১০ জনের চেলসির সঙ্গে পয়েন্ট ভাগাভাগি করল লিভারপুল

পিছিয়ে পড়া লিভারপুল সমতায় ফিরল প্রথমার্ধের শেষদিকে। দশ জনের চেলসিকে দ্বিতীয়ার্ধে চেপে ধরে জয়সূচক গোল খুঁজতে লাগল তারা। কিন্তু পূরণ হলো না তাদের লক্ষ্য। খেলা শেষ হলো সমতায়।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে শনিবার রাতে ঘরের মাঠ অ্যানফিল্ডে লিভারপুল ১-১ গোলে ড্র করেছে চেলসির সঙ্গে। ব্লুজদের গোলদাতা কাই হাভার্টজ। অলরেডদের পক্ষে লক্ষ্যভেদ করেন মোহামেদ সালাহ।
দ্বিতীয়ার্ধের পুরোটা সময় একজন কম নিয়ে খেলতে হয় চেলসিকে। বিরতির ঠিক আগে ডি-বক্সে হ্যান্ডবলের কারণে সরাসরি লাল কার্ড দেখানো হয় ইংলিশ ডিফেন্ডার রিস জেমসকে। পাশাপাশি পেনাল্টিও পায় লিভারপুল।
গোটা ম্যাচে বল দখলে রাজত্ব করে ইয়ুর্গেন ক্লপের দল। আক্রমণেও ছিল তাদের প্রাধান্য। ২৩টি শট নিয়ে তারা লক্ষ্যে রাখে আটটি। বিপরীতে, টমাস টুখেলের দলের ছয়টি শটের তিনটি ছিল লক্ষ্যে।
ম্যাচের শুরুতে কিছুটা নড়বড়ে দেখা যায় চেলসিকে। চতুর্থ মিনিটে নিজেদের ভুলে গোলও হজম করতে পারত তারা। হাভার্টজের আলগা পাস থেকে বল পেয়ে যান সালাহ। তার কাছ থেকে পাওয়া পাসে ডি-বক্সের প্রান্ত থেকে হার্ভে এলিয়ট যে শট নেন তা লক্ষ্যে থাকেনি।
দশম মিনিটে আরেকটি সুযোগ নষ্ট হয় লিভারপুলের। ট্রেন্ট অ্যালেকজান্ডার-আর্নল্ডের ক্রসে জর্ডান হেন্ডারসনের ভলি পোস্টের অনেক দূর দিয়ে চলে যায়। পরের মিনিটে ভার্জিল ভ্যান ডাইকের হেডও লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

২২তম মিনিটে স্বাগতিকদের চমকে দিয়ে এগিয়ে যায় চেলসি। জেমসের ফ্রি-কিকে মাথা ছুঁইয়ে গোলরক্ষক আলিসনকে বোকা বানান হাভার্টজ। এই গোলে দায় আছে লিভারপুলের রক্ষণভাগের। দূরের পোস্টে অরক্ষিত অবস্থায় ছিলেন জার্মান ফরোয়ার্ড হাভার্টজ।
৩৬তম মিনিটে অল্পের জন্য ব্যবধান দ্বিগুণ করতে পারেনি সফরকারীরা। রোমেলু লুকাকুর পাসে বাম দিক থেকে ম্যাসন মাউন্টের কোণাকুণি শটে পরাস্ত হয়েছিলেন গোলপোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে আসা আলিসন। কিন্তু অ্যান্ড্রু রবার্টসনের গায়ে লেগে বল লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটেই সমতায় ফিরতে পারত লিভারপুল। সতীর্থের কর্নারে জোয়েল মাতিপের হেড বারে লেগে ফিরে আসে। তবে তাদেরকে বেশিক্ষণ আক্ষেপে পুড়তে হয়নি।
পরের মিনিটেই পেনাল্টি পায় লিভারপুল। যদিও জেমসের পাওয়া লাল কার্ড নিয়ে বিতর্কের অবকাশ থেকে যায়। তার পা ছুঁয়ে এরপর বল লাগে হাতে। তবে সুযোগ হাতছাড়া করেননি সালাহ। মিশরীয় ফরোয়ার্ড ঠাণ্ডা মাথায় চেলসি গোলরক্ষক এদুয়ার্দ মেন্দিকে ফাঁকি দিয়ে বল জালে পাঠান।
সেসময় ম্যাচে ছড়ায় উত্তেজনা। দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে ধাক্কাধাক্কিও ঘটে। রেফারির সিদ্ধান্তে অসন্তোষ জানিয়ে গোলের আগে-পরে হলুদ কার্ড দেখেন আন্তোনিও রুদিগার ও মেন্দি।

বিরতির পর লিড নিতে তেতে ওঠে লিভারপুল। ৫১তম মিনিটে সালাহর ক্রসে দিয়োগো জোতার হেড লক্ষ্যে থাকেনি। পরের মিনিটে ভ্যান ডাইকের দূরপাল্লার শট ফিরিয়ে দেন ম্যাচে মোট ছয়টি সেভ দেওয়া মেন্দি। ছয় মিনিট পর হেন্ডারসনের শট চলে যায় পোস্ট ঘেঁষে।
৫৯তম মিনিটে ফের চেলসির ত্রাণকর্তার ভূমিকায় আবির্ভূত হন মেন্দি। জোড়া সেভ করেন তিনি। দূর থেকে ফাবিনহোর নেওয়া শট আটকে দেওয়ার পর ডি-বক্সের বাইরে থেকে রবার্টসনের আরেকটি শটও রক্ষা করেন তিনি।
ম্যাচের ধারার বিপরীতে ৮৪তম মিনিটে আরেক দফা পিছিয়ে পড়তে পারত লিভারপুল। বেলজিয়ান স্ট্রাইকার লুকাকুর সঙ্গে বল দেওয়া-নেওয়া করে ডি-বক্সে গোলরক্ষককে একা পেয়ে গিয়েছিলেন মাতেও কোভাচিচ। কিন্তু দারুণ সেভ করে তাকে হতাশ করেন ব্রাজিলিয়ান আলিসন।
শেষ সময়ে চাপ আরও বাড়ায় লিভারপুল। কিন্তু তাতে মেলেনি কাঙ্ক্ষিত সাফল্য। ৮৫তম মিনিটে পাল্টা-আক্রমণে সালাহর শট সহজেই লুফে নেন মেন্দি। নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে মাতিপের হেডও খুঁজে পায়নি জাল।
পয়েন্ট ভাগাভাগি করায় শেষ হয়েছে লিভারপুল ও চেলসির জয়ের ধারা। দুই দলেরই অর্জন ৩ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট। চেলসি রয়েছে পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থানে। লিভারপুলের অবস্থান তিন নম্বরে।
Comments