জোড়া গোলে দ্বিতীয় অভিষেক রাঙালেন রোনালদো

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে দ্বিতীয় দফায় অভিষেকে সব আলো কেড়ে নিলেন ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে দুই অর্ধে দুটি গোল এলো তার পা থেকে। পাশাপাশি তার সতীর্থরাও উঠলেন জ্বলে। তাতে নিউক্যাসলকে বড় ব্যবধানে হারাল রেড ডেভিলরা।
শনিবার ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ঘরের মাঠ ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ৪-১ গোলে জিতেছে ওলে গানার সুলশারের দল। পাঁচবারের ব্যালন ডি'অর জয়ী পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড ছাড়া স্বাগতিকদের অন্য দুই গোলদাতা ব্রুনো ফার্নান্দেস ও জেসি লিংগার্ড। নিউক্যাসলের একমাত্র গোলটি করেন হাভিয়ের মানকিয়ো।
২০০৯ সালে ইউনাইটেড ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে পাড়ি জমিয়েছিলেন রোনালদো। এরপর তিনি নাম লেখান জুভেন্টাসে। সেখান থেকে গত মাসের শেষে ফের ইউনাইটেডে যোগ দেন তিনি। তাকে সুপরিচিত লাল রঙের জার্সিতে খেলতে দেখার অপেক্ষায় এতদিন ছিলেন ভক্ত-সমর্থকরা। সেটার অবসান ঘটেছে। আর প্রথম ম্যাচেই জোড়া গোলে দলকে পূর্ণ পয়েন্ট উপহার দিয়েছেন সিআর সেভেন।
গোটা ম্যাচে দাপট দেখায় প্রিমিয়ার লিগের সফলতম ক্লাব ইউনাইটেড। ৬৫ শতাংশ সময়ে তারা বল পায়ে রাখে। প্রতিপক্ষের গোলমুখে ২১টি শট নিয়ে তারা লক্ষ্যে রাখতে পারে সাতটি। অন্যদিকে, স্টিভ ব্রুসের শিষ্যদের ১২টি শটের তিনটি ছিল লক্ষ্যে।
প্রথম থেকেই নিউক্যাসলকে চাপে রাখে ইউনাইটেড। অষ্টম মিনিটে পল পগবার উঁচু করে বাড়ানো রক্ষণচেরা পাসে ব্রুনো ঠিকমতো হেড করতে পারেননি। তিন মিনিট পর দুরূহ কোণ থেকে রোনালদোর শট বাইরের দিকে জালে লাগে।
স্বাগতিকরা এগিয়ে যেতে পারত ১৯তম মিনিটে। লুক শর কর্নারে কাছের পোস্ট থেকে রাফায়েল ভারানের হেড অল্পের জন্য জালে প্রবেশ করেনি। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ইউনাইটেডের আক্রমণ প্রতিহতের পাশাপাশি পাল্টা আক্রমণে ভীতি ছড়াতে শুরু করেন নিউক্যাসলের অ্যালান সেইন্ট-ম্যাক্সিমা, জোসেপ উইলকরা।
৩০তম মিনিটে রোনালদোর পাসে ডান দিক থেকে ব্রুনো কোণাকুণি শট নেন। কিন্তু তা লক্ষ্যে থাকেনি। ডি-বক্সের ভেতরে জ্যাডন স্যাঞ্চো পা ছোঁয়াতে পারলে অবশ্য বিপদ ঘটতে পারত সফরকারীদের।
দুই দলের উপভোগ্য লড়াই সত্ত্বেও প্রথমার্ধ এগোচ্ছিল গোলশূন্যভাবে শেষ হওয়ার দিকে। তবে যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে অচলাবস্থা ভাঙেন রোনালদো। নিউক্যাসলের গোলরক্ষকের ভুলের পুরো ফায়দা আদায় করে নেন তিনি।

ম্যাসন গ্রিনউডের নেওয়া শট ঠিকমতো লুফে নিতে ব্যর্থ হন ফ্রেডি উডম্যান। সামনে সতীর্থ ডিফেন্ডার থাকায় সামান্য ধোঁকা খেয়েছিলেন তিনি। বল তার তার হাত ফসকে বেরিয়ে যাওয়ার পর গোলপোস্টের খুব কাছ থেকে লক্ষ্যভেদ করেন ফাঁকায় থাকা সুযোগসন্ধানী রোনালদো।
বিরতির পর খেলা শুরুর ১০ মিনিটের মধ্যে চোখ ধাঁধানো পাল্টা আক্রমণে সমতায় ফেরে নিউক্যাসল। বাম প্রান্ত দিয়ে দ্রুতগতিতে উপরে উঠে মিগুয়েল আলমিরন আড়াআড়ি বল বাড়ান সেইন্ট-ম্যাক্সিমাকে। তার পাসে কোণাকুণি শটে দাভিদ দে গেয়াকে পরাস্ত করেন মানকিয়ো।
তবে নিউক্যাসলের উল্লাস স্থায়ী হয়নি বেশিক্ষণ। ছয় মিনিট পরই রোনালদোর গোলে ফের এগিয়ে যায় ইউনাইটেড। শর পাসে উডম্যানের দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে জাল কাঁপান ৩৬ বছর বয়সী তারকা।

লিড নিয়ে উজ্জীবিত হয়ে ওঠে সুলশারের শিষ্যরা। শেষদিকে দুই গোলে বড় জয় নিশ্চিত হয় তাদের। ৮০তম মিনিটে ব্রুনো স্কোরলাইন ৩-১ করার পর দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে চমৎকার আক্রমণে প্রতিপক্ষের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন বদলি লিংগার্ড। দুটি গোলেরই যোগানদাতা পগবা।
চার ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে লিগের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে উঠে গেছে ইউনাইটেড। সমান ম্যাচে ৯ পয়েন্ট করে রয়েছে তিনটি দলের। গোল ব্যবধানে শিরোপাধারী ম্যানচেস্টার সিটি দুইয়ে, ব্রাইটন অ্যান্ড হোভ অ্যালবিয়ন তিনে ও টটেনহ্যাম হটস্পার চারে আছে।
Comments