‘আমাদের ঈদের আনন্দ মাটি হয়ে গেছে’

নোয়াখালীতে আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগ স্বাস্থ্য বিভাগের ৮২ কর্মচারীর বেতন নেই ১০ মাস
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

গত ১০ মাস ধরে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না নোয়াখালী সিভিল সার্জন কার্যালয়ের অধীনে বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত ৮২ কর্মচারী।

এতে পরিবার পরিজন নিয়ে আর্থিক কষ্টে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। দীর্ঘদিন বেতন ভাতা না পাওয়ায় এই কর্মচারী ও তাদের পরিবারের ঈদ আনন্দ মাটি হয়ে গেছে।

এ ঘটনায় আউটসোর্সিং ঠিকাদারের বিরুদ্ধে কারসাজি ও গড়িমসির অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী কর্মচারীরা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে নোয়াখালী জেলার ৯টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের জন্য ২ বছর আগে দরপত্র আহ্বান করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

ওই দরপত্র অনুযায়ী আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে জনবল নিয়োগের জন্য কাজটি পায় নোয়াখালীর ঠিকাদার মেসার্স নাদিয়া ট্রেডার্সের ফিরোজ। তিনি ৮২ জনকে নিয়োগ দেন।

নিয়মানুযায়ী প্রতিমাসে বেতন-ভাতা পাওয়ার কথা থাকলেও গত ১০ মাস চাকরি করে তারা কোনো বেতন-ভাতা পাননি।

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রতি মাসে ১৪ হাজার ৪৫০ টাকা মাসিক বেতনে নিয়োগপ্রাপ্ত ৮২ জন কর্মচারী ২০২১ সালের জুনে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে যোগ দেন। পরে তাদেরকে জেলার বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পদায়ন করা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মচারী বেতন ও ভাতা না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দীর্ঘ ১০ মাস চাকরি করে এক টাকা বেতন-ভাতাও তারা হাতে পাননি।

পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মচারী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, '২-৩ দিন পর ঈদ। সরকারি রাজস্ব খাতের কর্মচারীরা চলতি মাসে বেতন ও উৎসব ভাতা পেয়ে পরিবার পরিজনের জন্য ঈদের কেনাকাটা করলেও আমরা আউটসোর্সিংয়ের কর্মচারীরা দীর্ঘ ১০ মাস চাকরি করেও উৎসব ভাতা তো দূরের কথা মূল বেতনও পাইনি। টানা ১০ মাস বেতন না পেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে আর্থিক কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। আমাদের ঈদের আনন্দ মাটি হয়ে গেছে।'

আরেক কর্মচারী বলেন, 'টাকার অভাবে পবিত্র রমজান মাসেও পরিবারে কোনো বাজার করতে পারিনি। নিয়ম অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতি মাসে বেতন-ভাতা পরিশোধ করার কথা থাকলেও তিনি তা করছেন না।'

গত বৃহস্পতিবার এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারী ফিরোজ বলেন, 'ঈদের আগে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারীদের ৭ মাসের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হবে।'

তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজ রোববার পর্যন্ত ৮২ আউটসোর্সিং কর্মচারীকে বেতন-ভাতা দেওয়া হয়নি।

জানতে চাইলে নোয়াখালী সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার বলেন, '১০ মাসের বেতন-ভাতা বকেয়া রয়েছে। আমরা এটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠিয়ে দিয়েছি। কিন্তু অফিস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেতন-ভাতা পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। ঈদের পর অফিস খুললে এটি পরিশোধ করা হবে।'

Comments

The Daily Star  | English
Banks to appreciate taka against US dollar

Taka weakens against US dollar again

The inter-bank exchange rate hit Tk 122.78 per US dollar today

19m ago