ক্যাচ মিসের মহড়ায় আফগানদের কাছে বড় হার

অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ, আফিফ হোসেন সহ এগিয়ে এলেন আরও দুই ফিল্ডার। কিন্তু তাদের থামিয়ে দেন বোলার নাসুম আহমেদ। কিন্তু কি করলেন তিনি? সহজ ক্যাচ গেল হাত ফসকে। রানের খাতা খোলার আগেই যেখানে ফিরতে পারতেন হজরতউল্লাহ জাজাই, সেখানে খেললেন হার না মানা এক ফিফটি। অথচ ম্যাচের চিত্রটা বদলে যেতে পারতো প্রথম ওভারেই।
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ, আফিফ হোসেন সহ এগিয়ে এলেন আরও দুই ফিল্ডার। কিন্তু তাদের থামিয়ে দেন বোলার নাসুম আহমেদ। কিন্তু কি করলেন তিনি? সহজ ক্যাচ গেল হাত ফসকে। রানের খাতা খোলার আগেই যেখানে ফিরতে পারতেন হজরতউল্লাহ জাজাই, সেখানে খেললেন হার না মানা এক ফিফটি। অথচ ম্যাচের চিত্রটা বদলে যেতে পারতো প্রথম ওভারেই।

শনিবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের কাছে ৮ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটারদের ব্যর্থতায় নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে কোনো মতে ১১৫ রান করে টাইগাররা। জবাবে ১৪ বল বাকি থাকতে লক্ষ্যে পৌঁছায় আফগানিস্তান। ফলে ১-১ এ সমতা ফিরিয়ে সিরিজ শেষ করল সফরকারী দলটি।

সাদামাটা পুঁজি নিয়ে লড়াই করতে হলে শুরুতেই প্রতিপক্ষকে চেপে ধরতে হতো বাংলাদেশকে। পাশাপাশি ফিল্ডিংয়ে থাকতে হতো দুর্দান্ত। বানাতে হতো হাফচান্সকে ফুলচান্সে। সেখানে একের পর এক সহজ ক্যাচ মিস। তাতে ঠিক হয় প্রবাদের কথাটি। ম্যাচ মিস মানে ম্যাচ মিস। হারতেই হয় টাইগারদের।

যদিও ব্যাটিং ব্যর্থতায় পুঁজিটা লড়াকু করতে না পারায় অবশ্য প্রত্যাশাটা ছিল কম। কিন্তু সুযোগগুলো লুফে নিতে পারলে অন্তত হারের ব্যবধানটা কমাতে পারতো বাংলাদেশ। কিন্তু ব্যাটারদের ধারাবাহিকতা ধরে রাখেন ফিল্ডাররা।

দিনের প্রথম সুযোগটা হাতছাড়া হলেও দ্বিতীয় ওভারেই ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছিলেন শেখ মেহেদী হাসান। রহমানউল্লাহ গুরবাজকে ফিরিয়ে দিলেন তিনি। সে ধারায় আরও একাধিক উইকেট পেলে হয়তো লড়াইটা চালাতে পারতো বাংলাদেশ। কিন্তু এদিন ভাগ্যটাও সঙ্গে ছিল আফগানদের।

পঞ্চম ওভারে উসমান গনির বিরুদ্ধে রিভিউ নিয়েছিলেন নাসুম। কিন্তু আম্পায়ার্স কলে বেঁচে যান তিনি। সাকিব আল হাসানের বলে তো স্টাম্প ঘেঁষে বল গেলেও বোল্ড হওয়া থেকে বেঁচে যান গনি ও জাজাই। মোস্তাফিজের বলেও বেশ কয়েকবার বাঁচেন একই ঢঙ্গে। উল্টো ধীরে ধীরে সেট হয়ে যান এ দুই ব্যাটার। পড়ে সাকিবকে তো টানা দুই বলে দুটি ছক্কা হাঁকান গনি।

ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা এ জুটি ভাঙার সুযোগ ছিল বাংলাদেশের। বল হাতে ফিরে টাইগারদের ব্রেক থ্রু দিতে পারতেন সেই শেখ মেহেদী। দলীয় ৭৭ রানে স্লগ করতে গিয়ে মিড উইকেটে সহজ ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন গনি। ফেলে দেন আফিফ হোসেন। স্কোরবোর্ডে ১০ রান যোগ হওয়ার পর মেহেদী আরও একবার সুযোগ তৈরি করে দেন। এবার ফেলেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। বাংলাদেশের হার নিশ্চিত হয়ে যায় তখনই।

শেষ পর্যন্ত গনিকে থামান মাহমুদউল্লাহ। তবে এর আগেই কাজের কাজটা করে যান তিনি। ৪৮ বলে খেলেন ৪৭ রানের ইনিংস। ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় সাজান নিজের ইনিংস। তবে অপরাজিত ৫৯ রানের ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন জাজাই। ৪৫ বলে ৩টি চার ও ৫টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি।

অথচ এদিন নিজের শততম ম্যাচে খেলতে নেমে নায়ক হওয়ার সুযোগ ছিল মুশফিকুর রহিমের। ছিল অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহরও। অন্য ব্যাটাররা যেখানে সেট হতে পারেননি সেখানে অন্তত তারা সেট হতে পেরেছিলেন। কিন্তু ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। ফলে লড়াই করার পুঁজিটা সে অর্থে পায়নি বাংলাদেশ।

টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই আফগান বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে চাপে ছিল বাংলাদেশ। দলীয় ৪৫ রানেই প্রথম সারীর চার উইকেট হারিয়ে দারুণ চাপে পড়ে দলটি। মুনিম শাহরিয়ার, মোহাম্মদ নাঈম শেখ, লিটন দাস ও সাকিব আল হাসান কেউই পারেননি দায়িত্ব নিতে।

পঞ্চম উইকেটে মুশফিকের সঙ্গে দলের হাল ধরেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। ৪৩ রানের জুটি গড়ে চাপ সামলে নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু রানের গতি বাড়াতে পারেননি। যখনই চেষ্টা করেন, তখনই আউট হন তারা। ব্যর্থ হয়েছেন আফিফ হোসেন ও শেখ মেহেদী হাসানও। ফলে সাদামাটা পুঁজি নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় টাইগারদের।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩০ রান আসে মুশফিকের ব্যাট থেকে। ২৫ বলে ৪টি চারের সাহায্যে এ রান করেন তিনি। এছাড়া মাহমুদউল্লাহ করেন ২১ রান। আফগানদের পক্ষে দারুণ বল করেন দুই পেসার ফারুকি ও আজমত। ১৮ রানের খরচায় ৩টি উইকেট উইকেট নেন ফারুকি। আজমত ৩টি উইকেট নেন ২২ রানের বিনিময়ে। ১টি উইকেট পেলেও ৪ ওভারে মাত্র ১৪ রান খরচ করেন নবি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১১৫/৯ (মুনিম ৪, নাঈম ১৩, লিটন ১৩, সাকিব ৯, মুশফিক ৩০, মাহমুদউল্লাহ ২১, আফিফ ৭, মেহেদী ০, নাসুম ৫*, শরিফুল ০, মোস্তাফিজ ৬*; ফারুকি ৩/১৮, নবি ১/১৪, আজমত ৩/২২, রশিদ ১/৩০, আশরাফ ০/১০, করিম ০/১৭)।

আফগানিস্তান: ১৭.৪ ওভারে ১২১/২ (জাজাই ৫৯*, গুরবাজ ৩, গনি ৪৭, রাসুলি ৯*; নাসুম ০/২৯, শেখ মেহেদি ১/১৯, শরিফুল ০/২৫, সাকিব ০/৩২, মোস্তাফিজ ০/১৩, মাহমুদউল্লাহ ১/২)।

ফলাফল: আফগানিস্তান ৮ উইকেটে জয়ী।

সিরিজ: ১-১ ব্যবধানে ড্র।

Comments

The Daily Star  | English
World Bank

Economy to remain under stress

The World Bank has revised down its growth forecast for fiscal 2023-24 to 5.6 percent as the Bangladesh economy is expected to remain stressed throughout the year thanks to persistent inflationary pressures and external sector challenges.

3h ago