কিংয়ের ফিফটির পর পাওয়েলের ঝড়ে বাংলাদেশ পেল কঠিন লক্ষ্য

প্রথম চার ওভারের মধ্যে ২ উইকেট তুলে নিল বাংলাদেশ। তবে এরপর ওপেনার ব্র্যান্ডন কিং ও অধিনায়ক নিকোলাস পুরান মিলে পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নিলেন শক্ত অবস্থানে। সেই ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে বিধ্বংসী হয়ে উঠলেন রভম্যান পাওয়েল।
ছবি: সংগৃহীত

প্রথম চার ওভারের মধ্যে ২ উইকেট তুলে নিল বাংলাদেশ। এরপর ওপেনার ব্র্যান্ডন কিং ও অধিনায়ক নিকোলাস পুরান মিলে পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নিলেন শক্ত অবস্থানে। সেই ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে বিধ্বংসী হয়ে উঠলেন রভম্যান পাওয়েল। কিংয়ের পর তিনিও পেলেন হাফসেঞ্চুরির স্বাদ। বিপরীতে তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, সাকিব আল হাসান ও শরিফুল ইসলাম করলেন খরুচে বোলিং। ফলে সফরকারীদের বড় লক্ষ্য ছুঁড়ে দিল ক্যারিবিয়ানরা। 

প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পর রোববার ডমিনিকায় সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। উইন্ডসর পার্কে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে স্বাগতিকরা ৫ উইকেটে ১৯৩ রান জমা করেছে স্কোরবোর্ডে। কিং ৪৩ বলে ৭ চার ও ১ ছয়ে করেন ৫৭ রান। মাত্র ২০ বলে ফিফটি ছোঁয়া পাওয়েল ২৮ বলে ৬১ রানে অপরাজিত থাকেন। তার ব্যাট থেকে আসে ২ চার ও ৬ ছক্কা।

নাসুম আহমেদের জায়গায় একাদশে ফেরা তাসকিনের হাতে শুরুতেই ওঠে বল। তবে তাকে পড়তে হয় বাঁহাতি ব্যাটার কাইল মেয়ার্সের তোপের মুখে। মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলেই তিনি মারেন চার। পরে লং-অফ দিয়ে হাঁকান ছক্কাও। মেয়ার্সের আগ্রাসন অবশ্য দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে শেখ মেহেদী হাসানকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান তিনি। ৯ বলে ১৭ রান আসে তার ব্যাট থেকে।

চতুর্থ ওভারে আক্রমণে গিয়েই বাংলাদেশকে ফের উল্লাসে মাতান সাকিব। মেয়ার্সের মতো শামার ব্রুকসও স্লগ সুইপ করতে গিয়ে সাজঘরে ফেরেন। ৩ বলে খেলে রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি। মিডউইকেটে তার তোলা ক্যাচ অনায়াসে লুফে নেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।

দলীয় ২৬ রানে ২ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে পাঁচ বোলার ব্যবহার করেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। কেবল বাঁহাতি স্পিনার সাকিব ছাড়া সবাই হজম করেন বাউন্ডারি। তার ওই ওভার থেকে কেবল ১ রান আসে। পাওয়ার প্লে শেষে স্বাগতিকদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২ উইকেটে ৪৬ রান।

শুরুর দিকের চাপ পরে ধরে রাখতে ব্যর্থ হয় বাংলাদেশ। তরতর করে রান বাড়াতে থাকেন কিং ও পুরান। ইনিংসের সপ্তম ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান স্পর্শ করে পঞ্চাশ। আর তিন অঙ্কে পৌঁছায় ১২তম ওভারের শেষ বলে। মাঝে অবশ্য কঠিন একটি সুযোগ নষ্ট হয় টাইগারদের। মোস্তাফিজের ডেলিভারিতে কিংয়ের হাঁকানো বল হাতে জমিয়েছিলেন লিটন দাস। কিন্তু শারীরিক ভারসাম্য রাখতে না পেরে সীমানার বাইরে চলে যাচ্ছেন বুঝে বল ছুঁড়ে দেন ভিতরে। সেসময় কিং ছিলেন ব্যক্তিগত ২৭ রানে।

তৃতীয় উইকেট জুটি ভাঙতে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের দ্বারস্থ হন মাহমুদউল্লাহ। আস্থার প্রতিদানও দারুণভাবে দেন মুনিম শাহরিয়ারের চোটে সুযোগ পাওয়া এই স্পিন অলরাউন্ডার। ১৩তম ওভারে তিনি নেন উইকেট-মেডেন। রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হয়ে যান পুরান। তিনি রিভিউ নিলেও পাল্টায়নি মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত। পুরানের বিদায়ে ভাঙে ৫৬ বলে ৭৪ রানের জুটি। তিনি ৩০ বলে ৩ চার ও ১ ছয়ে করেন ৩৪ রান। মোসাদ্দেক পরে আর বল হাতে পাননি।

পরের ওভারে সাকিবকে কভার দিয়ে চার মেরে ফিফটিতে পৌঁছান কিং। সেজন্য তার লাগে ৩৬ বল। তার নতুন সঙ্গী পাওয়েল এরপর ওঠেন জ্বলে। এক ওভার বিরতি দিয়ে নিজের শেষ ওভার করতে যাওয়া সাকিব লণ্ডভণ্ড হয়ে যান। তার প্রথম চার বলে যথাক্রমে ছক্কা, চার, ছক্কা ও ছক্কা মারেন পাওয়েল। ফলে প্রথম তিন ওভারে কেবল ১৫ রান দেওয়া সাকিব এক ওভারেই দিয়ে ফেলেন ২৩ রান!

এরপর পাওয়েলের তাণ্ডবের শিকার হন লাইন-লেংথ নিয়ে ভুগতে থাকা তাসকিন। তিনি হজম করেন ২ ছক্কা ও ১ চার। অন্যপ্রান্তে দর্শক বনে যাওয়া কিংকে বিদায় করেন বাঁহাতি পেসার শরিফুল। বড় শট খেলতে গিয়ে কাটারে পরাস্ত হয়ে সাকিবের তালুবন্দি হন তিনি। এতে ভাঙে পাওয়েলের সঙ্গে তার ২৮ বলে ৬৩ রানের আক্রমণাত্মক জুটি। পরের বলে সিঙ্গেল নিয়ে ফিফটি স্পর্শ করেন পাওয়েল।

ইনিংসের শেষ ওভারের প্রথম বলে রোমারিও শেফার্ডকে আউট করেন শরিফুল। মোস্তাফিজের করা আগের ওভারে লিটনের দারুণ চেষ্টা সত্ত্বেও ক্যাচ তুলে বেঁচে গিয়েছিলেন তিনি। ৫ বলে শেফার্ডের রান ৩। তবে শেষটা রাঙাতে পারেননি শরিফুল। ওডিন স্মিথ পরের ৪ বল খেলে ১ ছক্কায় করেন অপরাজিত ১১ রান। একদম শেষ বলে স্ট্রাইক পেয়ে পাওয়েল ছক্কা মারেন ডিপ মিড উইকেট দিয়ে।

মাত্র তিন ওভারেই ১৫.৩৩ ইকোনমিতে ডানহাতি পেসার তাসকিন দেন ৪৬ রান। অথচ সাম্প্রতিক সময়ে অসাধারণ সব পারফরম্যান্স এসেছে তার কাছ থেকে। শরিফুলের চার ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ তুলে নেয় ৪০ রান। সাকিব একই সংখ্যক ওভারে খরচ করেন ৩৮ রান। এছাড়া, চার ওভার করে হাত ঘুরিয়ে মোস্তাফিজ ৩৭ ও শেখ মেহেদী ৩১ রান দেন।

Comments

The Daily Star  | English
Default loans

High bad loans a 'big threat' to financial sector: BB

The central bank said in quarterly review on money and exchange rate

3h ago