তৃতীয় দিনে কঠিন পথ পাড়ি দেওয়ার চ্যালেঞ্জ

Shakib Al Hasan & Liton Das
তৃতীয় দিনে সাকিব, লিটন, মুমিনুলদের ব্যাট হাতে বড় ভূমিকা রাখতে হবে। ছবি: এএফপি

১৬২ রানে পিছিয়ে থেকে নেমে শুরুতে কিছু আলোর রেখা পাওয়া গেলেও তা মিলিয়ে যেতে দেরি হলো না। থিতু হয়ে কাটা পড়লেন তামিম ইকবাল। বোলিংয়ের নায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ তিন নম্বরে সুযোগ ব্যাট হাতে করলেন হতাশ। দাপট জারি রেখে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের দিকেই রাখল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

অ্যান্টিগা টেস্টে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে ম্যাচের যা অবস্থা তাতে তৃতীয় দিনে ম্যাচ শেষ হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা আছে। বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস ১০৩ রানে গুটিয়ে দেওয়ার পর ২৬৫ রানে থামে ক্যারিবিয়ানরা। দ্বিতীয় ইনিংসে নেমে ২ উইকেটে ৫০ রান তুলে দিন শেষ করেছে সাকিব আল হাসানের দল।

প্রথম ইনিংসে গোল্ডের ডাক পাওয়া মাহমুদুল হাসান জয় অপরাজিত আছেন ১৮ রান করে। নিজেকে হারিয়ে খোঁজা নাজমুল হোসেন শান্ত ব্যাট করছেন ৮ রানে।

ইনিংস হার এড়াতে এখনো বাংলাদেশকে করতে হবে ১১৮ রান। ম্যাচের পরিস্থিতি, ব্যাটারদের সাম্প্রতিক ফর্ম আর কন্ডিশন বাধা মিলিয়ে কাজটা খুব সহজ না। ইনিংস হার এড়ালেও ১১৮ রান করার পরে প্রতিপক্ষকে কত রানের লিড দিতে পারবে এটাও বড় প্রশ্ন।

দিনের শেষ ঘণ্টায় নেমে শুরুতে নড়বড়ে ছিলেন তামিম। অস্বস্তি কাটিয়ে টিকে গিয়ে কিছু বাউন্ডারি পেয়ে থিতু হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তার বরাবরের হন্তারক কেমার রোচকেও সামলে ফেলেছিলেন। কিন্তু বিদায় ওই বিশ-ত্রিশের ঘরেই। জেডল সিলসের বেরিয়ে যাওয়া বলে খোঁচা মেরে ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। বা দিকে ঝাঁপিয়ে তা লুফে নেন জশুয়া দা সিলভা। চার বাউন্ডারিতে তামিম ফেরেন ৩১ বলে ২২ রান করে।

এরপর তিন নম্বরে চমক দেখায় বাংলাদেশ দল। শান্তর জায়গায় নামানো হয় মিরাজকে। দিনের শেষভাগে ছন্দহীন ব্যাটার পাঠাতে চায়নি হয়ত দল। তবে যাইহোক, এই ফাটকা কাজে লাগেনি। আলজেরি জোসেফের বলে স্লিপে ধরা দেওয়ার আগে মিরাজ টিকেন ৫ বল। রান করেন কেবল ২।

ছন্দ হারিয়ে জায়গা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়া শান্ত চারে নেমে তেমন একটা অসুবিধায় পড়েননি। ২৩ বল সামলেছেন স্বস্তি নিয়েই। প্রথম ইনিংসে প্রথম বলেই বিদায় নেওয়া জয় এদিন শুরু থেকে সতর্ক। ধীরলয়ে খেলে তিনি ১৮ রান তুলেছেন ৬০ বলে।

এর আগে বাংলাদেশকে খুশির উপলক্ষ এনে দেন মিরাজ। ৫৯ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ক্যারিবিয়ানদের আচমকা ধসের নায়ক তিনি। তবে উইকেট দুটোর বেশি না পেলেও সারাদিন দারুণ বল করে গেছেন দুই ডানহাতি পেসার ইবাদত হোসেন ও খালেদ আহমদ। ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট- জার্মেইন ব্ল্যাকউড জুটি যখন চোখ রাঙাচ্ছিল তখন ব্রেক থ্রো আনেন খালেদ। সেঞ্চুরির কিনারে (৯৪) থাকা ক্যারিবিয়ান অধিনায়ককে নিচু হয় ভেতরে ঢোকা এক ডেলিভারিতে এলডব্লিউর শিকার বানান খালেদ। এরপরই মূলত ধসের শুরু। ৩ উইকেটে ১৯৭ থেকে ২৬৫ রানে গুটিয়ে যায় স্বাগতিকরা।

ইবাদত ছিলেন বরাবরের মতই ঝাঁজালো। প্রথম দিনের এক উইকেটের সঙ্গে এদিন তিনি ফেরান কেমার রোচকে। তবে ফিল্ডারদের সমর্থন পেলে তার ফিগার হতো সবচেয়ে ভাল। তার বলে ক্যাচ পড়েছে, ব্যাটসম্যানের ব্যাটে বল লাগলেও টের পায়নি।

পেসারদের এমন বোলিংয়ের সুবিধা পুরো কাজে লাগান মিরাজ। রানের চাকা চেপে ধরে স্বাগতিকদের অস্বস্তি বাড়িয়ে উইকেট আদায় করেন তিনি। কাইল মেয়ার্স, জশুয়া দা সিলভা, আলজেরি জোসেফদের ফেরান দারুণ কিছু ডেলিভারিতে।

তবে ভালো বোলিংয়ের গুণ থাকছে না ব্যাটিং ব্যর্থতায়। তৃতীয় দিনে প্রতিপক্ষের কাজটা কঠিন করতে জ্বলে উঠার বিকল্প নেই লাল সবুজের প্রতিনিধিদের। সেটা তারা কতটা পারবেন দেখার বিষয়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

(দ্বিতীয় দিন শেষে) 

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ১০৩

ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংস: (আগের দিন ৯৫/২) ১১২.৫ ওভারে ২৬৫ (ব্র‍্যাথওয়েট ৯৪, বনার ৩৩, ব্ল‍্যাকউড ৬৩, মেয়ার্স ৭, ডা সিলভা ১, জোসেফ ০, রোচ ০, মোটি ২৩*, সিলস ১; মুস্তাফিজ ১/৩০, খালেদ ২/৫৯, ইবাদত ২/৬৫, সাকিব ১/৪৮, মিরাজ ৪/৫৯, শান্ত ০/০)

বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস: ২০ ওভারে ৫০/২ (তামিম ২২, জয় ১৮*, মিরাজ ২, শান্ত ৮*; রোচ ০/১৯, সিলস ০/১৬, জোসেফ ২/১৪, মেয়ার্স ০/১) 
 

Comments

The Daily Star  | English

‘People's will, not mine’

Yunus tells Malaysia's Bernama why he stepped into Bangladesh's political hot seat

2h ago