কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে মেয়ে শিক্ষার্থীর হার কম

স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

বাংলাদেশে নারীশিক্ষা এখন পর্যন্ত একটি সফলতার গল্প হয়েই আছে। এখনো প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে মোট শিক্ষার্থীর মধ্যে অর্ধেকের বেশি ছাত্রী।

কিন্তু কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এসে পরিস্থিতি আর আগের মতো থাকছে না। সর্বশেষ সরকারি তথ্য অনুসারে, কলেজ পর্যায়ে এসে নারী শিক্ষার্থীর হার কম। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে যা আরও কমে এসেছে।

বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ৫৫ দশমিক ৪১ শতাংশ মেয়ে শিক্ষার্থী ছিল। আর স্নাতকোত্তর পর্যায়ে এই হার ছিল ৪০ দশমিক ৭৮ শতাংশ।

একই বছরে মাধ্যমিক স্তরের নবম ও দশম শ্রেণিতে অধ্যায়নরত মেয়েদের হার ছিল মোট শিক্ষার্থীর ৫৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ। বিপরীতে স্নাতক স্তরে এই হার ছিল ৪৩ দশমিক ৮০ শতাংশ।

২০১৯ ও ২০১৮ সালের চিত্রও ছিল মোটামুটি একই রকম।

তবে ব্যানবেইসের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০১৮ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ৩ বছরে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে নারী শিক্ষার্থীর হার ছিল খানিকটা ঊর্ধ্বমুখী।

কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এসে মেয়ে শিক্ষার্থীর হার কমে আসার এমন প্রবণতার বিষয়ে শিক্ষাবিদরা বলছেন, দারিদ্র ও বাল্যবিবাহ উচ্চ শিক্ষায় মেয়েদের সংখ্যা কমে আসার প্রধান কারণ। এ ছাড়া কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে যৌন হয়রানিও এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

তা বাদে, নিরাপদ পরিবহনের অভাবের পাশাপাশি মেয়েদের আবাসিক হোস্টেলের অপ্রতুলতাও নারী শিক্ষার পথে একটি প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করে।

এ ব্যাপারে শিক্ষাবিদ রাশেদা কে চৌধূরীর ভাষ্য, প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো সাধারণত শিক্ষার্থীদের বাড়ির আশপাশেই থাকে। উচ্চশিক্ষার পথে বাড়ির সঙ্গে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দূরত্বও বাড়ে। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য মেয়েদের নিরাপদ পরিবহনের দরকার হয়।

তিনি বলেন, 'আমরা জানি বাসে যাতায়াতের সময় একটি মেয়েকে কী ধরনের শোচনীয় অবস্থার ভেতর দিয়ে যেতে হয়।'

গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদার বক্তব্য, আবাসিক সুবিধা এই সমস্যার অনেকাংশে সমাধান করতে পারে। কয়েকটি বাদে বেশিরভাগ মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো আবাসিক সুবিধা নেই। স্নাতক পর্যায়ের কিছু সরকারি কলেজে ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ডরমেটরির ব্যবস্থা থাকলেও তা অপর্যাপ্ত।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানুর বক্তব্য, বাল্যবিয়ে ও নারীশিক্ষায় বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অভিভাবকদের উদাসীনতা উচ্চ শিক্ষায় মেয়েদের অংশগ্রহণ কমে আসার আরও ২টি কারণ।

সংক্ষেপিত: ইংরেজিতে পুরো প্রতিবেদনটি পড়তে ক্লিক করুন- https://www.thedailystar.net/news/bangladesh/news/high-hope-grim-reality-3061616

Comments