ব্যাটিং ব্যর্থতায় একশর আগেই শেষ বাংলাদেশ

এক প্রান্তে ব্যাটাররা ছিলেন আসা যাওয়ার মিছিলে। অপর প্রান্ত ধরে রেখেছিলেন লিটন দাস। তাতে কিছুটা আশা জিইয়ে ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু লিটনও ইনিংস টানতে পারেননি। শেষ দিকে কিছু রান এনেছেন শেখ মেহেদী হাসান। তবে তাও তিন অঙ্কে যাওয়া হয়নি মাহমুদউল্লাহদের। কাগিসো রাবাদা, আনরিক নরকিয়ার পেস আর তাবরাইজ শামসির স্পিন বিষে টাইগাররা পড়েছে বিব্রতকর অবস্থায়। 

মঙ্গলবার আবুধাবির জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১৮.২ ওভারে মাত্র ৮৪ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।

এক অর্থে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিলেও কাগজ-কলমের সূক্ষ্ম ফাঁকে সুযোগ ছিল বাংলাদেশের। তার জন্য অন্য দলগুলোর ফলাফল নিজেদের পক্ষে আসার সঙ্গে প্রয়োজন ছিল বড় জয়ের। তারচেয়েও বড় কথা লড়াইটা এখন মর্যাদার। কিন্তু লড়াই করার মতো পর্যাপ্ত পুঁজিও পেল না তারা।

অথচ ব্যাটিংয়ের শুরুটা নেমে দেখে শুনেই করেছিলেন দুই ওপেনার লিটন দাস ও মোহাম্মদ নাঈম শেখ। ২২ রানের জুটিও গড়েছিলেন। তাতে ভালো ইঙ্গিত দিয়েছিল দলটি। কিন্তু চতুর্থ ওভারেই শেষ তাদের প্রতিরোধ। কাগিসো রাবাদার বোলিং তোপে পড়ে টাইগাররা।

জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলার খেসারৎ দেন নাঈম। রাবাদার বলে পুল করতে গিয়ে মিড উইকেটে সহজ ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ঠিক পরের বলে আউট হয়ে যান তিনে নামা সৌম্য সরকারও। পড়েন এলবিডাব্লিউর ফাঁদে। আম্পায়ার অবশ্য শুরুতে আঙুল তোলেননি। সফল রিভিউ নিয়ে তাকে ফেরান প্রোটিয়া অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। বল ব্যাটে লেগেছিল বটে। তবে আগেই প্যাড স্পর্শ করায় সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে।

জোড়া উইকেট হারানোর ধাক্কা সামলাতে না সামলাতে এক ওভার পর ফিরে যান মুশফিকুর রহিমও। রাবদার কিছুটা বাড়তি বাউন্সে ব্যাটে কানা ছুঁয়ে চলে যায় স্লিপে দাঁড়ানো রিজা হ্যান্ডরিকসের হাতে। যদিও প্রথম দফায় ঠিকভাবে ধরতে না পারেননি। তবে দ্বিতীয় দফায় লুফে নেন দারুণ ক্যাচ।

দ্রুত তিন উইকেট হারিয়ে ফেলায় অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর কাঁধে ছিল বড় দায়িত্ব। হতাশ করেছেন তিনিও। তিনি ফিরেছেন এনরিক নরকিয়ার বাউন্সারে। গ্লাভস ছুঁয়ে চলে যায় স্লিপে দাঁড়ানো এইডেন মার্করামের হাতে।

এরপর বাংলাদেশকে আরও বড় বিপর্যয়ের মুখে ফেলে যান আফিফ হোসেন। প্রথম বলেই এগিয়ে এসে হাঁকাতে চেয়েছিলেন এ তরুণ। ব্যাটে বলে হয়নি। ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস বল আঘাত হানে স্টাম্পে। বোল্ড হয়ে খালি হাতে ফিরেন আফিফ।

পেসারদের তাণ্ডব শেষে পার্টিতে যোগ দেন স্পিনাররা। তাবরাইজ শামসি তুলে নেন লিটন দাসকে। ফ্লিক করতে গিয়ে বল মিস করলে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়েন এ উইকেটরক্ষক ব্যাটার। রিভিউ নিয়েছিলেন। কিন্তু লাভ হয়নি।

এরপর শেখ মেহেদী হাসানের সঙ্গে দলের হাল ধরেন শামিম হোসেন পাটোয়ারি। ১৯ রানের জুটি গড়েছিলেন। তবে শামিমকেও ফেরান শামসি। তার বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ দেন এ তরুণ।

তবে অপর প্রান্তে কিছুটা দায়িত্ব নিতে পেরেছিলেন মেহেদী। বাংলাদেশের ইনিংসের সর্বোচ্চ ইনিংসটাও তার। একমাত্র ছক্কাও আসে তার ব্যাট থেকে। তবে ১৯তম ওভারে নরকিয়ার বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন বোলারদের হাতেই। আর পরের বলে হিটউইকেট হয়ে যান নাসুম। তাতে ১০ বল বাকি থাকতেই গুটিয়ে যায় টাইগাররা।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ২৭ রানের ইনিংস খেলেন মেহেদী। ২৫ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। ৩৬ বলে লিটনের ব্যাট থেকে আসে ২৪ রান। দুই ব্যাটার ছাড়া কেবল শামিমই দুই অঙ্ক স্পর্শ করতে পেরেছেন।

দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে ৩.২ ওভার বল করে মাত্র ৮ রান খরচ করে ৩টি উইকেট পান নরকিয়া। ৪ ওভার বলে করে ২০ রানের বিনিময়ে ৩টি উইকেট পান রাবাডাও। দুটি শিকার শামসির।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ: ১৮.২ ওভারে ৮৪ (নাঈম ৯, লিটন ২৪, সৌম্য ০, মুশফিক ০, মাহমুদউল্লাহ ৩, আফিফ ০, শামীম ১১, মেহেদী ২৭, তাসকিন ৩, শরিফুল ০*, নাসুম ০; মহারাজ ০/২৩, রাবাদা ৩/২০, নরকিয়া ৩/৮, প্রিটোরিয়াস ১/১১, শামসি ২/২১)

Comments

The Daily Star  | English

No scope to avoid fundamental reforms: Yunus

Conveys optimism commission will be able to formulate July charter within expected timeframe

3h ago