মাধ্যমিকে সকল ভর্তি কেন্দ্রীয় লটারির মাধ্যমে করার পরিকল্পনা
সব সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আসন্ন শিক্ষাবর্ষ থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি প্রক্রিয়া কেন্দ্রীয় লটারির মাধ্যমে করার পরিকল্পনা করছে সরকার।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) প্রস্তাব দিয়েছে, ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীদের অনলাইনে আবেদনপত্র ও ফিস জমা দিতে হবে।
অধিদপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তারা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভোগান্তি ও 'দুর্নীতি' কমানোর উদ্দেশ্যে মাউশি এই প্রস্তাব দিয়েছে।
মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা কিছু প্রস্তাব দিয়েছি। মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তির নীতিমালা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। নীতিমালা শিগগির চূড়ান্ত হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'নীতিমালা চূড়ান্ত হওয়ার পর আমরা আবেদনপত্র পূরণ ও জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করবো। আমরা ডিসেম্বরে লটারি আয়োজনের পরিকল্পনা করছি।'
দেশে মোট ২০ হাজার ৮৪৯টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে, যার মধ্যে ৬৭৯টি সরকারি।
২০২০ সাল পর্যন্ত বিদ্যালয়গুলোতে খালি থাকা আসনের ভিত্তিতে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হতো। বেশিরভাগ শিক্ষার্থী ১ম শ্রেণীতে এবং প্রাথমিক শিক্ষা শেষে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হতো।
এখন ১ম শ্রেণীতে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য সারাদেশে লটারি পদ্ধতি ব্যবহার হয়। শিক্ষার্থীরা জুনিয়র সেকেন্ডারি সার্টিফিকেট (জেএসসি) অথবা জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ৯ম শ্রেণীতে ভর্তির সুযোগ পায়। অন্যান্য শ্রেণীতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষা দিতে হয়।
মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সঙ্গে সংযুক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ১ম থেকে ৫ম শ্রেণীতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের জন্য একটি কেন্দ্রীয় লটারি হবে। সাধারণত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি করে।
এর আড়ে শুধুমাত্র সরকারি বিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হতো। কিন্তু বেসরকারি বিদ্যালয়গুলো তাদের নিজ নিজ লটারি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করে। করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
মাউশির এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, 'এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা এখন লটারির মাধ্যমে ভর্তির পরিকল্পনা করছি।'
তিনি যোগ করেন, তারা সব সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য লটারি প্রক্রিয়া চালুর প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি বলেন, 'কেন্দ্রীয়ভাবে লটারি অনুষ্ঠিত হবে।'
শিক্ষার্থীদের ভর্তি করতে অভিভাবকদের ভোগান্তি বন্ধ করতে এই পরিকল্পনা করা হয়েছে।
এই কর্মকর্তা বলেন, 'বেসরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে কখনো কখনো অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ আমাদের সামনে আসে।'
একই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যালয়ের জন্য ২টি আলাদা উইন্ডো থাকবে। অনলাইনে লটারি হবে।
শিক্ষার্থীরা এসএমএসের মাধ্যমে তাদের ভর্তির ফলাফল জানতে পারবে। লটারি যারা জিতবেন তাদের তালিকাও সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ে পাঠানো হবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
প্রতি বছর সারাদেশের বিদ্যালয়গুলোতে কয়েক লাখ শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। এ বছর সরকারি স্কুলের ৮০ হাজার আসনের বিপরীতে ৫ লাখ ৭৪ হাজার ৯২৯ জন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ভর্তি ফরম সংগ্রহ করেছে।
অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ ইশতিয়াক খান
Comments