ছেলেদের শৌখিনতায় ব্রেসলেট

ছবি: সংগৃহীত

ছেলেদের গয়না পড়ার ইতিহাস নতুন কিছু নয়। সেই প্রাচীনকাল থেকেই ছেলেরা নিজেদের শৌর্যবীর্য প্রকাশে অলংকার ব্যবহার করে আসছে। প্রাচীনকালে যখন মানুষ জঙ্গলে শিকার করতে যেত তখন তাদের সঙ্গে থাকতো বিভিন্ন ধরণের অস্ত্র। কিছু কিছু অস্ত্র তারা নিজেদের শরীরের সঙ্গে লাগিয়ে বা ঝুলিয়ে রাখতেন। আর সেখান থেকেই শুরু হয় অলংকারের প্রচলন। কিন্তু ধীরে ধীরে অলংকার চলে আসে শুধুই নারীর দখলে।

বর্তমান সময়ে বিনোদন জগতের তারকাদের সঙ্গে মিল রেখে ছেলেরাও অলংকার পড়ছে। ছেলেদের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বহুল ব্যবহৃত অলংকার হলো ব্রেসলেট।

আজকাল রঙবেরঙের পছন্দমত ব্রেসলেটে বেশ মানানসই। বাজারে বিভিন্ন ধরনের ব্রেসলেটের প্রচলন আছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

ছবি: সংগৃহীত

মেটাল ব্রেসলেট: ছেলেরা মেটালের তৈরি ব্রেসলেট বেশি ব্যবহার করে থাকে। পিতল, মাটি, কাঠ, ইস্পাতের ওপর রাবার, চামড়া, কাপড়, তামা, লোহা, অষ্ট ধাতু, সুতা, এমনকি পশুর হাড় দিয়ে এই ধরনের ব্রেসলেট তৈরি হয়।

বিডেড ব্রেসলেট: স্টোন, কাঠের টুকরো এবং প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি এই ব্রেসলেট সবসময় হাতে পড়ে রাখার জন্য বেশ উপযোগী।

নাম লেখা ব্রেসলেট: ব্রেসলেটের উপর লেখা থাকে নিজের নাম বা পছন্দের মানুষের নাম। এটি দেখতেও আধুনিক আর রোমান্টিক মেজাজও নিয়ে আসে মনে।

লিঙ্ক ব্রেসলেট: একটা পর একটা স্টোন মেটালের কারুকার্য দিয়ে যুক্ত থাকে যা বিভিন্ন পার্টিতে পড়ার উপযোগী।

ছবি: সংগৃহীত

মাল্টি স্ট্রেন্ড ব্রেসলেট: অনেকগুলো চেন দিয়ে তৈরি এই ব্রেসলেটগুলো দেখতে খুবই স্মার্ট আর আধুনিক।

পার্ল ব্রেসলেট: মুক্তো শুধু মেয়েদের হাতেই নয়, ছেলেদের হাতেও ভালোই মানায়। তবে এর ব্যবহার বাংলাদেশে কম।

রিস্টওয়াচ ব্রেসলেট: ব্রেসলেটের সঙ্গে যদি ঘড়িও জুড়ে দেওয়া যায় তবে তো সোনায় সোহাগা। তাহলে আর ঘড়ি পড়ার বাড়তি ঝামেলা থাকলো না।

ছবি: সংগৃহীত

অন্যান্য ডিজাইনের ব্রেসলেট: এসব ছাড়াও আছে নমনীয় বা ফ্লেক্সিবল ব্রেসলেট যা ইচ্ছামতো ছোট-বড় করা যায়। দুই থেকে পাঁচটি আলাদা ধরনের উপাদান দিয়ে তৈরি ব্রেসলেট একসঙ্গে পরা যায়। একে বলা হয় কম্বো ব্রেসলেট। রাবার ও সুতার এক ডজন চিকন ব্রেসলেটের সেটও আজকাল পাওয়া যাচ্ছে। দেশী উপকরণে হাতে তৈরি ব্রেসলেটও বাজারে খুব চলছে বর্তমানে।

কোথায় কী পরবেন?

বড় বড় অনুষ্ঠান বা উৎসবে চেইন বা ঘড়িসহ নানা নকশার ব্রেসলেট বর্তমানে তরুণদের বিশেষ পছন্দ। তবে ছেলেদের হাতে সাধারণত ধাতব, রাবার বা চামড়ার ব্রেসলেট বেশি পড়তে দেখা যায়। কোনো ক্যাজুয়াল পোশাকের সঙ্গে সাধারণ পুঁতি বা চামড়ার ব্রেসলেট বেশ মানানসই। তবে স্মার্ট ক্যাজুয়াল পোশাকে সোনা, রুপা বা তামার ব্রেসলেটও ভালো লাগে। আনুষ্ঠানিক পোশাকের সঙ্গে ইস্পাত বা এ ধরনের ধাতব ব্রেসলেট পড়লে একটা আভিজাত্য ফুটে ওঠে ড্রেসাপে। সেমি ফরমাল পোশাকের সঙ্গে আবার চামড়া, কাঠ বা পুতির গয়না ব্যবহার করলে ভালো লাগে। তবে সবসময় ব্যবহারের জন্যে ছেলেরা রাবার, সুতা, ব্রোঞ্জ বা কাপড়ের ব্রেসলেট পরতে পারেন।

কোথায় কিনবো, দাম কেমন?

ব্রেসলেটের দাম সাধারণত নির্ভর করে কেনার স্থান ও তার উপকরণের ওপর। একটি ব্রেসলেটের দাম ১০ টাকা থেকে শুরু করে লাখ টাকাও ছাড়াতে পারে।

সেইলরের দোকানে ৪৯০ টাকা থেকে শুরু হয় ব্রেসলেটের দাম। সাধারণত বিদেশি ব্রেসলেটগুলোর দাম শুরু হয় ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা থেকে। পিতলের ব্রেসলেট ১৫০ থেকে ৬০০ টাকা, পাথরের ব্রেসলেট ৮০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা, হাড়ের ব্রেসলেট ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা, কম্বো ব্রেসলেটগুলো ৫০০ থেকে ৯০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। এ ছাড়া নিউমার্কেট, চাঁদনী চক, গাউছিয়া, আজিজ মার্কেটে বিভিন্ন ডিজাইনের ব্রেসলেট কিনতে পাওয়া যায়। সেখানে ২০ টাকা থেকে শুরু করে ৫৫০ টাকার মধ্যে বেশ আধুনিক মডেলের ব্রেসলেট পাওয়া যাচ্ছে। বড় দোকানগুলোতে একটু চড়া দামের ব্রেসলেটের মধ্যে আছে গোল্ডপ্লেটেড ব্রেসলেট। যার দাম পড়বে ২০০ থেকে ৪ হাজার টাকার মধ্যে।

তাছাড়া অনলাইনের কল্যাণে আজকাল ঘরে বসেই ভালো মানের ব্রেসলেট কিনতে পাওয়া যায়। দারাজ ডটকম, প্রিয়শপ ডটকম, আজকের ডিল ডটকমসহ বিভিন্ন অনলাইনভিত্তিক দোকানের মাধ্যমে নিয়মিত তরুণদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে নিত্যনতুন আধুনিক মডেলের ব্রেসলেট। ব্রেসলেটের দাম পড়বে ৫০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত। তবে এর সঙ্গে ডেলিভারি চার্জও যুক্ত হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Money laundering: NBR traces Tk 40,000cr in assets abroad

The National Board of Revenue has identified overseas assets worth nearly Tk 40,000 crore, accumulated with money laundered abroad from Bangladesh, according to the Chief Adviser’s Office.

1h ago