যেভাবে যত্ন নিলে সুরক্ষিত থাকবে সিল্কের পোশাক

ছবি: এলিসিল্ক.কম

অন্যান্য পোশাকের তুলনায় রেশম বা সিল্কের ইতিহাস বেশ খানিকটা রহস্য এবং লোককাহিনীতে ভরা। এর কিংবদন্তি শুরু হয়েছে চীনের হুয়াংদি সম্রাটের কিশোরী স্ত্রীর মাধ্যমে।

বলা হয়ে থাকে, ২ হাজার ৬৪০ খ্রিষ্টপূর্বের দিকে রানি তার বাগানের তুঁত গাছের নিচে বসে চা পান করছিলেন। হঠাৎ তার চায়ের কাপে টুপ করে একটা রেশম পোকার গুটি এসে পড়লে তিনি সেখানে এক প্রকার সুতার মতো দেখতে পান। যেটা তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে সিল্ক কাপড় তৈরির উপযোগী করে তোলেন। তখন থেকে সারা বিশ্বে এই সিল্কের উৎপাদন ও ব্যবহার চালু হতে থাকে। বর্তমানে আরও অনেক ধরনের সিল্কের আবিষ্কার এবং সেগুলোর বহুমূখী ব্যবহার হচ্ছে।
 
তবে, কীভাবে এই বিশেষ কাপড়ের যত্ন নেবেন সে বিষয়ে আজকের আলোচনা।

ছবি: এলিসিল্ক.কম

সিল্কের পোশাকে দিতে হবে বিশেষ নজর

প্রথমত, বুঝতে হবে যে সিল্ক অনেক বেশি পাতলা ও হালকা হাতে তৈরি করা হয়। সিল্কের বানানো পোশাক তাই অভিজাত কোনো পার্টি বা জনসমাগমে পরতে পছন্দ করে মানুষ। তবে একটু অমনোযোগী হলেই নষ্ট হয়ে যাবে এই বিশেষ সৌন্দর্য। যদি কোনো ধারালো গয়না পরিধান করা হয় তাহলে সিল্কের পোশাকে আটকে গিয়ে আঁচড় লেগে যেতে পারে। এ ছাড়া যদি কোনো ধরনের রাফ গয়না পরা হয় সিল্কের সঙ্গে তাহলে পোশাকের লোম বা সুতা উঠে সেটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই সিল্কের পোশাকের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ গয়না ও ইনার নির্বাচন করতে হবে।
 
বিশ্বস্ত কারও কাছে দিন ড্রাই ক্লিন করতে

অনেক ব্র্যান্ডেই সিল্কের পোশাকে ড্রাই ক্লিন করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে, অনেকেই বিষয়টা তেমন কর্ণপাত করি না। প্রথমত সিল্কের তৈরি জ্যাকেট ও বড় বড় গাউন শেপের যে পোশাকগুলো থাকে সেগুলো ড্রাই ক্লিন পদ্ধতিতে পরিষ্কার করাই ভালো। তা নাহলে পোশাকের শেপ নষ্ট হয়ে যেতে পারে কিংবা ভাঁজ পড়ে যেতে পারে। শিফন কিংবা জর্জেটের ব্লেজারগুলোকে এভাবে যেকোনো ক্লিনারে দিলে আপনার পোশাকের রঙ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই কিছুটা অর্থ ব্যয় করে হলেও পোশাক অবশ্যই উন্নত ও বিশ্বস্ত ড্রাই ক্লিনারের কাছে দিন।
 
সব সিল্ক ড্রাই ক্লিনারে দেওয়া বাস্তবসম্মত নয়। কিছু সিল্কের পোশাক থাকে যা কেবলই ফেব্রিক্স। যেমন স্কার্ফ বা ওড়না। সেগুলো হাল্কা হাতে ঠান্ডা পানি ও মাইল্ড কোনো ক্লিনার বা শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ছায়াযুক্ত কোনো স্থানে শুকাতে দিতে হবে। রোদে সিল্ক শুকাতে দেওয়া যাবেনা কেননা এতে কাপড়ের ইলাস্টিসিটি কমে যাবে। 

ছবি: এলিসিল্ক.কম

স্টিম করবেন, নাকি আয়রনিং

সিল্কের পোশাকে ভাঁজ দূর করতে আয়রন বা স্টিম বিশেষ উপযোগী। তবে, সেক্ষেত্রে স্টিম করাটাই বেশি উপযোগী। কেন না স্টিমে পোশাকের রঙে কোনো তারতম্য হয় না। তাই সুযোগ থাকলে পার্সোনাল স্টিমার কিনে ফেলুন, যেটি খুব একটা ব্যয়বহুল না। তবে, যদি আয়রন করতেই হয় তাহলে আয়রনগুলোতে সিল্কের অপশনটি সেটিং করে নিতে হবে। কম হিটেও সিল্ক বেশ সুন্দরভাবেই সমান হয়ে যায়। তাই আয়রনের লো সেটিং রেখে সিল্ক আয়রন করা উচিৎ। 

ঘাম ও ডিওডোরেন্টে থেকে যতটা সম্ভব দূরে রাখুন সিল্কের পোশাক

অতিরিক্ত ঘাম ও ডিওডোরেন্ট ব্যবহারের ফলে সিল্ক কাপড়ে এক ধরনের দাগ হয়। যা দেখতে হলদেটে। ফলে বিশেষজ্ঞরা বলেন, পোশাক এমনভাবে বানানো উচিৎ যা আমাদের আন্ডার আর্মসের খুব বেশি কাছাকছি না থাকে। অতিরিক্ত গরমের সময় সিল্কের পোশাক না পরা ভালো।
 
তবে, ভালো মানের ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করলে এই ঘামের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। কেবল খেয়াল রাখতে হবে ডিওডোরেন্টের আলাদা কোনো দাগ রয়েছে কি না। আর কোনোভাবে যদি দাগ লেগেও যায় তাহলে ড্রাই ক্লিনিংয়ের মাধ্যমে তা সহজেই ক্লিন করা সম্ভব।

 

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh enters 5G era with limited rollout

Bangladesh has finally entered the 5G era, as the country’s top two mobile operators yesterday announced the limited launch of the technology, aiming to provide ultra-fast internet, low latency, improved connectivity, and support for smart services and digital innovation..Unlike previous g

16m ago