ওয়েস্ট ইন্ডিজের জার্সিতে শেষবার দেখা গেল গেইলকে?

আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা আসেনি। আগে থেকে কোনো আভাসও দেননি। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার ম্যাচে যেসব দৃশ্যের দেখা মিলল, তাতে একটি দিকেই ইঙ্গিত করা যায়- আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে হয়তো নিজের শেষ ইনিংসটি খেলে ফেললেন 'টি-টোয়েন্টির ফেরিওয়ালা' খ্যাত ক্রিস গেইল।
শনিবার আবুধাবিতে এবারের বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলেছে উইন্ডিজ। আসর থেকে বিদায় অবশ্য আগেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল তাদের। আগে ব্যাটিংয়ে নামা ক্যারিবিয়ানদের হয়ে ওপেনিংয়ে ৯ বলে ১৫ রানের ইনিংস খেলেন বাঁহাতি বিস্ফোরক ব্যাটার গেইল। নিজস্ব ঢঙে মারেন দুটি ছক্কা।
এদিন স্থায়ী হয়নি দীর্ঘদেহী গেইলের ঝলক। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে লং-অন দিয়ে জস হ্যাজেলউডকে সীমানাছাড়া করেন। পরের ওভারের প্রথম বলে প্যাট কামিন্সকেও একই অঞ্চল দিয়ে হাঁকান ছক্কা। কিন্তু দ্বিতীয় বলেই কুপোকাত হন তিনি। বোল্ড হওয়ার পর তার চোখেমুখে হতাশার ছাপ ছিল স্পষ্ট। তবে সেই অভিব্যক্তি থাকেনি বেশিক্ষণ। গেইল মাঠ ছাড়েন ব্যাট উঁচু করে, আকর্ণবিস্তৃত হাসি নিয়ে।
ডাগআউটে সতীর্থরা ছিলেন ৪২ বছর বয়সী গেইলের অপেক্ষায়। ইতোমধ্যে অবসরের ঘোষণা দেওয়া ডোয়াইন ব্রাভোর পাশাপাশি আন্দ্রে রাসেল, জেসন হোল্ডাররা তাকে জড়িয়ে ধরে জানান অভিবাদন। সবকিছু মিলে মনে হতেই পারে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বুঝি শেষবারের মতো 'ইউনিভার্স বস'কে দেখা গেল।
অস্ট্রেলিয়াকে ক্যারিবিয়ানরা ১৫৮ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেওয়ার পর বোলিংও করেন গেইল। ১৬তম ওভারে তিনি যখন বল হাতে নেন, ততক্ষণে ম্যাচের ভাগ্য একরকম নির্ধারিত হয়ে গেছে। শেষ বলে অবশ্য আনন্দের উপলক্ষ তৈরি করেন গেইল। মিচেল মার্শকে ফেরান হোল্ডারের ক্যাচ বানিয়ে। তবে পরের ওভারেই জয় তুলে নেয় অজিরা।
চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ একদমই ভালো কাটেনি গেইলের। আগের চার ম্যাচে করেছিলেন ৩০ রান। ছন্দে না থাকায় তিনি অবসরের ঘোষণা দিয়ে ফেললে তাই বিস্ময়ের থাকবে কমই।
২০০৬ সালে অকল্যান্ডে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হয়েছিল গেইলের। এই ম্যাচের পর বিদায় বলে দিলে উইন্ডিজের হয়ে তার ক্যারিয়ার দাঁড়াবে এমন- ৭৯ ম্যাচে ২৭.৯২ গড়ে ১৮৯৯ রান। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে তার স্ট্রাইক রেট ১৩৭.৫০। ১৪ ফিফটির সাথে সেঞ্চুরি দুটি। সর্বোচ্চ ১১৭ রানের ইনিংসটি তিনি খেলেছিলেন ২০০৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। সেটি ছিল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসের প্রথম ম্যাচ।
Comments