বাংলাদেশকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দিলেন লিটন
টেস্ট ও ওয়ানডে খেলছিলেন দারুণ। কিন্তু ঠিক তার উল্টো যেন টি-টোয়েন্টিতে। এ সংস্করণে সে অর্থে সফল ছিলেন না লিটন দাস। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখেও পড়েছিলেন। এমনকি বিশ্বকাপ শেষে বাদও পড়েছিলেন স্কোয়াড থেকে। তবে নিজের চেনা ছন্দ এবার ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণেও ফিরিয়ে আনেন এ উইকেটরক্ষক ব্যাটার। যদিও সতীর্থদের কাছ থেকে সে অর্থে সাহায্য পাননি। তবে লড়াই করার পুঁজি এনে দিয়েছেন বাংলাদেশ দলকে।
বৃহস্পতিবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৫৫ রান করেছে বাংলাদেশ।
টি-টোয়েন্টিতে এর আগের ১৮ ইনিংসে কোনো ফিফটি ছিল না লিটনের। ভালো সূচনা পেয়েছিলেন অনেক ম্যাচেই। হাফসেঞ্চুরির আভাসও দিয়েছিলেন। কিন্তু হুটহাট আউট হয়ে গেছেন। এদিন কব্জির কারিকরিতে খেলেন নজরকাড়া বেশ কিছু শট। তাতে পেয়েছেন ছন্দের ছোঁয়া। ৩৪ বলে ফিফটি স্পর্শ করা এ ব্যাটার শেষ পর্যন্ত খেলেন ৬০ রানের ইনিংস। যদিও ফিফটির পর কিছুটা শ্লথ গতিতে ব্যাট করেন। তার ৪৪ বলের ইনিংসে ছিল ৪টি চার ও ২টি ছক্কা। মজার ব্যাপার এর আগে ২০২০ সালের মার্চে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সবশেষ হাফসেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার দিনেও করেছিলেন ৬০ রান। সেবার অবশ্য অপরাজিত ছিলেন।
বিপিএলে এবার বেশ কিছু ঝড়ো ইনিংস খেলে আফগানিস্তান সিরিজে জায়গা করে নিয়েছিলেন মুনিম শাহরিয়ার। এদিন মোহাম্মদ নাঈম শেখের সঙ্গে ইনিংসের গোড়াপত্তন করতে এসে সূচনাতেও তেমন কিছুরই আভাস দিচ্ছিলেন। দ্বিতীয় বলেই কভারের উপর দিয়ে মারেন দারুণ এক বাউন্ডারি। কিন্তু সে ধারা ধরে রাখতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত ১৭ রান করলেও খেলতে হয়েছে ১৮ বল। রশিদ খানের বলে এলবিডাব্লিউ হওয়ার মুহূর্তের মধ্যেই সতীর্থের সঙ্গে কোনোরকম আলোচনা না করেই নিয়েছেন রিভিউ। কিন্তু সেখানে দেখা যায় পরিষ্কার আউট তিনি। তাতে উল্টো একটি রিভিউ নষ্ট হয় বাংলাদেশের
এদিন টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করতে নামা বাংলাদেশ অবশ্য শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে। ব্যক্তিগত ২ রানেই ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম শেখ এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়েন। ওয়ানডেতে নিয়মিত টাইগারদের ওপেনিং জুটি ভেঙে দেওয়া এ পেসার এদিনও বাংলাদেশকে প্রথম ধাক্কাটা দেন ফজল হক ফারুকি। এ বাঁহাতি পেসারের ভেতরের দিকে ঢোকা ফুলার লেন্থের বলে ব্যাটে লাগাতে ব্যর্থ হন নাঈম। আম্পায়ার আউট না দিলেও রিভিউতে নিয়ে সফল হয় আফগানিস্তান।
দলীয় ৪৭ রানে বড় ধাক্কাটা খায় বাংলাদেশ। ফিরে যান অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। বিপিএলে টুর্নামেন্ট সেরা হওয়া এ তারকা কাইসের বলে হাঁকাতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে সহজ ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ব্যর্থ হন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহও। আজমতউল্লাহ ওমরজাইর বলে আউট হয়েছেন আনাড়ির মতো। তার লেগ স্টাম্পে রাখা ফুলটসে বলে ফ্লিক করতে গিয়ে পড়েন এলবিডাব্লিউর ফাঁদে।
তবে এক প্রান্ত ধরে রাখেন লিটন। পঞ্চম উইকেটে কিছুটা সঙ্গ পান আফিফ হোসেনের কাছ থেকে। গড়েন ৪৬ রানের জুটি। লিটনকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন ফারুকি। তার স্লোয়াল শর্ট ডেলিভারিতে টাইমিংয়ে হেরফের করে সহজ ক্যাচ তুলে দেন আজমতউল্লাহর হাতে। এরপর টিকতে পারেননি আফিফও। ব্যক্তিগত ২৫ রানে ফিরেছেন আজমতউল্লাহর বলে। দ্রুত রান তোলার তাগিদে অভিষিক্ত ইয়াসির আলী ও শেখ মেহেদী হাসান পড়েছেন রানআউটের ফাঁদে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৫১/৮ (মুনিম ১৭, নাঈম ২, লিটন ৬০, সাকিব ৫, মাহমুদউল্লাহ ১০, আফিফ ২৫, ইয়াসির ৮, মেহেদী ৫, নাসুম ৩*; ফারুকি ২/২৭, মুজিব ০/২৪, রশিদ ১/১৫, নবি ০/১৯, কাইস ১/২১, আজমত ২/৩১, করিম ১-০-৫-০)।
Comments