‘ছয় মাস এমন বলয়ে থাকলে ব্র্যাডম্যানের গড়ও কমে যেত’

করোনাভাইরাসের কারণে গত দুই বছর ধরেই খেলা চলছে বিশেষ ব্যবস্থায়। কোন দেশে ট্যুরে গেলে বাড়তি কদিন থাকছে  কোয়ারেন্টিনের জন্য। একের পর এক করোনা পরীক্ষা তো আছেই। বলয়ে প্রবেশ করার পর খেলার বাইরের চলাফরাও একদমই সীমাবদ্ধ।
robi sastri
রবি শাস্ত্রি। ফাইল ছবি- সংগ্রহ

সেই জুন মাসের শুরুতে ভারতীয় দলকে নিয়ে ইংল্যান্ডের বিমান ধরেছিলেন রবি শাস্ত্রি। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ, আইপিএলের বাকি অংশের পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ভারতের মূল খেলোয়াড়দের কয়েকজনকে টানা ছয় মাস ধরেই থাকতে হয়েছে জৈব সুরক্ষা বলয়ে। বিশ্ব আসরে সেমি-ফাইনালে উঠতে না পারার ব্যর্থতা মেনে নিয়েও বিদায়ী কোচ শাস্ত্রি দায় দিলেন করোনা পরিস্থিতির এই বলয়।

করোনাভাইরাসের কারণে গত দুই বছর ধরেই খেলা চলছে বিশেষ ব্যবস্থায়। কোন দেশে ট্যুরে গেলে বাড়তি কদিন থাকছে  কোয়ারেন্টিনের জন্য। একের পর এক করোনা পরীক্ষা তো আছেই। বলয়ে প্রবেশ করার পর খেলার বাইরের চলাফরাও একদমই সীমাবদ্ধ।

এমন পরিস্থিতিতে জমে থাকা বেশ কয়েকটি কমিটমেন্ট পূরণে টানা খেলায় থাকতে হয়েছে ভারতকে। টেস্টে দারুণ সময় কাটালেও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বড় মঞ্চে এসে তারা করেছে হতাশ। পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের কাছে প্রথম দুই ম্যাচে হেরেই নড়ে যায় বিরাট কোহলিদের ভিত। পরে তিন ম্যাচে বড় জয় পেলেও উঠা হয়নি সেমিতে।

এই বিশ্বকাপ দিয়েই কোচ হিসেবে শাস্ত্রি অধ্যায়ের সমাপ্তি হয়েছে। তার সময়ে অস্ট্রেলিয়া গিয়ে দুবার সিরিজ জেতা, ইংল্যান্ডে সিরিজ জেতার অর্জন থাকলে আইসিসি টুর্নামেন্টগুলোতে আসেনি সাফল্য।

সোমবার নামিবিয়াকে ৯ উইকেটে সহজেই হারিয়ে নিজের বিদায়ের দিনে সংবাদ সম্মেলনে এসে শাস্ত্রি জৈব সুরক্ষা বলয়ের এই কঠিন পরিস্থিতি নিয়ে সরব হয়েছে আবার,  'একটা জিনিস আমি বলতে চাই, এটা কোন অজুহাত নয়, এটা ফ্যাক্ট। আপনি যখন ছয় মাস বলয়ে থাকবেন, এই দলে অনেক খেলোয়াড় আছে যারা তিন ফরম্যাটে খেলে। গত ২৪ মাসে তারা ২৫ দিনও নিজেদের বাড়িতে থাকেনি। আপনি যেই হোন না কেন, এমনকি আপনার নাম যদি হয় ব্র্যাডম্যান, আপনিও যদি বলয়ে থাকেন, আপনার গড় নিচে নেমে যাবে কারণ আপনিও মানুষ।'

ভারতের সাবেক অধিনায়ক ও কোচ হিসেবেও সাবেক হয়ে যাওয়া শাস্ত্রির শঙ্কা বলয়ের এই 'যন্ত্রণা' থাকলে সামনে আরও খারাপ কিছু হতে পারে, 'এটা এমন কিছু না আপনি পেছন থেকে পেট্রোল দিলেন আর ছেলেরা ছুটে গেল। এটা এভাবে হয় না। আমার মনে হয় এটা কঠিন সময় ছিল। আমি তাই বলি জীবন সেটা নয় যেটা অর্জন করলেন, যেটা পেরিয়ে এলেন সেটা। তারা দেখিয়েছে যাত্রা এখানে আটকে গেছে, কোন অভিযোগ নেই।'

'তবে আজ বা কাল এই বলয় বিস্ফোরিত হবে, কাজেই সতর্ক থাকতে হবে।'

Comments