ছাত্রলীগ সভাপতির সঙ্গে ছাত্রদলের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ

ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সঙ্গে ছাত্রদলের সংশ্লিষ্টতা আছে বলে অভিযোগ করেছেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ইয়াজ আল রিয়াদ।

গত শনিবার রাতে ফেসবুক লাইভে এসে ছাত্রলীগ সভাপতি জয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে রিয়াদ বলেন, '২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আল নাহিয়ান জয় ছাত্রদলের হয়ে ধানের শীষে ভোট চেয়েছিলেন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বিএনপির 'ডামি প্রার্থী' ছিলেন তার বাবা।'

তার ওই ফেসবুক লাইভটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

ফেসবুক লাইভে এসে রিয়াদ অভিযোগ করেন, '২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছিলেন জয়। অভিযোগ আছে, তখন তার ফুফাতো ভাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল শাখা ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। তার কক্ষে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কোচিং করেছেন, ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন জয়। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে তিনি ছাত্রদলের হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ধানের শীষে ভোট চেয়েছিলেন।'

তিনি আরও বলেন, 'দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আপন চাচাতো ভাইকে সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নিজের ক্ষমতাবলে নৌকার বিরুদ্ধে জিতিয়েছেন আল নাহিয়ান খান জয়। আল নাহিয়ানের বাবা ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বাবুগঞ্জ-উজিরপুর আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু তাকে সে সময় মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। সেই নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর তার বাবা ব্যবসায়ী ও বিএনপি নেতা আব্দুল আউয়াল মিন্টুর বিমা কোম্পানিতে চাকরি করেছিলেন। তিনি তৎকালীন বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার পিএ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির যে নির্বাচন আওয়ামী লীগ বর্জন করেছিল, সেই নির্বাচনে বিএনপির 'ডামি প্রার্থী' হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন জয়ের বাবা।'

ছাত্রলীগ সভাপতিকে এসব অভিযোগের জবাব দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'অভিযোগ উঠতেই পারে। অভিযোগের জবাব তাকেই দিতে হবে। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে তাকে নিয়ে যেন কোনো ধোঁয়াশা তৈরি না হয়, নেতা-কর্মীরা যেন বিভ্রান্ত ও আদর্শচ্যুত না হন, সেই জায়গা থেকে তার উচিত অভিযোগগুলো খণ্ডন করা।'

লাইভের এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তোলেন রিয়াদ। তিনি বলেন, 'আল নাহিয়ান ও লেখক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে। তারা অনিয়মতান্ত্রিক ও সংগঠনবিরোধী অনেক কর্মকাণ্ড করে সংগঠনকে নানা প্রশ্নের সম্মুখীন করছেন। এসব বিষয় নিয়ে যারা কথা বলেন, যারা দুঃসময়ের আওয়ামী পরিবারের সন্তান, তারা তাদের চিহ্নিত করে সংগঠন থেকে দূরে সরিয়ে রাখছেন।'

অভিযোগের বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ইয়াজ আল রিয়াদ ও আল নাহিয়ান খান জয়কেও একাধিকবার ফোনে কল দিলেও তারা দুজনের কেউই ফোন ধরেননি। তাদের মোবাইল ফোনে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বলছেন, আল নাহিয়ান খান জয় ও লেখক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বাধীন ছাত্রলীগের বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও জয় ও লেখক শিগগির পদ ছাড়তে চান না বলে অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে ছাত্রলীগের ভেতরে অসন্তোষ রয়েছে। জয় ও লেখকের বিরুদ্ধে রিয়াদের এই অভিযোগকে সেই অসন্তোষের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দেখছেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।

এদিকে, রিয়াদের বিরুদ্ধে আওয়ামীলীগের বিরোধিতা করার পাল্টা অভিযোগ করছেন আল নাহিয়ান খান জয়ের অনুসারীরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তারা বলছেন, রিয়াদের বাবা নৌকার বিরুদ্ধে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেছেন।

Comments

The Daily Star  | English

Sada Pathor Looting: Admin officials, law enforcers involved

Some government officials  including members of law enforcement agencies were involved in the rampant looting of stones from Bholaganj’s Sada Pathor area, found a probe committee of the Sylhet district administration.

7h ago