দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে সাকিবদের হতাশায় ডোবালেন সেই মেয়ার্স

Kyle Mayers
ফাইল ছবি: ফিরোজ আহমেদ

সকালের শুরুটা নাকি বলে দেয় দিনটা কেমন যাবে, তবে সেন্ট লুসিয়ায় বাংলাদেশ দলের ক্ষেত্রে তা আর খাটছে না। প্রথম সেশনে ৪ উইকেট তুলে ম্যাচে ফিরেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু বাকি দুই সেশনে বিস্তর খাটুনিয়ে মিলল স্রেফ এক উইকেট। এই সময়ে দুটি গুরুত্বপূর্ণ জুটির পাশাপাশি কাইল মেয়ার্স দাপুটে সেঞ্চুরিতে সাকিব আল হাসানদের করে দিয়েছেন ম্লান। চট্টগ্রামে গত বছর বাংলাদেশকে হারাতে করা ডাবল সেঞ্চুরিটা মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি।

শনিবার সেন্ট লুসিয়া টেস্টের দ্বিতীয় দিনও স্বাগতিকদের পক্ষে। বাংলাদেশের ২৩৪ রানের জবাবে ৫ উইকেট হাতে রেখে ১০৬ রানে এগিয়ে গেছে স্বাগতিকরা।

মেয়ার্সের দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরিতে দিনশেষে ক্যারিবিয়ানদের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ৩৪০ রান। ১৮০ বলে ১২৬ রানে অপরাজিত আছেন মেয়ার্স। তার সঙ্গে ৯২ রানের জুটিতে সঙ্গ দেওয়া জশুয়া দা সিলভা ক্রিজে ১০৬ বলে ২৬ রানে।

দিনের প্রথম সেশনে ৭০ রানে ৪ উইকেট নেওয়ার পর দ্বিতীয় সেশনে ১১১ রান দিয়েও উইকেটশূন্য ছিল বাংলাদেশ। শেষ সেশনের শুরুতে জার্মেইন ব্ল্যাকউডকে আউট করা গেলেও ওই সেশনে ৩৪ ওভারে আর কোন বিপর্যয় ছাড়াই স্বাগতিকরা যোগ করে ফেলে ৯২ রান।

অর্থাৎ প্রথম সেশন নিজেদের করে নিলেও বাকি দুই সেশনে একদম কোণঠাসা হয়ে যায় বাংলাদেশ। এর প্রায় পুরোটা সময়ই দাপট দেখিয়েছেন মেয়ার্স।

উদ্বোধনী জুটিতে ১০০ রান উঠার পর ধস নেমেছিল তাদের ইনিংসে। শরিফুল ইসলামের ব্রেক থ্রোর পর উইকেট পেয়েছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। পরে খালেদ আহমেদ জোড়া শিকার ধরলে ৩২ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে কেঁপে উঠেছিল ক্যারিবিয় ইনিংস।

সেই পরিস্থিতিতে ৫ম উইকেটে ব্ল্যাকউডের সঙ্গে ১১৬ রানের জুটি গড়েন মেয়ার্স। নিজের চিরায়ত আগ্রাসী ঢঙ বাড়াতে থাকেন রান। মিরাজ, সাকিব কাউকেই থিতু হতে দেননি। পেসারদের খেলেছেন অনায়াসে।

ক্যারিবিয় ছন্দময় ক্ল্যাসিকাল ঘরানায় ব্যাট করে বের করেছেন একের পর এক বাউন্ডারি। কখনো কাট, কখনো পাঞ্চ, কখনোবা উড়িয়েছেন পুলে।

চা-বিরতির পর নেমে প্রথম দিকে ছিলেন সতর্ক। বাংলাদেশও আটসাট বল করছিল। মিরাজের বলে বাজে শট খেলে ব্ল্যাকউড ৪০ করে ফেরার পর চাপ বাড়ছিল তাদের উপর। জশুয়াকে নিয়ে ওই সময়টা সামাল দেন দারুণভাবে।

ধৈর্য্য ধরে মেয়ার্স অপেক্ষা করেছেন আলগা বলের। সেটা পেয়ে গেলেই হাতছাড়া করেননি। শেষ সেশনের প্রথম ১২ ওভারে এসেছিল কেবল ১০ রান, পড়েছিল এক উইকেট।

এরপর বাংলাদেশ দ্বিতীয় নতুন বল নিতেই খসতে থাকে রান। রান আসতে থাকে দ্রুত। ধীরে ধীরে তিন অঙ্কের দিকে এগুতে থাকেন মেয়ার্স। শরিফুলকে চার-ছক্কা মেরে ১৫০ বলে পুরো করেন সেঞ্চুরি। ১২৬ রানের ইনিংসে এখনো পর্যন্ত ১৫ চার আর দুই ছক্কা মেরেছেন তিনি। 

চট্টগ্রামে নিজের অভিষেক টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ জেতানো ২১০ রান করেছিলেন তিনি। এরপর এটাই টেস্টে তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। এরমাঝে করেছেন আর কেবল দুই ফিফটি।

মেয়ার্সের সঙ্গে জুটি বাধা জশুয়া খেলছেন একদম সতর্ক পথে। প্রথম ৫০ বলে তার রান ছিল কেবল ৬। এরপর ধীরে ধীরে তিনিও সুযোগ বুঝে রান বের করেছেন।

তাদের ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের বোলিং লেগেছে নির্বিষ। পেসাররা জায়গায় রাখতে পারছিলেন না সেভাবে। বেশ কিছু বল পড়ছিল লেগ স্টাম্পের বাইরে। অধিনায়ক সাকিবকে লেগেছে একদম গড়পড়তা।

ম্যাচের এখন যা পরিস্থিতি, তাতে বাংলাদেশের আশা অনেকটা মলিন। এখনি ম্যাচটা হয়ে পড়েছে ভীষণ কঠিন। ক্যারিবিয়ানরা যদি লিডটা দুশো ছাড়িয়ে নিয়ে যায় তাহলে বড় হারের শঙ্কায় চেপে ধরবে সাকিবদের। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

(দ্বিতীয় দিন শেষে)

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ২৩৪

ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংস: (আগের দিন ৬৭/০) ১০৬ ওভারে ৩৪০/৫ (ব্র্যাথওয়েট ৫১, ক্যাম্পবেল ৪৫, রিফার ২২, বনার ০, ব্ল্যাকউড ৪০, মেয়ার্স ১২৬*, জশুয়া ২৬*; শরিফুল ১/৬৭, খালেদ ২/৭৭, সাকিব ০/৪৬, ইবাদত ০/৫৬, মিরাজ ২/৬৮)।

Comments

The Daily Star  | English

‘Use firearms in self-defence’

After a police officer was attacked during a raid in the port city, Chattogram police chief Hasib Aziz told officers to be ready to use arms for self-defence.

6h ago