১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ ঢাবি ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে, ৭ দোকান বন্ধ

বন্ধ থাকা দোকানগুলো (বাম থেকে), ঢাবির একুশে হল ছাত্রলীগের সভাপতি এনায়েত এইচ. মনন (ডানে উপরে) এবং সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হাসান সোহাগ (ডানে নিচে)। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর আনন্দ বাজারের দোকান মালিকদের কাছ থেকে এককালীন ১০ লাখ ও প্রতি মাসে ১ লাখ টাকা করে চাঁদা দাবি এবং সেই টাকা না পেয়ে ৭টি দোকান বন্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অমর একুশে হল শাখা ছাত্রলীগের ২ শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে। গত ৯ দিন ধরে দোকানগুলো বন্ধ রয়েছে।

একুশে হল ছাত্রলীগের সভাপতি এনায়েত এইচ. মনন এবং সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হাসান সোহাগের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে।

গত ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হলে ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, কেনাবেচায় দিন-রাত ব্যস্ত থাকা দোকানগুলোর মালিকরা এদিক-সেদিক ঘোরাফেরা করছেন। তাদের দোকানের কর্মচারীরাও এখন বেকার সময় কাটাচ্ছেন। কেউ ভয়ে দোকান খুলছেন না।

দোকান মালিকরা জানান, গত শনিবার রাত ৮টার দিকে দোকান খোলা অবস্থায় অমর একুশে হল শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি এনায়েত এইচ. মনন এবং সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হাসান সোহাগ একদল নেতাকর্মী নিয়ে আনন্দ বাজারের ওই দোকানগুলোতে গিয়ে দোকান মালিকদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন এবং দোকানগুলো বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। শবে বরাতের রাতে ওয়ান স্টার হোটেলে ডেকে নিয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন ছাত্রলীগের ওই দুই নেতা।

ভয়ে এখন পর্যন্ত দোকান বন্ধ রেখেছেন বলে জানান মালিকরা।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অমর একুশে হল ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী এসে দোকানগুলো বন্ধ রাখতে তাদের সামনে মালিকদের হুমকি দিয়ে গেছেন।

তবে, এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই ২ নেতা।

জানতে চাইলে এনায়েত এইচ. মনন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগতও না। ষড়যন্ত্র করে এ অভিযোগ আনা হচ্ছে।'

কেন ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে? প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, 'সেটি আপনারা খতিয়ে দেখেন।'

ইমদাদুল হাসান সোহাগ বলেন, 'এ ধরনের অভিযোগ সঠিক নয়। গত রোববার আমি ঢাকা থেকে মাগুরায় গিয়েছি। এ বিষয়টি আমার জানা নেই।'

দোকান মালিকদের অভিযোগ মতে, গত শনিবার রাতে দোকান বন্ধ করার নির্দেশ দেন ছাত্রলীগের ওই নেতারা। সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হক সোহাগ যেদিন মাগুরায় গিয়েছেন, দোকান বন্ধের ঘটনা তার আগের দিনের।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ছাত্রলীগের পরিচয় ব্যবহার করে কেউ যদি কোনো ধরনের অনৈতিক এবং সংগঠনের গঠনতন্ত্র বিরোধী কোনো কাজ করে, তাহলে আমরা অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবো।'

অমর একুশে হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ইসতিয়াক এম সৈয়দ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ বিষয়ে অফিসিয়ালি কোনো অভিযোগ পাইনি।'

বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরকে অবহিত করার অনুরোধ জানান তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দোকান মালিক কর্তৃপক্ষকে তথ্য প্রমাণসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা নেওয়ার পরামর্শ থাকলো। আমাদের কাছে এখনও কোনো লিখিত অভিযোগ করা হয়নি।'

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh Police: Equipped to inflict heavy casualties

Police arms records show the brutal truth behind the July killings; the force bought 7 times more lethal weapons than non-lethal ones in 2021-23

11h ago