মোসাদ্দেকের ঘূর্ণির পর লিটনের ব্যাটে সমতা বাংলাদেশের

বল হাতে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করে জিম্বাবুয়ের দেওয়া লক্ষ্যটা হাতের নাগালেই রাখেন পার্টটাইম বোলার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। এরপর ব্যাট হাতে জ্বলে ওঠেন লিটন দাস। তাতে কাজটা সহজেই করেছে বাংলাদেশ। তাতে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে সিরিজে ফিরে আসল টাইগাররা।

বল হাতে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করে জিম্বাবুয়ের দেওয়া লক্ষ্যটা হাতের নাগালেই রাখেন পার্টটাইম বোলার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। এরপর ব্যাট হাতে জ্বলে ওঠেন লিটন দাস। তাতে কাজটা সহজেই করেছে বাংলাদেশ। তাতে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে সিরিজে ফিরে আসল টাইগাররা।

রোববার হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়েকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৩৫ রান করে জিম্বাবুয়ে। জবাবে ১৫ বল হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছায় সফরকারীরা।

বাংলাদেশের জয়টা মূলত হাতের নাগালে এনে দেন মোসাদ্দেক। বল হাতে দারুণ জ্বলে ওঠেন তিনি। জিম্বাবুয়ের টপ অর্ডার একাই ভেঙে দেন। প্রথম পাঁচটি উইকেটই তুলে নেন। তাতেই ৩১ রানেই প্রথম সারির পাঁচ উইকেট হারিয়ে ফেলে স্বাগতিকরা। এরপর রায়ান বার্লকে নিয়ে সিকান্দার রাজা লড়াই করলে লড়াইয়ের পুঁজি পায় দলটি।

সাদামাটা লক্ষ্যে শুরু থেকেই অসাধারণ ব্যাটিং করেন লিটন দাস। টানাকা চিভাঙ্গার টানা তিন বলে মারেন দুটি ছক্কা ও একটি চার। যদিও সঙ্গী মুনিম শাহরিয়ার আজও ব্যর্থ। ওপেনিং জুটিতে ৩৭ রান এলেও সেখানে মুনিমের অবদান মাত্র ৭। লক্ষ্য ছোট হলেও আগ্রাসী ব্যাটিং করতে থাকেন লিটন। টানাকা চিভাঙ্গার টানা তিন বলে দুটি ছক্কা ও একটি চার মারেন তিনি।

বিপিএলে দারুণ পারফর্ম করে জাতীয় দলে জায়গা করে নিয়েছিলেন মুনিম। তবে জাতীয় দলে ঠিক তার ঝলকটা এখনও দেখাতে পারছেন না। অভিষেক ম্যাচে ১৭ রান করার পর আর দুই অঙ্কই স্পর্শ করতে পারেননি। এদিন রিচার্ড এনগারাভার স্লোয়ার বুঝতেই পারেননি। ফুলার লেংথে থাকা বলে জায়গায় দাঁড়িয়ে অনেকটা ফ্লিকের মতো করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু লাইন মিস করলে বোল্ড হয়ে যান তিনি।

এরপর লিটনের সঙ্গে দলের হাল ধরেন এনামুল হক বিজয়। দুই ব্যাটারই বেশ স্বচ্ছন্দে ব্যাট করতে থাকেন। এরমধ্যেই টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ ফিফটিও তুলে নেন লিটন। তবে ইনিংসের নবম ওভারে শেন উইলিয়ামসের বলে সুইপ করতে গিয়ে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়েন তিনি। তাতে ভাঙে ৩১ রানের জুটি।

লিটনকে হারানোর ধাক্কা সামলাতে না সামলাতে সাজঘরে ফিরেন বিজয়ও। রাজার করা মিডল স্টাম্প ও লেগ স্টাম্পের মাঝে রাখা ফুলার লেংথের বলে ঘোরাতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে টপএজে হয়ে আকাশে উঠলে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ারে সহজ ক্যাচ লুফে নেন ওয়েলিংটন মাসাকাদজা। এরপর নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে বাকি কাজ শেষ করে আফিফ হোসেন। অবিচ্ছিন্ন ৫৫ রানের জুটিতে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন এ দুই ব্যাটার।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৬ রানের ইনিংস খেলেন লিটন। ৩৩ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। ২৮ বলে ৩০ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন আফিফ। ২১ বলে ১৯ রান করে অপরাজিত থাকেন শান্ত। বিজয়ের ব্যাট থেকে আসে ১৬ রান। 

এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে জিম্বাবুয়ে। মূলত পার্টটাইম বোলার মোসাদ্দেকের ঘূর্ণিতে পড়ে দলটি। ক্যারিয়ারে ১৯টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে যেখানে এ স্পিনার উইকেট নিয়েছেন মাত্র সাতটি, সেখানে এদিন পাঁচ পাঁচটি। ২৪ বলের ১৫টিই ডট দিয়ে খরচ করেন ২০ রান। ফলে দলীয় ৩১ রানেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে জিম্বাবুয়ে।

মোসাদ্দেকের প্রথম বলেই জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে গিয়ে খেসারৎ দেন রেগিস চাকাভা। উইকেটের পেছনে দারুণ ক্যাচ লুফে নেন সোহান। সে ওভারের শেষ বলে ফেরান ওয়েসলি মাধেভেরেকে। কাভারে শেখ মাহেদি হাসানকে ক্যাচিং অনুশীলন করিয়ে সাজঘরমুখী হন তিনি। ফলে প্রথম ওভারেই জোড়া ধাক্কায় চাপে পড়ে স্বাগতিকরা।

এর পরের তিন ওভারের প্রতি ওভারেই একটি করে উইকেট তুলে নেন মোসাদ্দেক। জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ তুলে দেন লিটন দাসের হাতে। শেন উইলিয়ামস ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে টাইমিংয়ে হেরফের করে ক্যাচ তুলে দেন বোলার মোসাদ্দেকের হাতে।

টানা চতুর্থ ওভার বল করে নিজের কোটা শেষ করে মোসাদ্দেক। এই ওভারেই মিলে তার ফাইফার। টি-টোয়েন্টি তো বটেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ক্যারিয়ারেই এটা তার প্রথম ফাইফার। অফস্টাম্পের বাইরের বলে স্লগ সুইপ করেতে গিয়ে আকাশে তুলে দেন মিল্টন শুম্বা। স্কয়ার লেগে দৌড়ে এসে ঝাঁপিয়ে অসাধারণ এক ক্যাচ লুফে নেন হাসান মাহমুদ।

এরপর অবশ্য রায়ান বার্লকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েন সিকান্দার রাজা। ষষ্ঠ উইকেটে ৮০ রানের জুটি গড়েন তারা। বার্লকে বোল্ড করে এ জুটি ভাঙেন হাসান। পরের ওভারে মোস্তাফিজুর রহমানকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে আকাশে বল তুলে দিয়ে মুনিম শাহরিয়ারের ক্যাচে পরিণত হন রাজা।

টানা দ্বিতীয় ম্যাচে ফিফটি তুলে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬২ রানের ইনিংস খেলেন রাজা। ৫৩ বলের লড়াকু ইনিংসটি তিনি সাজান ৪টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে। বার্লের ব্যাট থেকে আসে ২ রান। ৩১ বলে ৩টি চারের সাহায্যে এ রান করেন এ অলরাউন্ডার। এছাড়া লুক জংবি কেবল দুই অঙ্ক স্পর্শ করতে পেরেছেন। ১১ রান আসে তার ব্যাট থেকে।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh Bank dissolves National Bank board

Bangladesh Bank again dissolves National Bank board

The bank’s sponsor director Khalilur Rahman made the new chairman

2h ago