ভয়ে আর ফুটবল খেলাই দেখেন না আগুয়েরো

হঠাৎই হৃৎস্পন্দন অনিয়মিত হয়ে গেল সের্জিও আগুয়েরোর। ছাড়তে হলো পেশাদার ফুটবল। অথচ কতো স্বপ্ন নিয়েই এবার বার্সেলোনায় যোগ দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই ফুটবলই এখন তার জন্য বড় দুঃস্বপ্নের নাম। অবস্থা এমনই দাঁড়িয়েছে ফুটবল খেলা দেখতেও ভয় পান। এমনকি ফুটবলের কোনো সংবাদই রাখেন না এ আর্জেন্টাইন।
গত অক্টোবরের শেষদিকে আলাভেসের বিপক্ষে ম্যাচের ৪২তম মিনিট হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব করেন আগুয়েরো। তৎক্ষণাৎ মাঠে শুয়ে পড়েন তিনি। সেখান থেকে তাকে সরাসরি নেওয়া হয় হাসপাতালে। পরে তার হৃদযন্ত্রে সমস্যা চিহ্নিত করেন চিকিৎসকরা। পরে জানা যায় অ্যারিথমিয়া বা অনিয়মিত হৃৎস্পন্দনে ভুগছেন আগুয়েরো। প্রাথমিকভাবে তিন মাস মাঠের বাইরে থাকলেই সুস্থ হবেন ভাবলেও পরে বদলে যায় সবকিছুই। ৩৩ বছর বয়সেই বুটজোড়া তুলে রাখতে হয় তাকে।
কিন্তু মন থেকে কি ফুটবল ছাড়তে পেরেছেন আগুয়েরো?
প্রায়শই মনের কোণে ফের মাঠে ফেরার ইচ্ছা জাগে তার। কিন্তু তা মনের মধ্যেই দমিয়ে রাখেন তিনি। ভাবনাটা স্রেফ উড়িয়ে দেন। ভয় পান, কখন না আবার মনের অজান্তেই মাঠে ফিরে চলে আসেন। এমনকি ফুটবল ম্যাচ দেখলেও যদি ফেরার ইচ্ছা প্রবল হয়ে বসে সে ভাবনায় ফুটবলের কোনো সংবাদই রাখেন না তিনি। সম্প্রতি আর্জেন্টিনা সংবাদমাধ্যম টিওয়াইসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই বলেছেন সাবেক বার্সেলোনা ও ম্যানচেস্টার সিটি তারকা।
'মাঝে মাঝে আমি একটি খেলা দেখার কথা ভাবি। কিন্তু আবার ভাবনাটা উড়িয়ে দেই। সত্যি বলছি, ফুটবল না দেখার চেষ্টা করি। আমি দেখি না কারণ আমি ভয় পাই। জানি তাহলে আমার মন আবার মাঠে ফিরে যাওয়ার জন্য মাথাটা খেয়ে ফেলবে। এমন কিছু, অনন্ত কিছুক্ষণের জন্য... আমি জানি ঘটবে না। এখন আমি আরাম করি এবং যা করছি তা উপভোগ করি। আমি ফুটবল এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি।'
'এখনও আমি খেলতে চাই, কিন্তু আমি ভয় পাই। আমি আমার সারা জীবন সর্বোচ্চ এবং বড় প্রতিযোগিতায় অনুশীলন করেছি। আমি ফুটবল বা খবর দেখি না, কী ঘটছে তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আমার বন্ধুদের মতো যা ইচ্ছা তাতেই মনোনিবেশ করি। খেলায় ফিরে আসার কথা আমার মাথায় আসে কিন্তু আমি জানি এটা এমন কিছু যা আমি করতে পারব না। তারা (চিকিৎসক) আমাকে বলেছিল আমি ভাগ্যবান কারণ আমার সহজেই হার্ট অ্যাটাক হতে পারতো।'
ফুটবল ক্যারিয়ারটা বর্ণাঢ্যই ছিল আগুয়েরো। ২০০৬ সালে আতলেতিকো মাদ্রিদে পাড়ি দিয়ে ইউরোপে আসেন। লা লিগায় পাঁচ মৌসুমে দারুণ পারফরম্যান্স দেখিয়ে যোগ দেন ম্যান সিটিতে। ইতিহাদ স্টেডিয়ামে এক দশক কাটিয়ে ২৬০ গোল করে সিটিজেনদের ইতিহাসের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতার রেকর্ড নিজের করে নেন আগুয়েরো। আর্জেন্টিনার হয়ে করেছেন ৪১ গোল। জাতীয় দলের জার্সিতে গত বছর কোপা আমেরিকা জয়ের অন্যতম সদস্য ছিলেন এ তারকা।
Comments