রূপচর্চা হোক নিয়মিত
ঋতু পরিবর্তনের সময় আমাদের ত্বক-চুলের সঠিকভাবে যত্ন না নেওয়া হলে তা সৌন্দর্য হারায়, নির্জীব হয়ে পড়ে।
সেদিন অফিসের পার্টির জন্য সাজতে গিয়ে নিমা দেখে তার মুখের চামড়া উঠছে। কেমন লাগে? মেকআপ ঠিকমতো সেট হচ্ছে না। স্ক্র্যাবার দিয়ে ঘষে মুখ ধুয়ে নিল, তবে লাল হয়ে থাকল। কয়েকদিন নিয়মিত ক্রিম লাগানো হয়নি, তাই ত্বকের এই অবস্থা। সাজটা মনঃপূত হলো না। পার্টিতে গিয়ে মন খুলে আনন্দ করা হয়ে ওঠেনি।
কোথাও যাওয়ার সময় অনেকেরই এমন হয়ে থাকে। তখন মনে পরে যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। তাহলে শুরু করে দিন সঠিক সময়ে সঠিকভাবে রূপচর্চা:
রূপচর্চার প্রথম ধাপে নিয়মিত ত্বক আর চুল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। তা না হলে বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হয়।
হালকা গরম পানিতে গোসল করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। কারণ বেশি ঠাণ্ডা বা বেশি গরম পানিতে গোসল করা যায় না। হালকা গরম পানিতে চাইলে আপনি সারা বছরই গোসল করতে পারবেন। তবে মাথায় ঠাণ্ডা পানি ব্যবহার করুন।
ত্বক আর্দ্রতা যেন না হারায়, সেজন্য নিয়মিত ত্বক ময়েশ্চারাইজ করুন। গরমে ত্বকের ময়েশ্চারাইজের প্রয়োজন নেই, এটা ভুল ধারণা।
সারা শরীরে গোসলের পর বডি অয়েল বা বডি লোশন ব্যবহার করতে পারেন। ত্বক মসৃণ ও নরম থাকবে।
দুধের সর ব্যবহার করলে ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ থাকে। এর সঙ্গে অল্প ময়দা মিশিয়ে নিতে পারেন। সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে এটা দারুণ কাজে দেয়।
ত্বকের মরা কোষ দূর করতে আর ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে মসুর ডালের স্ক্র্যাব বা ফেস প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। মসুর ডাল বাটা, সঙ্গে দুধ মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এভাবেও মুখে লাগাতে পারেন। সঙ্গে মিশিয়ে নিন অল্প হলুদ গুঁড়ো এবং একটি ডিমের সাদা অংশ।
ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে দুধ ও মধু মিশিয়ে নিন বেসনের সঙ্গে। আর তৈলাক্ত ত্বকে বেসনের সঙ্গে লেবুর রস ও গোলাপজল মিশিয়ে ব্যবহার করুন।
ত্বক মসৃণ ও নরম রাখতে স্ক্র্যাবিং জরুরি। মুখে মাসে দুবার আর শরীরের বিভিন্ন অংশে তিন বার স্ক্র্যাব করতে হবে। অল্প ভেজানো চাল গুঁড়ো করে সঙ্গে গোলাপ পাপড়ি, কয়েকটি আমন্ড এবং পরিমাণ মতো দুধ একসঙ্গে বেটে নিন। এবার সারা শরীরে এ স্ক্র্যাব ব্যবহার করুন।
ময়দা, বেসন সমান পরিমাণ, সঙ্গে কোয়ার্টার চা-চামচ হলুদ গুঁড়ো, ১ চা-চামচ লেবুর রস, ১ চা-চামচ টক দই এবং ৩ চা-চামচ নারকেল একসঙ্গে মিশিয়ে মুখ, গলা ও ঘাড়ে স্ক্র্যাব করুন।
ঋতু পরিবর্তনে অবহেলায় অ্যাকনের সমস্যা বাড়তে পারে। সেক্ষেত্রে অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে লেবুর রস, এক ফোঁটা ভিটামিন ‘ই’ তেল, এক ফোঁটা টিট্টি তেল মিশিয়ে অ্যাকনের ওপর লাগান।
তাজা তুলসী পাতার ওপর কয়েক ফোঁটা পানি দিয়ে নাকের দুপাশে ৫ মিনিট রেখে দিন। এরপর হালকা গরম পানিতে ধুয়ে ফেলুন, ব্ল্যাক হেডস থেকে মুক্তি পাবেন।
ত্বকে ফ্রেশনেস আনতে আধা কাপ ওটমিল, কোয়ার্টার কাপ দুধ, কোয়ার্টার কাপ শসা কুচি এবং একমুঠো ধনেপাতা একসঙ্গে পেস্ট করে মুখে লাগাতে পারেন।
চুলের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে আর এ সময় স্ক্যাল্পের নানা সমস্যা দূর করতে চুল পরিষ্কার রাখুন নিয়মিত।
আমলকী ও শুকনো তুলসী পাতা গুঁড়ো সমপরিমাণে মিশিয়ে অল্প পানিতে ভিজিয়ে রেখে দিন। সকালে তাতে সামান্য নারকেল তেল মিশিয়ে পুরো চুলে লাগিয়ে রাখুন। এক ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করুন। চুল পড়া ও সাদা হওয়া রোধ করে।
স্ক্যাল্পে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখতেও অলিভ অয়েলের সঙ্গে থাইম মিশিয়ে স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করুন।
এক টেবিল চামচ রোজমেরি এবং এক টেবিল চামচ থাইম ২ কাপ পানিতে মিশিয়ে ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করে নিন। শ্যাম্পু করার পর এই পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন, চুল চকচকে করবে।
চুলে নিয়মিত শ্যাম্পু করুন চুল পরিষ্কার করার জন্য, তবে আগের দিন তেল ম্যাসাজ করে নেবেন।
নিয়মিত রূপচর্চায় আপনার ত্বক ও চুল সারা বছরই উজ্জ্বল আর ঈর্ষণীয় সৌন্দর্যের অধিকারী হবে।
Comments