পানির বিকল্প আছে?

ছবি: সংগৃহীত

ঋতু বদলের পালায় প্রকৃতিতে হেমন্ত এলেও তাপমাত্রা এখনও কমেনি। তীব্র রোদ আর গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। এমন আবহাওয়ায় মানুষের শরীরে পানিশূন্যতা তৈরি হওয়া স্বাভাবিক।

প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান না করলে শরীরে পানির ঘাটতি দেখা দেয়। যা ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা। যার কারণে শরীরের নানা সমস্যা হতে পারে। পানি খাওয়ার মাধ্যমে শরীরের বর্জ্য দূর হয়, অক্সিজেনের ঘাটতি পূরণ হয় ও ক্লান্তিভাব কাটে।

পানির কোনো বিকল্প আছে কী? জানতে চাইলে হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পানির বিকল্প পানি। সুস্থ থাকতে পানির আর কোনো বিকল্প নেই।'

মানুষের শরীরে প্রায় ৬০ শতাংশ পানি। পানি ও লবণের ভারসাম্য নষ্ট হলেই ঘটে নানা শারীরিক অসুস্থতা।

পানিশূন্যতায় মানুষের শরীরে তৃষ্ণা ও স্নায়বিক পরিবর্তন—যেমন মাথা ব্যথা, অস্বস্তি, ক্ষুধা হ্রাস, প্রস্রাবের পরিমাণ হ্রাস, ক্লান্তি ও খিচুনি হতে পারে। বেশিরভাগ মানুষ শরীরের পানিশূন্যতা ৩ থেকে ৪ শতাংশ পর্যন্ত সহ্য করতে পারেন। ৫ থেকে ৮ শতাংশ পানি হ্রাস পেলে ক্লান্তি ও মাথা ঘুরতে পারে। শরীরের মোট পানির ১০ শতাংশেরও বেশি হ্রাস পেলে তীব্র তৃষ্ণার সঙ্গে শারীরিক ও মানসিক অবনতি ঘটতে পারে।

তাই পানিশূন্যতা রোধে সচেতন থাকতে হবে। ডা. লেলিন জানান, ৫০ থেকে ৫৫ কেজি ওজনের একজন সম্পূর্ণ সুস্থ মানুষের দৈনিক আড়াই থেকে ৩ লিটার পানি পান করা উচিত।

অনেকেই দৈনিক পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করেন না। অনেক বাচ্চাও পর্যাপ্ত পানি পান করতে চায় না। সেক্ষেত্রে অনেকেই পানির বিকল্প হিসেবে অন্যান্য পানীয় যেমন— ফলের জুস, সফট ড্রিংকস, চা বা কফি পান করে থাকেন।

তবে পানিশূন্যতা রোধে এনার্জি ড্রিংকস, কোমল পানীয়, ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় বা অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়—কোনোটাই কার্যকর নয় বলছেন গবেষকেরা।

ডা. লেলিন জানান, জন্মের পর ৬ মাস পর্যন্ত শিশুদের মায়ের দুধের কোনো বিকল্প নেই। মায়ের দুধ থেকেই তাদের প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পানির চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। ৬ মাসের পর থেকেই যেসব খাবারে পানির পরিমাণ বেশি থাকে তা শিশুদের শরীরে পানির চাহিদা পূরণে সাহায্য করে।

তিনি বলেন, 'কিন্তু বড়দের ক্ষেত্রে বিষয়টি একটু ভিন্ন। পানির বিকল্প হিসেবে জুস বা অন্য কোনো পানীয় গ্রহণ করলে তার মধ্যে জলীয় অংশ ছাড়াও যে অন্যান্য পুষ্টি উপাদান থাকে তা শরীরে সুষম খাদ্যের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। সেটা ক্ষতির কারণ হতে পারে। কাজেই জুস বা অন্যান্য পানীয় পানির বিকল্প নয়।'

অনেক বেশি ঘাম হলে, বমি বা ডায়রিয়া হলে স্যালাইন খাওয়া যেতে পারে। তবে অকারণে স্যালাইন না খাওয়াই ভালো। শরীরকে সুস্থ রাখতে ও ডিহাইড্রেটেড রাখতে পানি পান করার বিকল্প কিছুই নেই।

শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে অন্যান্য পানীয় বা পানিযুক্ত ফল বা স্যুপ জাতীয় খাবার খেলেও বেঁচে থাকার জন্য কোষে পানি (H2O) থাকতে হবে। যদি পর্যাপ্ত পানি পান না করা হয়, কোষগুলো পানিশূন্য হয়ে যায় এবং পরিপাকক্রিয়া ধীর হয়ে যায়।

অতিরিক্ত পরিমাণ পানি পান করারও কুফল রয়েছে। ডা. লেলিন বলেন, 'আমাদের শরীরের বর্জ্য এবং পানি বের করে দেয় কিডনি। কিডনির কাজ করার একটি সামর্থ্য রয়েছে। একে যদি সামর্থ্যের বাইরে কাজ করতে দেওয়া হয় তাহলে ধীরে ধীরে সে তার কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে। কাজেই পরিমাণ মতো পানি পান করতে হবে। কমও নয় অনেক বেশিও নয়।'

Comments

The Daily Star  | English

Response to J&K Terror Attack: India gives forces ‘operational freedom’

Indian Prime Minister Narendra Modi has given the country's military "operational freedom" to respond to a deadly attack in Kashmir last week, a senior government source told AFP yesterday, after New Delhi blamed it on arch-rival Pakistan.

3h ago