যৌন নিপীড়ন ও ধর্ষণ প্রতিরোধে ‘বাঁচাও’ অ্যাপ
দেশের নাগরিক হিসেবে ধর্ষণ প্রতিরোধে সহায়তা করা সবার দায়িত্ব। সবাই ঐক্যবদ্ধ হলেই অগণিত নারীর জীবন ধ্বংস করে দেওয়া এ ঘৃণ্য কাজটি বন্ধ করা সম্ভব হবে। এ বিষয়ে যথেষ্ট কথা হয়েছে। এখন কাজ শুরু করার সময়। আর এ লক্ষ্য পূরণের ক্ষেত্রে একটি চমৎকার উদ্যোগ 'বাঁচাও' অ্যাপ।
এতে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে সবার নিবন্ধন করে রাখা উচিত, যাতে কাউকে ভয়ানক কোনো কিছু থেকে বাঁচানো সম্ভব হয়।
'বাঁচাও' অ্যাপটি ধর্ষণ প্রতিরোধে সহায়তা করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। ধর্ষণ এমন একটি অপরাধ, যা দেশে ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বাঁচাওডটলাইফ ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জালাল মির্জা বলেন, 'একটি ব্যক্তিগত ঘটনা আমাকে বাঁচাও অ্যাপ তৈরিতে অনুপ্রাণিত করে। নৃশংস হামলা এবং ধর্ষণের ঘটনার মধ্য দিয়ে আমার বোনের বিয়ে শেষ হয়ে গিয়েছিল। আমার মা কখনোই এ বর্বরতা মেনে নিতে পারেননি। এমনকি তার মৃত্যুর দিন পর্যন্ত ঘটনাটি তাকে তাড়িয়ে বেড়িয়েছে। মৃত্যুশয্যায় তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, একজন সফল কম্পিউটার প্রকৌশলী হিসেবে আমার বোনের মতো অসহায় নারীদের বাঁচানোর জন্য আমি কিছু করতে পারি কি না। ওই রাতেই তিনি মারা যান। ওই একটি প্রশ্নই আমাকে বাঁচাও প্রকল্প শুরু করতে প্ররোচিত করেছিল।'
তিনি জানান, বাঁচাও জিপিএস প্রযুক্তি ব্যবহার করে এবং নিবন্ধিত স্বেচ্ছাসেবকদের উপর অনেক বেশি নির্ভর করে। অ্যাপটি ডাউনলোড করার পর যে কেউ স্বেচ্ছাসেবক হতে পারবেন। বিপদে পড়া কেউ 'রেপ এলার্ট' লাল বোতাম টিপলে লাইভ জিপিএস ম্যাপে আশেপাশের সব স্বেচ্ছাসেবকদের দেখা যাবে।
জালাল বলেন, 'স্বেচ্ছাসেবকরা তখন লাইভ জিপিএস ম্যাপে, দূরত্ব ও দিকনির্দেশনাসহ ভুক্তভোগীর অবস্থান দেখতে পারবেন। তার সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবকরা মেসেজিং ও অডিও কলের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারবেন। এলার্টের সময় থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে ভুক্তভোগী নিরাপদ না হলে, কাছাকাছি অবস্থানের পুলিশকে তার সঠিক অবস্থান ও ফোন নম্বরসহ ঘটনার তথ্য দিয়ে সতর্ক করা হবে। নিরাপদ অবস্থায় গেলে, ভুক্তভোগী 'সেফ নাও' সবুজ বোতাম টিপতে পারেন।'
বাঁচাও চলতি বছরের ২ অক্টোবর যাত্রা শুরু করে। এটি একটি বিনামূল্যের অ্যাপ, যা গুগল প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করা যায়। এটি বাঁচাওডটলাইফের ওয়েবসাইট (Bachao.com.bd) এবং ফেসবুক পেজ (facebook.com/BachaoFoundation) থেকেও ডাউনলোড করা যাবে।
বাঁচাওডটলাইফে একটি অলাভজনক সামাজিক সংস্থা। ফাউন্ডেশনটি সরকারিভাবে নিবন্ধিত। এর লক্ষ্য বাংলাদেশে যৌন নিপীড়নের ঘটনা কমানো।
জালাল বলেন, 'আমরা চলতি বছরের নভেম্বরেই অ্যাপটির একটি নতুন সংস্করণ আনার পরিকল্পনা করছি। স্মার্টফোন নেই বা কম্পিউটিং সাক্ষরতা নেই, গ্রামাঞ্চলের এমন ব্যবহারকারীদের জন্য একটি সাধারণ এসএমএস ইন্টারফেস থাকবে এতে। আমরা একটি শর্ট কোডের জন্য বিটিআরসির সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, যাতে অ্যাপ ও সিস্টেম ব্যবহার করার জন্য মানুষ সহজে এসএমএস পাঠাতে পারে।'
অ্যাপটি কীভাবে কাজ করে দেখতে https://youtube.com/bachaofoundation-এ যেতে পারেন।
Comments