসি। দি মারিয়া ফাউল হওয়ায় সেট-পিসটি পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। তাকে ফেলে দেওয়ায় শুরুতে হলুদ কার্ড দেখানো হয়েছিল পিয়েরো হিনকাপিকে। পরে ভিএআরের সাহায্যে লাল কার্ড দেখানো হয় তাকে।

ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে আগামী বুধবার কলম্বিয়ার মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা। ব্রাসিলিয়ার মানে গারিঞ্চা স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সকাল সাতটায়।

Comments

The Daily Star  | English
Election in Bangladesh

Why are we trying to make the election uncertain?

Those who are working to prevent the election should question themselves as to how the people will be empowered without one.

5h ago